দিলীপকুমার রায় : নদীয়া জেলার গর্ব দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের পুত্র দিলীপকুমার রায়

দিলীপকুমার রায় : নদীয়া জেলার গর্ব দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের পুত্র দিলীপকুমার রায়

দিলীপকুমার রায় (Dilip Kumar Roy) একজন বিখ্যাত বাঙালি যিনি সঙ্গীতজ্ঞ, সঙ্গীত সমালোচক, গীতরচয়িতা, সুরকার ও গায়ক হওয়ার পাশাপাশি সাহিত্যের নানান শাখায় নিজের উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন৷ বিখ্যাত দেশাত্মবোধক সঙ্গীত রচয়িতা দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের পুত্র ছিলেন দিলীপকুমার রায়।

১৮৯৭ সালের ২২ জানুয়ারি নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে দিলীপকুমার রায়ের জন্ম হয়৷ তাঁর বাবা ছিলেন খ্যাতনামা নাট্যকার ও গীতিকার দ্বিজেন্দ্রলাল রায় এবং মায়ের নাম সুরবালা দেবী৷ ১৯০৩ সালে দিলীপকুমার এবং তাঁর বোন মায়া মাতৃহারা হন। দিলীপকুমারের ষোলো বছর বয়সে দ্বিজেন্দ্রলালের মৃত্যু হলে দিলীপ কুমার কলকাতায় এসে দাদু বিখ্যাত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক প্রতাপচন্দ্র  মজুমদারের কাছে প্রতিপালিত হন৷ 

দিলীপকুমারের প্রাথমিক পড়াশোনা শেষ হলে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন৷ ছোটো থেকেই সংস্কৃত, গণিত, রসায়ন এবং ইংরেজির প্রতি আগ্রহের পাশাপাশি সঙ্গীতের প্রতিও তাঁর বিশেষ আগ্রহ ছিল। ১৯১৮ সালে প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে তিনি গণিতে প্রথম শ্রেণীতে সাম্মানিক সহ বি.এ. পাশ করেন৷ প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়ার সময়ে তিনি সুভাষচন্দ্র বোসের সান্নিধ্যে আসেন৷

এরপর ১৯১৯ সালে দিলীপকুমার ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত নিয়ে পড়তে যান এবং ট্রাইপোস প্রথম ভাগ পাশ করেন। কিশোর বয়সে দিলীপকুমার সঙ্গীতজ্ঞ বিষ্ণু নারায়ণ ভাটখন্ডের কাছে সঙ্গীত শিক্ষা পেয়েছিলেন৷ পরিবারে সঙ্গীতের আবহ থাকার কারণে তিনি জনপ্রিয় সঙ্গীতের পাশাপাশি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে শিক্ষা লাভ করেছিলেন৷ বিদেশে থাকাকালীন তিনি পিয়ানো শেখার পাশাপাশি ফ্রেঞ্চ, জার্মান এবং ইতালীয় ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন৷ বিদেশে থাকার সময় দিলীপ কুমারের সাক্ষাৎ হয় রোমা রোল্যাঁ, বার্ট্রান্ড রাসেল, হারমান হেসের সঙ্গে।

তিনি সুইজ়ারল্যান্ডের লুনাগোতে আমন্ত্রিত হয়ে ভারতীয় সঙ্গীত বিষয়ে বক্তৃতা দিতে গেছিলেন। তিন বছর ইউরোপে কাটানোর পর তিনি ১৯২২ সালে দেশে ফিরে আসেন। কলকাতায় থেকে পড়াশোনাকালীন দিলীপ কুমার হিন্দুস্তানী ওস্তাদি সঙ্গীতের প্রতি মুগ্ধ হন। পদাবলী সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল খগেন্দ্রনাখ মিত্র ছিলেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের অন্তরঙ্গ বন্ধু। খগেন্দ্রনাথের অনুপ্রেরণাতেই দিলীপ রায় কীর্তন গানে আকৃষ্ট হন এবং তাঁর অনুপ্রেরণাতেই নবদ্বীপচন্দ্র ব্রজবাসীর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন।

