কঙ্কালীতলা শক্তিপীঠ | একান্ন সতীপীঠের এক সতীপীঠ Kankalitala

কঙ্কালীতলা শক্তিপীঠ | একান্ন সতীপীঠের এক সতীপীঠ  Kankalitala

সত্য যুগের কোনও এক সময়ে মহাদেবের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য দক্ষ রাজা বৃহস্পতি নামে এক যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন। কন্যা সতী দেবী তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে ‘যোগী‘ মহাদেবকে বিবাহ করায় দক্ষ ক্ষুব্ধ ছিলেন। দক্ষ মহাদেব ও সতী দেবী ছাড়া প্রায় সকল দেব–দেবীকে নিমন্ত্রণ করেছিলেন।মহাদেবের অনিচ্ছা সত্ত্বেও সতী দেবী মহাদেবের অনুসারীদের সাথে নিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন।এরপর সেখানে উপস্থিত থাকার জন‍্য দক্ষরাজ সতীকে ও তার সঙ্গে মহাদেবকে যথেষ্ট অপমান করে। এই অপমান সহ‍্য করতে না পেরে সতী দেহত‍্যাগ করেন।

শোকাহত মহাদেব রাগান্বিত হয়ে দক্ষর যজ্ঞ ভণ্ডুল করেন এবং সতী দেবীর মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রলয় নৃত্য শুরু করেন। অন্যান্য দেবতা অনুরোধ করে এই নৃত্য থামান এবং বিষ্ণুদেব তাঁর সুদর্শন চক্র দ্বারা সতী দেবীর মৃতদেহ ছেদন করেন।এতে সতী মাতার দেহখণ্ডসমূহ ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন জায়গায় পড়ে এবং পবিত্র পীঠস্থান (শক্তিপীঠ) হিসেবে পরিচিতি পায়। সকল শক্তিপীঠসমূহে শক্তিদেবী ভৈরবের সাথে অবস্থান করেন।শক্তিপীঠের সংখ্যা ৫১ টি। পীঠস্থান বলতে যা বোঝায় তাহল বীরভূম

 বীরভূম এর চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নানা পীঠস্থান তার মধ্যে তারাপীঠ ,বক্রেশ্বরনলহাটি ,ফুল্লোরা আবার তেমনি রয়েছে সাঁইথিয়ার নন্দিনী মন্দির আর বোলপুরে রয়েছে কংকালীতলা। শান্তিনিকেতনে বেড়াতে গেলে Kankalitala কঙ্কালীতলা মন্দিরে যাননি বা পুজো দেননি, এমন মানুষ খুব কম মিলবে।পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় তো বটেই, এই শক্তিপীঠ স্থানীয়দের কাছেও অত্যন্ত প্রসিদ্ধ। বীরভূম জেলার বোলপুর থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে কোপাই নদীর তীরে শক্তিপীঠ Kankalitala কঙ্কালীতলা। তন্ত্রচূড়ামতির মতে, এটি ২৮ নং সতীপীঠ। প্রাচীনকালে এই জায়গাটি কাঞ্চি নামে প্রসিদ্ধ ছিল।

তন্ত্রচূড়ামনিতেও এই স্থানের উল্লেখ আছে। পীঠ নির্ণয়তন্ত্র অনুসারে এখানে সতীর অস্থি পরেছিল, সেই কারণে এই পীঠের নাম হয় কঙ্কালীতলা। আবার ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গল কাব্যগ্রন্থে লেখা রয়েছে, এখানে সতীর কটিদেশ বা কোমরের অংশটি পরেছিল।তবে এই শক্তিপীঠ নিয়ে শাস্ত্র ও মানুষদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে।সতীর অস্থি (কঙ্কাল) পড়েছিল, সেই কারণে এই পীঠের নাম হয় কঙ্কালীতলা।  এখানে  দেবী সতী গর্ভাদেবী  ও ভৈরব রুরু নামে পরিচিত। এখানে দেবী মূর্তির বদলে ফটোতেই পুজো হয়ে থাকে।

 আবার ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গল কাব্যগ্রন্থ অনুসারে এখানে সতীর কটিদেশ বা কোমরের অংশটি পড়েছিল। তবে এই শক্তিপীঠ নিয়ে শাস্ত্র ও মানুষদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। মন্দিরের পাশেই এক কুন্ড আছে যেখানে সতীর কঙ্কাল পড়েছিল সময়ের সাথে সাথে সেগুলো প্রস্তরীভূত হয়ে গেছে ।এই প্রস্তর খণ্ডগুলি কুড়ি বছর অন্তর কুণ্ড থেকে তোলা হয়, পরে পূজার পর সেগুলিকে পুনরায় কুন্ডের জলে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। কথিত আছে, কঙ্কালীতলার কুন্ডের সঙ্গে কাশীর মনিকর্ণিকা ঘাটের সরাসরি সংযোগ আছে। কঙ্কালীতলার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নানা রকম অলৌকিক ঘটনা। তাই পর্যটকদের কাছে এই স্থানের এত আকর্ষণ। তন্ত্র সাধনার স্থান বীরভূম , সেই ভাবে বহু তান্ত্রিকের কর্মকান্ড চলতে থাকে।