মা তারার অপর নাম কৌশিকী! কৌশিকী রূপেই শুম্ভ নিশুম্ভকে বধ করেছিলেন মা

মা তারার অপর নাম কৌশিকী! কৌশিকী রূপেই শুম্ভ নিশুম্ভকে বধ করেছিলেন মা

আজবাংলা           কৌশিকী অমাবস্যা | এই কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষে তারাপীঠে প্রতি বছর  বিশেষ নিশি পূজার আয়োজন করা হয় | মহাভোগ ও মহা রাজবেশে মায়ের এই পূজা অনুষ্ঠিত হয় | এই অমাবস্যাকে ‘তারা রাত্রি’ও বলা হয় | আপনারা কি জানেন কে মা কৌশিকী? চলুন জেনে নেওয়া যাক কে মা কৌশিকী | 

কৌশিকী হল মা তারার অপর নাম | পুরান অনুযায়ী মা এই রূপেই দুই অসুর শুম্ভ নিশুম্ভকে বধ করেছিলেন | শোনা যায়, কৌশিকী অমাবস্যাতেই তারাপীঠ মহাশ্মশানের শ্বেতশিমূল বৃক্ষের নিচে তারা মায়ের অরাধনায় সাধক বামা ক্ষ্যাপা সিদ্ধি লাভ করেছিলেন | এই বিশেষ অমাবস্যাতে লক্ষ লক্ষ ভক্ত ভিড় করেন তারাপীঠে মায়ের দর্শন পাওয়ার জন্য | অন্যদিকে মা কৌশিকীর জন্মেরও একটা ইতিহাস রয়েছে | মহাসরস্বতী দেবীর কাহিনীতে বলা রয়েছে, একবার শুম্ভ ও নিশুম্ভ সাধনা করে ব্রহ্মাকে তুষ্ট করেছিল |

এরপরেই তাদের চতুরানন বড় দেন যে তাদের কোনদিনও কোনো পুরুষ বধ করতে পারবেন না | শুধু মাত্র তাদের বধ করতে পারবেন এমন এক নারী যিনি কোনও মাতৃগর্ভ থেকে উৎপন্ন হননি | তার হাতেই মৃত্যু হবে এই দুই অসুরের | কিন্তু এমন নারী কোথায় পাবেন সমস্ত দেবতারা যিনি কিনা মাতৃগর্ভ থেকে উৎপন্ন হননি | অন্যদিকে এই দুই অসুরের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে যখন দেবতারা ক্লান্ত হয়ে কৈলাশে আশ্রয় নিলেন তখন মহাদেব সমস্ত দেবতাদের সামনেই পার্বতীকে বললেন “কালিকা, তুমি ওঁদের উদ্ধার করো |”

সমস্ত দেবতাদের সামনে পার্বতীকে কালিকা বলে ডাকাতে দেবী পার্বতী অত্যন্ত ক্ষুব্ধ, অপমানিত ও ক্রোধিত মনে মানস সরোবের ধারে কঠিন তপস্যা করলেন | তপস্যা করার পর দেবী পার্বতী  মানস সরোবরের জলে স্নান করে নিজের দেহের সব কালো কোশিকা পরিত্যাগ করলেন | জানা যায় তারপরেই পার্বতীর গাত্রবর্ণ হয় পূর্নিমার চাঁদের মতো | 

এরপরেই ওই কালো কোশিকাগুলি থেকে সৃষ্টি হয় এক অপূর্ব সুন্দর কৃষ্ণবর্ণ দেবীর | সেই দেবীই হলেন মা কৌশিকী | তার হাতেই বধ হয় ওই দুই অসুর শুম্ভ ও নিশুম্ভ | তারপর থেকেই এই অমাবশ্যকে কৌশিকী অমাবস্যা বলা হয় | অন্যদিকে এ বছর দীর্ঘদিনের রীতিতে ছেদ পড়েছে করোনা মহামারির কারণে | করোনা আতঙ্কের আবহে সংক্রমণ এড়াতে কৌশিকী অমাবস্যায় এ বছর দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ থাকবে তারাপীঠ মন্দির |