১৪ বছরে ২৮৬ টি বিয়ে করে বিশ্বরেকর্ড করলো বাংলাদেশের জাকির হোসেন

পৃথিবীজুড়ে কতই না রেকর্ড হয়। কেউ দৌড়ে করেন, কেউ খাওয়ায়, কেউ বা পড়াশোনায় করেন। কিন্তু বাংলাদেশের যুবক জাকির হোসেন যে রেকর্ড করে বসে আছেন, তা কি আদৌ আর কোনওদিন ভাঙা সম্ভব? কী করেছেন জাকির? বিয়ের সংখ্যায় রেকর্ড করেছেন! যদি ভেবে থাকেন পাঁচ, দশটা বিয়ে করেই রেকর্ড করেছেন তিনি, তাহলে সম্পূর্ণই ভুল ভাবছেন।
১৪ বছরে 'মাত্র' ২৮৬ বিয়ে করেছেন বাংলাদেশের জাকির। তার স্বপ্ন অবশ্য ছিল ৭০০ বিয়ে করার।বাংলাদেশের লালমনিরহাট জে’লার জাকির হোসেন ব্যাপারীর বিয়ে করা তার তার নে’শা এবং পেশা। বিয়ের ইনকাম দিয়েই চলে প্র’তারক জাকিরের সংসার।
তার গ্রামের বাড়ি বাংলাদেশের লালমনিরহাট জে’লার আদিত্যপুর থানার দর্গাপুরে। পিতার নাম মত মনির হোসেন। বর্তমানে থাকেন টঙ্গীর আইচপাড়ার আহসান মোল্লা রোডে।তার এই প্তারণার কীর্তি সর্বপ্রথম জনসম্মুখে আসে ২০১৮ সালে এক না’রীর করা ধর্ষণ ও প্র’তারণার মা’মলার মাধ্যমে। পরে এই মমলায় গ্রফতার হয়ে তার স্থান হয় শ্রীঘরে।
কিন্তু জা’মিনে বের হয়ে আবারো সে ফিরে যায় তার বিয়ে করা পুরনো পেশায়। পরে এক তরুণীর মা’মলায় আবারো এই ভণ্ডের জায়গা হয়েছে শ্রীঘরে। এরপর একে একে বহু না’রী সাহস করে তার বি’রুদ্ধে মুখ খোলেন, মা’মলা করেন। বিয়ে আর প্র’তারণার মধ্যে দিয়েই চলছিল রাব্বির জীবন।
তিনি কোনও চাকরি করেন না। করেন না ব্যবসাও। তবুও চলাচল করেন দামি গাড়িতে। দামি দামি পোশাক পরিধান আর পটু কথায় ভোলাতেন তরুণীদের।ম’হিলাদের স’ঙ্গে ঘ’নিষ্ঠ অবস্থার ভিডিও তুলে ব্ল্যা’কমেলিং করেও সে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিত। এমনকি তার ঔরসে জন্ম নিয়েছে এমন বেশ কয়েকটি শি’শুর পরিচয়ও পাওয়া গেছে। কিন্তু নিজ স’ন্তানের নি’ষ্পাপ মায়াবী চাহনিও তাকে এ’তটুকু দমাতে পারেনি এসব অ’পকর্ম থেকে।
এরপর তার নামে তেজগাঁও থানায় অভিযোগ দা’য়ের হয়। পু’লিশ ত’দন্তে নেমে ঢাকার মনিপুরি পাড়া থেকে তাকে গ্রে’ফতার করে। পু’লিশি জেরার মুখে সে তার অ’পরাধের কথা স্বীকার করে। নিজেকে লন্ডনের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী বলে জানাত। স’রকারি আধিকারিক, কখনও বেস’রকারি অফিসের অধিকর্তা বলে পরিচয় দিত।
দামি গাড়িতে চড়ত। পোশাকও ছিল দামী।উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে ২১ বছর বসয়ে প্রথমবার বিয়ের পিঁড়িতে বসে সে। তারপর থেকে প্রতি মাসেই সে বিয়ে করত। এই বিয়ের টাকা উপার্জনের এই চ’ক্রে সে সামিল করেছিল, নিজের আপন বোন, তার কথিত এক স্ত্রী শাপলা বেগম, নকল মৌলবি ও এক কাজিকে।
তদন্ত সূত্রে পুলিশ জানতে পেরেছে, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মূলত সমাজের উচ্চবিত্ত মহিলাদের টার্গেট করতেন জাকির হোসেন। এরপর ভুয়ো নাম দিয়ে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে তাদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাতেন। নিজেকে বেসরকারি অফিসের বড় কর্তা আবার কখনও বড় ব্যবসায়ীর পরিচয় দিতেন। ফেসবুকে পাত্রী চাই বিজ্ঞাপনও দিতেন। অনেক মহিলাই তা দেখে জাকিরের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন।
এরপরই সেই মহিলাদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলতেন জাকির। নিজের আভিজাত্য তুলে ধরতে দামি পোশাক ও গাড়ি ব্যবহার করতেন। খাওয়াদাওয়া করতেন নামী রেস্তোরাঁয়। প্রেম একটু এগোতেই বিয়ের প্রস্তাব দিতেন তাঁদের। ভুয়ো কাজি দিয়ে মিথ্যা কাবিননামায় বিয়ে করতেন। কিন্তু বিয়ের পরই তার আসল চেহারা বেরিয়ে আসত। নববধূ ও তাদের পরিবারের কাছ থেকে অর্থ ও সোনার গয়না হাতিয়ে নিতেন।
এমনকী তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললে আগে থেকে তুলে রাখা অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতেন। ব্ল্যাকমেল করে আরও টাকা হাতাতেন। অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ে এতদিনের 'স্বপ্ন' অধরাই থেকে গেল জাকির হোসেনের।