Amrullah Saleh | আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ

আফগানিস্থানে নাটকীয় মোড়, তালিবানি কব্জায় চলে যাওয়ার পরও নিজেকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছেন সালেহ, তাঁর স্বপ্ন নতুন যুদ্ধের। তবে কি তালিবানের পক্ষে একেবারে মসৃণ হবে না আফগানিস্তানের ক্ষমতা বদল? নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করে তালিবানদের বিরুদ্ধে নতুন লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন আশরাফ গনি আমলের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিরুল্লাহ সালেহ। আফগানিস্তানের পঞ্জশির প্রদেশে জেহাদিদের রুখে দিয়েছে সদ্য ভেঙে যাওয়া আফগান সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহর (Amrullah Saleh) বাহিনী।
পঞ্জশির সীমান্তে সালেহ বাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে পিছু হটতে হয়েছে তালিবানি জেহাদিদের। বুধবার পঞ্জশিরে নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের পতাকাও উড়িয়েছে সালেহ বাহিনী। তালিবানদের পঞ্জশির প্রদেশে ঢুকতে না দেওয়ার ব্যাপারে বদ্ধপরিকর সালেহ এবং মাসুদের বাহিনী।পঞ্জশির চিরদিনই তালিবানদের মাথাব্যথার হিসাবে থেকে গিয়েছে। গত ১৫ অগস্ট আফগানিস্তানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট সালেহ জানিয়ে দিয়েছিলেন সরকারের পতন হলেও তিনি আত্মসমর্পণ করবেন না।
পঞ্জশির (Panjshir) চিরদিনই নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের শক্ত গাঁট হিসাবে থেকে গিয়েছে। এর আগে ৯৬-এ যখন গোটা আফগানিস্তান প্রায় তালিবানদের দখলে, তখনও পঞ্জশিরে নিজেদের আধিপত্য ধরে রেখেছিল স্থানীয় নেতা তথা ভারতের বন্ধু আহমেদ শাহ মাসুদের বাহিনী। ২০০১ সালে আল-কায়দা জঙ্গিদের হাতে খুন হতে হয় আহমেদ শাহ মাসুদকে (Ahmad Shah Massoud)। কিন্তু তারপরও পঞ্জশির দখল করতে পারেনি তালিবানরা। উলটে, মার্কিন সেনার সঙ্গে হাত মিলিয়ে আফগানিস্তানকে তালিবান মুক্ত করার কাজে হাত লাগিয়েছিল আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমেদ মাসুদের (Ahmad Massoud) বাহিনী।
সেই মাসুদের বাহিনীই ফের আফগানিস্তানের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিরুল্লাহ সালেহর সঙ্গে হাত মিলিয়ে তালিবানদের রুখে দিল। এবারও আফগানিস্তানের প্রায় ৯৮ শতাংশ দখল করে ফেললেও পঞ্জশিরে ফের আটকে গেল জঙ্গিরা। তালিবানরা কাবুলে ঢুকে পড়লেও কাবুল থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরের এই প্রদেশ এখনও তালিবান মুক্ত।টুইট করে বলেছিলেন, যে জনগণ তাঁর উপর ভরসা করেছিলেন, তাদের তিনি নিরাশ করবেন না। তালিবানদের সঙ্গে এক ছাদের তলায় তিনি থাকতে পারবেন না। এর পরদিনই অর্থাৎ, ১৬ অগাস্ট আফগান প্রথম উপরাষ্ট্রপতির একটি ছবি প্রকাশিত হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়, যেখানে তাঁকে হিন্দু কুশ পর্বতের এক পার্বত্য উপত্যকায় দেখা গিয়েছিল। বরাবর তালিবানের কট্টর সমালোচক হিসাবেই পরিচিত সালেহ। একমাত্র উত্তর-পূর্বের পাঞ্জশির প্রদেশ এখনও তালিবান দখলে আসেনি। সেখানে রুখে দাঁড়িয়েছে সালেহ বাহিনী।
সেখানকার বিভিন্ন নেতার সঙ্গে সালেহর বৈঠকের ছবিও সামনে এসেছে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সোভিয়েত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো আহমদ শাহ মাসুদের ছেলেও। ২০০১ সালে সালেহকে দেশের গুপ্তচর সংস্থা ন্যাশনাল ডিরেক্টরেট অব সিকিয়োরিটি বা NDS’-এর প্রধান নিযুক্ত করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। চলতি বছর দেশের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট হন সালেহ। এবার তিনিই আফগানিস্তানে তালিবানের বিরুদ্ধে ফ্রন্ট তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করলেন। রুখে দাঁড়াচ্ছেন তালিবানিদের বিরুদ্ধে।