কালীপুজো শুরু হওয়ার আগে মরদেহ আনা হয় ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির পুজোয়

কালীপুজো শুরু হওয়ার আগে মরদেহ আনা হয় ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির পুজোয়

আজবাংলা          ঠনঠনিয়ার শ্রীশ্রীসিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির বা ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি কলকাতার ঠনঠনিয়া অঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রাচীন কালী মন্দির | এটি কলেজ স্ট্রীট মোড় থেকে একটু দূরে বিধান সরণিতে অবস্থিত |  জনশ্রুতি অনুসারে ১৭০৩ খ্রিষ্টাব্দে উদয়নারায়ণ ব্রহ্মচারী নামে জনৈক তান্ত্রিক মাটি দিয়ে সিদ্ধেশ্বরী কালীমূর্তি গড়েন | শোনা যায়, জমিদার সাবর্ণ রায়চৌধুরীর বংশধর নন্দদুলাল রায়চৌধুরী ১৭৬০ সালে কালী পুজো শুরু করেন |

এখানে মায়ের মূর্তি মাটির, প্রতি বছর মূর্তি সংস্কার করা হয় | ঠনঠনিয়া কালীবাড়িতে জ্যৈষ্ঠ মাসে ফলহারিণীর পুজো, কার্তিক অমবস্যায় আদিকালীর পুজো ও মাঘ মাসে রটন্তী মায়ের পুজো হয় | ঠনঠনিয়ার শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের পুজো ২০১৯ সালে ৩১৬ বছরে পা দিয়েছে | জানা যায় কালীপুজো শুরুর আগে মরদেহ আনা হয় ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির পুজোয় | দিপান্বিতা অমাবস্যার আগে ভূত চতুর্দশী |

সেদিন মন্দিরে মরদেহ এনে মৃতের আত্মার শান্তি কামনা করে পরিবার | সেই রীতি এখনও বদলায়নি | সময় গড়ালেও ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির পুজো এখনও আগের  রীতি নিয়ম মেনেই চলে আসছে | ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির মন্দিরটি তৈরী করেন  শিষ্য শংকর ঘোষ ১৭০৬ সালে | ঠনঠনিয়া কালীবাড়িতে মায়ের সিদ্ধেশ্বরী রূপ | প্রথমে মায়ের পুজো করতেন শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ দেব |  কথিত আছে, শিষ্য কেশবচন্দ্র সেন যখন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন |

তখন  রামকৃষ্ণদেব চিনি ও ডাব দিয়ে পুজো দিয়েছিলেন | সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ হয়ে ওঠে কেশবচন্দ্র | ঠনঠনিয়া কালীবাড়িতে ৩৬৫ দিনই আমিষ ভোগের রীতি | তবে ফলহারিণী পুজোর দিন আর দিপান্বিতা অমাবস্যায় নিরামিষ ভোগ দেওয়া হয় | মনস্কামনা পূরণে সকাল থেকে ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে | শোনা যায়, জমিদার সাবর্ণ রায়চৌধুরীর বংশধর নন্দদুলাল রায়চৌধুরী ১৭৬০ সালে কালী পুজো শুরু করেছিলেন | 

তিনটে পুত্রসন্তানের পর কন্যাসন্তানের জন্ম হয় নন্দদুলাল রায়চৌধুরীর |  কিন্তু সাত বছরের মাথায় তার একমাত্র কন্যা মারা যায় |হতাশায় জর্জরিত নন্দদুলাল একদিন স্বপ্ন দেখেন, মেয়ে বলছে, আমি তো তোমাকে ছেড়ে যাইনি | আদিগঙ্গার পাশে বটগাছ আছে, সেখানে কালো পাথর আছে | সেটিকে প্রতিষ্ঠা কর, আমি সেখানেই ধরা দেব | এরপর থেকেই শুরু হয় পুজো |