  দিলীপকুমার বাংলা গানে এক নতুন ঘরানার পথিকৃৎ ছিলেন। বিদেশ থেকে শিখে এসেছিলেন  নতুন নতুন রীতি। বাংলা গানে কীভাবে সেই নতুন রীতি কাজে লাগানো যেতে পারে তাতেই মেতে উঠলেন তিনি৷ এমনকি নতুন কিছু শেখার আশায় বাইজিদের কাছেও তিনি গিয়েছেন গান শুনতে। বাংলা গানের মধ্যে কী করে মীড়, গমক, তান এনে তাকে পাশ্চাত্য সুরের আঙিনায় ফেলা যায় সেই পরীক্ষায় মেতে উঠেছিলেন তিনি।

১৯২৪ সালে বাবা দ্বিজেন্দ্রলালের গানের স্বরলিপি প্রকাশ করে তার ভূমিকায় দিলীপকুমার লিখেছিলেন, “স্বরলিপি দেখে গান শিক্ষা সম্বন্ধে আমার একটা কথা বলবার আছে। সেটা এই, যে কোনো গানের মধ্যে রসসঞ্চার করতে হলে শুষ্ক হুবহু অনুকরণে হয় না। কোনো গানকে প্রাণে মূর্ত করে তুলতে হলে তাকে নিজের সৌন্দর্য অনুভূতি অনুসারে একটু আধটু বদলে নিতেই হয়।”

দিলীপকুমার গানকে নিজের মতন করে ভেঙে-গড়ে নেওয়ার জন্য তাতে মিশিয়েছিলেন কীর্তনের আখর রীতি। তাঁর রেকর্ডের ‘বৃন্দাবনে লীলা অভিরাম’ গানটির ‘ওরা জানে না, তাই মানে না’র পল্লবিত সুর এই পরীক্ষা নিরীক্ষার অন্যতম উদাহরণ। নিজের অনুভবকেই গানের সুরে বেঁধেছিলেন তিনি। ‘যদি দিয়েছ বঁধুয়া’, ‘বঙ্গ আমার জননী আমার’, ‘জীবনে মরণে এসো’ গানগুলিতে লেগে আছে অনুভবের সুর৷ দিলীপকুমারের গানের এক নিজস্ব ঘরানা ছিল যা ‘দৈলিপী ঢং’ নামে পরিচিত৷ অতুলপ্রসাদ, নজরুল ইসলামের বহু গান তাঁরই কন্ঠে পরিচিত হয়ে উঠেছে৷

তাঁর গানের রেকর্ডের সংখ্যা শতাধিক। ১৯৩৭ সালে দিলীপকুমার কলকাতায় এসে গ্রামোফোন রেকর্ডে দু’টি গান গেয়ে সাড়া জাগিয়েছিলেন যার একটি ‘রাঙ্গা জবা কে দিল তোর পায়ে’ আর অন্যটি ‘ছিল বসি যে কুসুমকাননে’। গান দু’টি ছিল টপ্পা ও কীর্তনাঙ্গ ছাঁদের। গানদুটি সমাদর পেলে দিলীপকুমার দ্বিতীয়বার গানের রেকর্ড করলেন যেগুলি হল- ‘এই পৃথিবীর পথের পরে’ এবং ‘জ্বলবার মন্ত্র দিলে মোরে’।

তাঁর তৃতীয় রেকর্ডে দিলীপকুমার গেয়েছিলেন বাংলা গানের ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গান ‘সেই বৃন্দাবনের লীলা অভিরাম’। চল্লিশের দশকে একটি হিন্দী ছায়াছবিতে দিলীপকুমার কয়েকটি গান সংকলন এবং সুর-সংযোজনা করেছিলেন যে ছবিটি মূলত গানের জন্যই জনপ্রিয় হয়েছিল।

পঞ্চাশের দশকের শুরুর দিকে তিনি হিন্দীতে দেশাত্মবোধক গান রচনা করেন, “হাম ভারত কে” এবং  “নিশান ঊঁচা কদম বঢ়া”। এই গান দুটি ফিল্ড মার্শাল কারিয়াপ্পার খুব পছন্দ হয়েছিল৷ শোনা যায় তিনি গান দুটিকে ভারতীয় সেনা মার্চিং সং-এর সূচীতে গ্রহণ করার জন্য সুপারিশ করেছিলেন। সেই সময়ে টিকিট কেটে গান শোনার চল ছিল না বাংলায়।

