বাংলার ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী বিহারীবাবু

বাংলার ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী  বিহারীবাবু

আসানসোলে লোকসভা উপনির্বাচনে শত্রুঘ্ন সিন্‌হাকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে তৃণমূল। সেই ঘোষণার কিছু ক্ষণের মধ্যেই এলাকায় প্রচারে নেমে পড়লেন জোড়াফুল শিবিরের নেতা-কর্মীরা। আয়োজন করা হয়েছে কর্মিসভারও। তবে আসানসোলে তৃণমূলের প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি।  রবিবারই দুই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আসানসোলে তৃণমূলের মুখ বলিউডের তারকা শত্রুঘ্ন সিনহা। বিজেপি যেমন কটাক্ষ করতে ছাড়েনি, সিপিএমও তোপ দেগেছে। সকলেরই মত, অন্য দল ছেড়ে আসার উপহার পেলেন তাঁরা। বিজেপির আইটিসেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অমিত মালব্য টুইট করেছেন, ‘অনেকেই ভেবেছিলেন তৃণমূলের যুব প্রেসিডেন্ট সায়নী ঘোষকে আসানসোলে প্রার্থী করা হবে। তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত।

তাই তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’ বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস লোক দেখিয়ে, ভয় দেখিয়ে, মিথ্যা মামলা দিয়ে দলে লোক আনে। এখন বিষয়টা পরিষ্কার হল কী লোভ দেখিয়ে কাকে কীভাবে দলে সামিল করেছে। অতএব যারা আমাদের পার্টির সঙ্গে যুক্ত নয়, যারা তৃণমূলে আছে তাদের তৃণমূল কংগ্রেস কোথায় প্রার্থী করবে বা কোথায় কাজে লাগাবে সেটা তৃণমূলের ব্যাপার।

তা নিয়ে আমাদের ভাবার কোনও ব্যাপার নেই।”  সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “কাকে তৃণমূল প্রার্থী করল সেটা তৃণমূলের ব্যাপার। ফেলেইরো রাজ্যসভার সদস্য। যিনি পশ্চিমবাংলার ক’টা জেলা সেটাই জানেন না। সুপ্রিমোর ইচ্ছা, তাই হয়েছেন। তেমনই আসানসোলের বাবুল বালিগঞ্জে আর বিহারের শত্রুঘ্ন আসানসোলে। বোঝাই যাচ্ছে, আসলে রাজ্য ও রাজ্যের মানুষ নিয়ে তৃণমূলের আগ্রহ কম। ক্ষমতার মধ্যে থাকাটাই ওদের একমাত্র লক্ষ্য।” যদিও বিরোধীদের কোনও কথাই আমল দিতে রাজী নয় শাসকদল।

ফিরহাদ হাকিম বলেন, “আমরা খুবই আনন্দিত প্রার্থী নিয়ে। আমরা সকলে মিলে পশ্চিমবঙ্গে যে ধারা তৈরি করেছি, যেখানেই ঘাসফুল প্রার্থী দাঁড়াচ্ছেন বিপুল ভোটে জিতছেন এবারও তাই হবে। আমরা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়ব।” আগামী ১২ এপ্রিল আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র এবং বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। ১৬ এপ্রিল ভোটগণনা।

তাই প্রার্থী ঘোষণা হতেই প্রচারে নেমে পড়েছে তৃণমূল। রবিবার থেকেই কুলটি, রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া, বারাবনি-সহ অনেক জায়গাতেই দেওয়াল লিখনের কাজ শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। আসানসোলের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটকের কথায়, ‘‘শত্রুঘ্ন সিনহা সাংসদের দায়িত্ব সামলেছেন। উনি হিন্দি চলচ্চিত্র জগতের নামজাদা নায়কও ছিলেন।

সব সময়েই লোকসভায় তাঁর ভাল পারফরম্যান্স দেখা গিয়েছে।’’   আসানসোলের বিজেপি নেতা দিলীপ দে-র খোঁচা, ‘‘তৃণমূলে তেমন কেউ নেই বলে বহিরাগত চলচ্চিত্র জগতের এক নায়ককে প্রার্থী করেছে।’’ আবার আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র তথা বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির কটাক্ষ, ‘‘এখানে তৃণমূল শত্রুঘ্ন সিন্‌হাকে প্রার্থী করেছে। ওঁর প্রায় ৮০ বছর বয়স হল। ওঁকে আমার প্রণাম।’’ যদিও বিজেপি-র এই বক্তব্যকে আমল দিচ্ছে না তৃণমূল।