সুন্দরবনে ফের বাঘের হামলায় মৃত্যু হল এক মৎস্যজীবীর

ফের বাঘের হামলায় মৃত্যু হল এক মৎস্যজীবীর। শনিবার বিকেলে সুন্দরবনের জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়েই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। এটি মইপীঠ কোস্টাল থানা এলাকার ঘটনা। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। স্থানীয় সূত্রের খবর, শনিবার কোস্টাল থানার নগেনাবাদ গ্রামের বাসিন্দা পঞ্চু মুন্ডা, তাঁর স্ত্রী ও দুই সঙ্গীকে নিয়ে সুন্দরবনের জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে যান।
বিকালের দিকে কাঁকড়া ধরার সময় বাঘ ওই মৎস্যজীবীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সাথে সাথে জঙ্গলে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেস্টা করে। দেখতে পেয়ে অন্যান্য মৎস্যজীবীরা চিৎকার শুরু করলে বাঘ মৎস্যজীবীকে ছেড়ে দেয়। তৎক্ষণাৎ ওই মৎস্যজীবীকে কুলতলির গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। বেশিদিন আগের কথা নয়। জানুয়ারি মাসের শেষের দিকেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল সুন্দরবনে। এক রবিবার কাঁকড়া ধরতে গিয়ে প্রাণ গিয়েছিল এক মৎস্যজীবীর।
মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে সুন্দরবনের বসিরহাট রেঞ্জ অফিসের ঝিলার জঙ্গলে। স্থানীয় মৎস্যজীবী ও বন দপ্তরের কর্মীদের চেষ্টায় দেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত মৎস্যজীবীর নাম অরবিন্দ বিশ্বাস। বয়স ৪৫। কুমিরমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের মিশনপাড়ায় বাড়ি। পেটের টানে সুন্দরবনের জঙ্গলে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হামলার মুখে পড়েন তিনি। কিন্তু প্রশ্ন হল, কেন বারবার একই ধরনের ঘটনা ঘটছে?
বন দফতর সূত্রে খবর, শীতকালে বাঘের প্রজনন হয়। তাই স্ত্রী এবং পুরুষ বাঘ একে অপরের সঙ্গী খুঁজতে জঙ্গলে দৌড়াদৌড়ি করে। আর সেই সময় কোথাও জাল ঘেরা না থাকলেই নদী পেরিয়ে লোকালয়ে চলে আসে তারা। তবে প্রাকৃতিক বিপর্যয় হচ্ছে বছরে এক থেকে দুবার। নিম্নচাপ এবং ঝড়বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে মানুষের সঙ্গে প্রকৃতিরও।
ফলে জঙ্গল এলাকার সমস্ত জায়গার জল লবণাক্ত হয়ে গেছে। যার জন্যও মিঠা জলের খোঁজে বাঘ লোকালয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া বর্তমানে করোনা আতঙ্কে প্রচুর পরিযায়ী শ্রমিক ভিন রাজ্যে যেতে পারছে না। ফলে গ্রাম থেকেই কিছু রোজগারের আশায় বিকল্প হিসাবে মাছ কাঁকড়া ধরতে জঙ্গলে চলে যাচ্ছেন। বিভিন্ন জায়গার জাল কেটে তাঁরা মাছ ধরতে যাচ্ছেন। ফলে সেখান থেকেও বাঘেরা লোকালয়ে চলে আসতে পারে।