তবুও দেশের বিভিন্ন জায়গায় কনসার্ট করে তাঁর গুরু নবদ্বীপচন্দ্র ব্রজবাসীর আশ্রমের সাহায্যের জন্য তিনি প্রণামী হিসেবে টাকা পাঠিয়েছেন। জীবনের শেষের দিকের দুই দশক দিলীপকুমার সচেতন ভাবেই ভক্তিগীতি ছাড়া কিছু গাইতেন না। স্মৃতিচারণায় দিলীপকুমার লিখছেন— ‘‘১৯২৮ সালে আমি যোগজীবন বরণ করি। তারপর লক্ষ্য করি যে, ওস্তাদি সংগীতের অজস্র তানকর্তব ও কণ্ঠের কসরতে আর আমার মন তেমন ভিজে উঠছে না। …ওস্তাদি গানের সুখবিলাস আমাদের অন্তরে খানিকটা আবেশ জাগালেও সে-আবেশ স্থায়ী হতে পারে না এই জন্যে যে, সে কিছুতেই ভুলতে পারে না যে সমঝদার শ্রোতার সাড়া তার চাইই চাই।

কিন্তু ভজনকীর্তনের বেলায় গুণী রূপান্তরিত হন পরম ভাগবতে।’’ কেবল গান নয় সাহিত্য জগতেও দিলীপকুমারের ছিল অনায়াস যাতায়াত৷ ১৯৩৩ সালে প্রকাশিত ‘অনামী’ এবং ১৯৩৬ সালে প্রকাশিত ‘সূর্যমুখী’ নামে তিনি দুটি কাব্য সংকলন রচনা করেন। তাঁর কবিতাগুলিতে মূলত ভক্তিভাবের আধিক্য লক্ষ্য করা যায় এবং আঙ্গিকের দিক থেকেও অনেকটাই প্রাচীনপন্থী। তিনি বেশ কিছু উপন্যাসও রচনা করেছেন যেমন, মনের পরশ (১৯২৬), রঙের পরশ (১৯৩৪), দোলা (১৯৩৫) ইত্যাদি।

তাঁর লেখা ভ্রমণ কাহিনীগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ভ্রাম্যমাণের দিনপঞ্জিকা (১৯২৬)।১৯২২ সালে বিদেশ সফর থেকে ফিরে তিনি গোটা ভারত পরিক্রমা করেছিলেন সুরের সন্ধানে। সেই পরিক্রমার ইতিহাস লিপিবদ্ধ রয়েছে এই বইটিতে। এছাড়া ভূস্বর্গ চঞ্চল (১৯৪০), দেশে দেশে চলি উড়ে (১৯৫৮) তাঁর লেখা ভ্রমণকাহিনী। ইংরেজী ভাষাতেও তিনি বেশ কিছু গ্রন্থ রচনা করেছেন এবং একাধিক গ্রন্থের বাংলা অনুবাদও করেছেন।

তাঁর রচিত ইংরেজী গ্রন্থ ‘Among the Greats’ ও ‘তীর্থঙ্কর’ দুটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। শরৎচন্দ্রের উপন্যাস ‘রামের সুমতি’র  ইংরেজি অনুবাদ করেছিলেন তিনি৷ দিলীপকুমার ঋষি অরবিন্দের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিলেন ১৯৪৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। ১৯৫০ সাল পর্যন্ত তিনি পণ্ডিচেরীর আশ্রমেই বসবাস করেন। দিলীপকুমার মনে করতেন অরবিন্দ হয়ত তাঁর গান পছন্দ করেন না৷ অরবিন্দ দিলীপকুমারের মনের এই সংশয় জানতে পেরে দিলীপকুমারকে চিঠিতে লিখেছিলেন— ‘‘দিলীপ তোমার এই সন্দেহ সম্পূর্ণ অকারণ।

তোমার সংগীতে আমার আগ্রহ নেই এমন হতেই পারে না। বরং আমার আগ্রহ এত প্রবল যে আমার ঘুমের সময়টুকুতেও আমি তোমার ‘সরস্বতী’ সংগীতটি সংশোধন করতে বসেছিলাম, যাতে অনুষ্ঠানের প্রয়োজনে গানটি তৈরি থাকে।… যে বোধ কেবলই মানসিক এবং বাক্যাতীত তাকে ব্যাখ্যা করা যায় না।

