মোবাইলে বন্ধুর পাঠানো 'অশ্লীল' চ্যাট দেখে ফেলে মা, বাড়ি ছেড়ে পালাল ফার্স্ট বয়

মোবাইলে বন্ধুর পাঠানো 'অশ্লীল' চ্যাট দেখে ফেলে মা, বাড়ি ছেড়ে পালাল ফার্স্ট বয়

ছেলের মোবাইল ফোনে 'অশ্লীল' চ্যাট দেখে ছেলের বন্ধুকে শাসাতে তাঁর বাড়ি গিয়েছিলেন মা। ফিরে দেখলেন বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে ছেলে। ঘটনা হুগলির চুঁচুড়ায়। পলাতক কিশোর স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র। স্কুলের পরীক্ষায় ভালো ফল করে সে। ছেলেকে ফিরে পেতে চুঁচুড়া থানার দ্বারস্থ হয়েছেন মা। চুঁচুড়া শহরের আমড়াতলার বাসিন্দা ওই কিশোর। কিশোরের মা জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেলে ছেলে তখন বাড়ি ছিল না। ছেলের মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে তিনি দেখেন এক বন্ধুকে বেশ কিছু প্রাপ্তবয়স্ক মেসেজ পাঠিয়েছে সে।

যে ছেলে সারাদিন বই নিয়ে পড়ে থাকে সে এমন কাজ করতে পারে বলে প্রথমটায় বিশ্বাস করতে চাননি তিনি। তাই ছেলে সেজে সেই বন্ধুকে মেসেজ পাঠান। জবাব দেয় বন্ধু। এর পর ছেলের সেই বন্ধুকে ফোন করে বকাঝকা করেন তিনি। এর মধ্যে ছেলে বাড়ি ফিরলে তাঁকেও বকাবকি করেন। জানান, বিকেলে বাবা বাড়ি ফিরলে বন্ধুর মা-বাবাকে জানাতে তাদের বাড়ি যাবেন ২ জনে।

শুক্রবার বিকেলে ছেলেকে বাড়িতে রেখে কাপাসডাঙায় বন্ধুর বাড়ি যান দম্পতি। যাওয়ার আগে ছেলেকে জানিয়ে যান স্কুলের শিক্ষকদেরও ঘটনার কথা জানাবেন তিনি। রাত ৯টা নাগাদ বাড়ি ফিরে তাঁরা দেখেন দরজা বাইরে থেকে বন্ধ। ভিতরে ডাকাডাকি করেও কেউ সাড়া দেয়নি। রাত ১০টা নাগাদ দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকেও ছেলের খোঁজ পাননি। এর পর এলাকায় ছেলের খোঁজে বেরিয়ে তাঁরা জানতে পারেন রাত ৮টা নাগাদ স্কুলের কাঁধে চুঁচুড়া বাসস্ট্যান্ডের দিকে গিয়েছে কিশোর। বাড়ি ফিরে দেখেন ছেলের জমানো ১২০০ টাকা নির্দিষ্ট জায়গায় নেই।

এর পর ছেলের খোঁজে চুঁচুড়া থানার দ্বারস্থ হন দম্পতি। নিখোঁজ ডায়েরি পেয়ে সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে কিশোরের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। মনোবিদরা বলছেন, বয়ঃসন্ধিকালে যৌনতার প্রতি কৌতুহল বাড়ে কিশোর কিশোরীদের। সমাজে প্রকাশ্যে সে সব কৌতুহল নিবৃত্ত করার সুযোগ না থাকায় বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে তা নিয়ে আলোচনা করে তারা। এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক প্রবণতা।

কোনও কিশোর ক্লাসে প্রথম হয় বলে তার যৌনতা নিয়ে স্বাভাবিক কৌতুহল জন্মাবে না এমনটা ভাবা ঠিক নয়। কিশোরের ফোনে তার মা যদি আপত্তিকর কিছু দেখেও থাকেন তাহলে তাকে গোটা বিষয়টি খোলাখুলি বোঝানো উচিত ছিল। তা না করে পাঁচজনকে বলে বেড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। যাতে সম্মানহানির আশঙ্কায় ঘর ছেড়েছে কিশোর। অনেক ক্ষেত্রে পরিণতি এর থেকেও মারাত্মক হয়।