তৃণমূলের সমর্থনে পুরপ্রধান হতে পারেন বিজেপির হিরণ?

হিরণ জিতলেও পুরসভা দখল থেকে অনেক দূরেই রয়ে গেল বিজেপি। রাজ্যের ১০৮ পুরসভার ভোটপরীক্ষায় ১০২টিতেই জিতেছে বাংলার শাসকদল। তার মধ্যে খড়গপুর পুরসভার (Kharagpur Municipal) দখল এবারও তৃণমূলেরই হাতে। তবে এই পুরসভার চেয়ারম্যান পদ নিয়ে নতুন সমীকরণের সম্ভাবনা তুঙ্গে। সম্ভবত খড়গপুর সদরের বিজেপি বিধায়ক তথা অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়কেই চেয়ারম্যানের পদে সমর্থন দিতে চলেছে তৃণমূল (TMC)।
সেক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ জয়ী কাউন্সিলরের সমর্থন থাকলে তিনিই হবেন খড়গপুর পুরসভার চেয়ারম্যান। এই জল্পনা তুঙ্গে ওঠায় হিরণও সাবধানী। তিনি নিজের দলের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখছেন। শুক্রবার তিনি দলের চিন্তন বৈঠকে যোগ দেননি। এখন মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপের লোকসভা এলাকার মধ্যেই পড়ে এই পুরসভা। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে নানা কারণে দিলীপ- হিরণের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে।
তবু হিরণকে সামনে রেখেই পুরভোটের প্রচারের সিদ্ধান্ত এবং পরে অভিনেতা-বিধায়ককে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে রাজ্য বিজেপি দিলীপকে ‘বার্তা’ দিয়েছিল। সেই হিসেবে শুধু তৃণমূলের বিরুদ্ধেই নয়, হিরণের এই ভোট লড়াই ছিল দলের ভিতরেও জবাব দেওয়ার। সেই হিসেবে ‘জোড়া জয়’ পেলেন হিরণ। ফলে ঘোষণার পরে এই জয়কে অবশ্য দলের কৃতিত্ব বলেই দাবি করেছেন হিরণ।
তিনি বলেন, ‘‘গত বিধানসভা নির্বাচনে এই ওয়ার্ডে আমি ২৬৫ ভোটে পিছিয়ে ছিলাম। সেখান থেকে এই জয় ঐতিহাসিক। অতগুলো ভোট কভার করে জয় পেয়েছি। এই জয় আমার নয়, দলের। এখানকার মানুষ বিজেপি-কে ভোট দিয়েছেন।’’বঙ্গ বিজেপির একাংশ বিশেষত দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) গোষ্ঠীর সঙ্গে হিরণের মতান্তরের কথা আর চাপা নেই। খড়গপুর এলাকায় প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের প্রভাব রয়েছে ভালই।
ফলে নতুন বিধায়ক হিরণের সঙ্গে তাঁর একটা ঠান্ডা লড়াই ছিলই। দলের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব আরও বাড়তে থাকায় অনেক বিক্ষুব্ধ নেতাই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ করে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন। এবার ৬ নং ওয়ার্ড থেকে জিতলেও প্রদীপ সরকারের বিরুদ্ধে কালীঘাটে অজস্র অভিযোগ এসেছে। বিশেষত দুর্নীতির অভিযোগে একাধিকবার মুখ পুড়েছে।
ফলে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের খানিকটা রোষানলে প্রদীপ সরকার। তাঁর আর চেয়ারম্যান হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলর হিরণকে সমর্থন দিলে তিনিই হবেন পুরচেয়ারম্যান।এ নিয়ে হিরণের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ”সকলে যদি চান, তাহলে আমার না বলার ক্ষমতা নেই।” প্রসঙ্গত, এই সমর্থন নিয়ে পুরপ্রশাসকের পদে বসলেও হিরণের দলবদলের কোনও প্রক্রিয়ায় যেতে হবে না। কারণ, দলত্য়াগ আইন বিধানসভা ও লোকসভার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, পুরসভার ক্ষেত্রে নয়।