মমতার পায়ে হাত শুভেন্দুর, বিজেপি নেতাকে মন্ত্রিত্বের প্রস্তাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী

মমতার পায়ে হাত শুভেন্দুর,  বিজেপি নেতাকে মন্ত্রিত্বের প্রস্তাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী

ঘরে প্রবেশ করেই মমতার পায়ে হাত শুভেন্দুর! ইদানিং যাঁকে কথায় কথায় ‘লেডি কিম’ বলে থাকেন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই (Mamata Banerjee) সংবিধান দিবসে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর কক্ষে প্রণাম করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, এমনটাই খবর সূত্রের। শুক্রবার সারাদিন বিধানসভায় যা ঘটেছে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে চর্চার রসদ জোগানোর পক্ষে তা যথেষ্ট।

জানা যাচ্ছে, মমতার ডাকে সাড়া দিয়ে এদিন শুধু বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁর ঘরে গিয়েছিলেন তাই নয়, প্রণামও করেন তাঁর প্রাক্তন দলনেত্রীকে। যাঁর নেতৃত্বে রাজনৈতিক জীবনে বিশেষ উচ্চতায় উঠেছেন, তাঁর সঙ্গে এতদিন পর মুখোমুখি হয়েই সম্মান প্রদর্শন করেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। শুধু শুভেন্দু নয়, এদিন মমতাকে প্রণাম করেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পলও।  

মিনিট তিনেক মমতার ঘরে ছিলেন বিরোধী দলনেতা। সঙ্গে ছিলেন তিন বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা, অগ্নিমিত্রা পল ও অশোক লাহিড়ী। এই তিন মিনিটে ঠিক কী হল, তা জানতে উৎসাহী অনেকেই। এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে কেউ কিছু না জানালেও, সূত্রের খবর, এদিন ঘরে ডেকে চা খাওয়ার কথাও বলেছিলেন মমতা। তবে অধিবেশন শুরু হয়ে যাবে বলে সময়ের অভাবে চা না খেয়েই বেরিয়ে আসতে হয় শুভেন্দুদের।

আরও জানা গিয়েছে, এদিন শুভেন্দুর মুখোমুখি হয়েই প্রথমে মমতা বলেন ‘অনেকদিন পর এত কাছে এলি…।’ শুধু তাই নয়, সূত্রের আরও খবর, বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ীকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আপনি আমাদের দলে চলে আসুন, আপনাকে অর্থমন্ত্রী করে দেব।’ একথা শুনেই নাকি শুভেন্দু উত্তর দেন, ‘কিছু দিতে হবে না, পিএসসি-টা দিয়ে দিন।’ উল্লেখ্য, তৃণমূল নতুন করে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিধানসভার পিএসি-র চেয়ারম্যান পদ নিয়ে তরজা চলছে।

বিজেপির দাবি, রীতি অনুযায়ী, তাঁদের বিধায়ককেই এই পদ দিতে হবে। প্রথমে ওই কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছিল মুকুল রায়কে। আর এবার সেই পদ দেওয়া হয়েছে বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীকে। তাঁকে নিয়েও আপত্তি রয়েছে বিজেপির। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিরোধী দলনেতা জানান, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নিছকই সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছে তাঁর।

তিনি বলেন, ‘আমি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছি। এর মধ্যে অন্য কিছু নেই। আমি একা যাইনি, সঙ্গে তিনজন ছিলেন।’ মুখ্যমন্ত্রীও পরে বলেন, ‘আমি সৌজন্যমূলক সাক্ষাতের জন্য ডেকেছিলাম। যেহেতু সংবিধান দিবস, যাতে উন্নয়নের কাজ সবাই মিলে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।’   তবে বিরোধী দলনেতা যতই এই সাক্ষাৎকে সৌজন্যের তকমা দিন না কেন, নির্বাচনের দেড় বছর বাদে মমতা-শুভেন্দুর আকস্মিক সাক্ষাৎ খুব একটা সোজা নজরে দেখছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

উল্লেখ্য, এদিন সাক্ষাতের পরই তড়িঘড়ি পরিষদীয় বৈঠক ডাকেন শুভেন্দু। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে যাতে কোনও অতিরঞ্জন না হয়, অতিরিক্ত দুর্বলতা যাতে প্রকাশ না পায়, সে ব্যাপারে দলীয় বিধায়কদের সতর্ক করেছেন শুভেন্দু। পরবর্তীতে সরকার কোনও সহযোগিতা চাইলে, সেই সেই বিষয়টি দেখবেন অশোক লাহিড়ী, বৈঠকে এমনটাই আলোচনা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।