করোনার মধ্যেই বাড়ছে অ্যালার্জি সমস্যা , বাড়িতেই লুকিয়ে সেই বিপদ,এই বিষয়গুলি এড়িয়ে চলুন

আজবাংলা করোনা সংক্রমণের কারণে দেশের একটা বড় অংশ এখন ঘরবন্দি। গৃহবন্দি অবস্থায় থেকে করোনা সংক্রমণ এড়ানোর কথা ভাবছেন অনেকেই। কিন্তু বাড়িতেই যে লুকিয়ে আছে অ্যালার্জির রসদ। যা আপনার ফুসফুসের ক্ষতি করতে পারে, নিঃশ্বাসের কষ্ট তৈরি করতে পারে। আর সেই বিষয়েই সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা।
১৯৯৮ সালে ভারতে গড়ে অ্যালার্জির প্রভাব ৬ শতাংশ ছিল। সেটা বাড়তে বাড়তে ২০১৮ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ৩০ শতাংশে। অ্যালার্জিতে আক্রান্তদের মধ্যে মোটে ৩৫ শতাংশের সঠিক চিকিৎসা হয়। ৫০ শতাংশ মানুষ বুঝতেই পারেন না তাঁরা অ্যালার্জিতে আক্রান্ত। একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ৩৩ শতাংশ সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা পান না। তার কারণ, সচেতনতার অভাব। বেশিরভাগ ভারতীয় মনে করেন, অ্যালার্জির দীর্ঘমেয়াদি কোনও সমস্যা নেই। তাই যতক্ষণ না রোগ বড় আকারে দেখা দিচ্ছে, ততক্ষণ তাঁরা চিকিৎসা করেন না।
‘বর্ষাকাল আসার পরেই মরশুমের অ্যালার্জি আমাদের ঘিরে ধরে। ঘরের মধ্যের দূষণ বাড়ে, কারণ মানুষ গৃহবন্দী থেকে ক্রমাগত শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্রের মধ্যে থাকেন এবং কার্পেট জাতীয় জিনিসে জমা ধুলোর মুখে পরেন। হাঁচির মতো উপসর্গ একজন অ্যালার্জি আক্রান্তের শরীরে দীর্ঘদিনের জন্য দেখা দিতে পারে। এর থেকে জ্বর, ক্লান্তি, কাশি, নিঃশ্বাসের কষ্ট Allergic Rhinitis একটি অন্যতম প্রধান রোগ যা চোখ, নাকের প্রদাহ তৈরি করে, ঘুমের সমস্যা তৈরি করে। তাই এই করোনা পরিস্থিতিতে অ্যালার্জিকে হেলাফেলা না করে, কোনও উপসর্গ দেখা দিলেই সেটার উপর নজর রাখা ও দরকার হলে চিকিৎসকের পরমার্শ নেওয়া উচিত’, বলছেন কলকাতার চিকিৎসকরা ।
১) অ্যালার্জির জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে অনেকেই ফার্মেসিতে গিয়ে নানা রকম ওষুধ কিনে খান। কিন্তু ঠিক কি কারণে আপনার অ্যালার্জি হচ্ছে তা না জেনেই যদি ওষুধ খাওয়া হয় সেক্ষেত্রে উল্টে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি। শুরুতেই চিকিত্সকের পরামর্শ নিন। পরীক্ষা করিয়ে আগে নিশ্চিত হয়ে নিন আপনার অ্যালার্জি ঠিক কি ধরণের। এর পর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
২) ঘরে যথেষ্ট আলো-বাতাস ঢুকলে ঘর থাকবে জীবানুমুক্ত। এমন ধারণার বসবর্তি হয়ে অ্যালার্জির রোগীরাও জানালা হাট করে খুলে দেন। কিন্তু এর ফলে বিভিন্ন ফুলের পরাগরেণু বা ধুলোবালি ঢুকে পড়ে অ্যালার্জির সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
৩) অ্যালার্জির সমস্যা যাঁদের আছে বিশেষ কিছু ফল বা সবজি খেলে তাঁদের অ্যালার্জির সমস্যা অনেক বেড়ে যায়। মুখে এবং গলায় চুলকানি, অস্বস্তি দেখা দেয়। কখনও এই সব খাবার কাটাকাটি করলে, ধুতে গেলে বা রান্না করতে গেলেও অ্যালার্জির সমস্যা বাড়তে পারে। আপনার যদি জানা থাকে যে, কোন কোন খাবারে আপনার অ্যালার্জি বেড়ে যায়, তাহলে সেই সব খাবার থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়।
8) আপনার জুতো, কাপড়, চুলে লেগে অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী ধুলো-বালি প্রতিনিয়তই ঘরে ঢুকে যায়। আপনার ঘরের পোষ্যটির মাধ্যমেও দিনের মধ্যে একশ বার একই ঘটনা ঘটে। এসব কারণে যতটা সম্ভব পরিষ্কার থাকতে উপযুক্ত সতর্কতা নেওয়া উচিত্। শুধু তাই নয়, বাইরে থেকে এসে মাথার চুল ধুয়ে ফেলাটাও অনেক জরুরী। নয়তো চুলে লেগে থাকা ধুলাবালি বালিশেও লেগে যাবে এবং রাতভর সেই ধুলো লাগা বালিশে ঘুমালে অ্যালার্জির সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।
৫) অনেকেই অ্যালার্জির সমস্যায় চিকিত্সকের দেওয়া নাসাল স্প্রে ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু এই নাসাল স্প্রে ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেকেই নিয়ম মেনে চলেন না। নাসাল স্প্রের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে নাকের ভেতরের অংশে এবং সাইনাসে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।