বেআইনি গোরু পাচারে সশরীরে হাজির থাকতেন অনুব্রত মণ্ডল

বিশ্বস্ত দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের মাধ্যমেই এনামুল হক বা গোরু পাচারচক্রের কারবারিদের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ রাখতেন বলে আগেই উঠে এসেছিল সিবিআই তদন্তে। এ বার সিবিআই সরাসরি দাবি করল, বেআইনি গোরু পাচারের ক্ষেত্রে অনেক সময়ে সর্বশক্তিমান সুবিধাপ্রদানকারী হিসাবে সশরীরে উপস্থিত থাকতেন অনুব্রত মণ্ডল।
শনিবার আসানসোলের বিশেষ আদালতে যে কেস ডায়েরি জমা দিয়েছে সিবিআই, সেখানে তারা স্পষ্ট উল্লেখ করেছে তাদের কাছে এমন অনেক পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ রয়েছে, যা থেকে সীমান্ত পেরিয়ে গোরু পাচারের সময়ে অনুব্রতর সশরীরে এবং সরাসরি হস্তক্ষেপ সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হয়েছে। অনুব্রত নিজে দাবি করেছেন, তাঁর নামে কোনও বেআইনি সম্পত্তি নেই।
কিন্তু তাঁর প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গলকে জেরা করে একের পর এক সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে সিবিআই। অনুব্রতর সঙ্গে এনামুলের মধ্যস্থতাকারী হিসাবে সায়গলের ভূমিকা ছিল। সেই সূত্রে সিবিআই জানতে পেরেছে, বীরভূমে তো বটেই, মুর্শিদাবাদের বহু জায়গায় এমন অনেক সম্পত্তির হদিশ মিলেছে, যার সঙ্গেও অনুব্রতর যোগ রয়েছে।
মুর্শিদাবাদের ডোমকল এলাকায় বিপুল জমির রেজিস্ট্রি হয়েছিল বলেও সিবিআইয়ের নজরে এসেছে। বেনামে ওই সব সম্পত্তির মালিক অনুব্রত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, অনেক জমির মালিকানা রয়েছে অনুব্রতর নিকটাত্মীয়দের নামেও। তাঁদের আয়ের সঙ্গে সম্পত্তির হিসেব কিছুতেই মেলাতে পারছেন না গোয়েন্দারা।
টাকার ভাগ সরাসরি না-দিয়ে, তাঁদের সম্পত্তি 'ভেট' দেওয়া হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। 'ভোলে ব্যোম' ছাড়াও আরও কয়েকটি রাইস মিলের হদিশ মিলছে। খাতায়-কলমে মালিকের নাম অন্য হলেও, সেগুলির নিয়ন্ত্রণ নাকি ছিল অনুব্রতর ঘনিষ্ঠদের হাতেই। অভিযোগ, সেখান থেকে চাল পৌঁছে যেত খাদ্যদপ্তরের ভাঁড়ারে। সেই তথ্য খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করে দিয়েছেন গোয়েন্দারা।