তোমার গান সম্বন্ধে অন্ততঃ আমার এই অনুভূতিই হয়েছে আর এই জন্যই তোমার গান সম্পর্কে কিছু লেখা সবসময়েই আমার কাছে একটু কঠিন মনে হয়। শ্রী অরবিন্দ—২৩/৩/৩৩’’।  সম্পূর্ণ বিপ্রতীপ মেরুতে অবস্থান করলেও জওহরলাল নেহরু, সুভাষচন্দ্র বসুর সাথে দিলীপকুমারের সম্পর্ক ছিল বন্ধুত্বের।রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে দিলীপকুমার তাঁর এই দুই বন্ধুর থেকে দূরে থাকলেও তাঁদের বন্ধুত্ব অটুট ছিল। 

স্মৃতিচারণায় দিলীপকুমার লিখছেন— ‘‘১৯২৮ সালে আমি যোগজীবন বরণ করি। তারপর লক্ষ করি যে, ওস্তাদি সংগীতের অজস্র তানকর্তব ও কণ্ঠের কসরতে আর আমার মন তেমন ভিজে উঠছে না। ...ওস্তাদি গানের সুখবিলাস আমাদের অন্তরে খানিকটা আবেশ জাগালেও সে-আবেশ স্থায়ী হতে পারে না এই জন্যে যে, সে কিছুতেই ভুলতে পারে না যে সমঝদার শ্রোতার সাড়া তার চাইই চাই।

কিন্তু ভজনকীর্তনের বেলায় গুণী রূপান্তরিত হন পরম ভাগবতে।’’ স্বরলিপি মেনে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়া এবং স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার পন্থা নিয়ে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে দিলীপকুমারের বিরোধ সর্বজনবিদিত। শেষ জীবনে দিলীপ যদিও মেনে নেন ভুল তাঁরই ছিল। প্রকাশ্যে তিনি কোনও দিন রবীন্দ্রগান করেননি, হয়তো গায়নের স্বাধীনতা পাননি বলেই। তিনি অতুলপ্রসাদ, নজরুলের গান গাওয়ায় মনোনিবেশ করেন।

হিমাংশু দত্তের বহু গানের তিনিই প্রথম গায়ক। আশ্রমজীবনে কবি নিশিকান্তকে দিয়ে গান লিখিয়ে তাতে সুর করে বাংলা গানে অন্য এক স্পন্দন তৈরি করেন। দ্বিজেন্দ্রলাল ও অতুলপ্রসাদের বেশির ভাগ গানের স্বরলিপি দিলীপেরই করা। ১৯২২ সালে বিদেশ থেকে ফিরে তিনি গোটা ভারত পরিক্রমা করেন সুরের সন্ধানে। সে ইতিহাস লিপিবদ্ধ ‘ভ্রাম্যমাণের দিনপঞ্জিকা’য়। ১৯৪৭ সালে হিন্দি সিনেমায় মধ্যযুগের মীরার ভজনে দিলীপকুমারের সুরে গেয়েছিলেন এমএস শুভলক্ষ্মী। পল্লবিত হল এক নতুন কুঁড়ি।

স্বয়ং শুভলক্ষ্মী তাঁর গুরুদেবের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে লিখেছেন— ‘‘গান করেন... তা হল এক স্বতন্ত্র আত্মার আবেদন বিশ্ব আত্মায় বিলীন হবার জন্য।’’ তিনি এলাহাবাদে ছপ্পন ছুরি জানকী বাইয়ের কাছেও গান শিখেছিলেন। এক আসরে জানকী বাইয়ের গানের পরে বাড়ির কর্তা তরুণ মন্টুকে গাইতে বললে ভ্রুভঙ্গি করে বাইসাহেবা বলেছিলেন— ‘‘অ্যাইসা?’’ অর্থাৎ বাঙালি ভদ্রলোকের ছেলে গান গায়, এটা বিশ্বাস করতে হবে? অতঃপর গান গাইলেন দিলীপ। জানকী বাইয়ের তেরছা ভ্রু সোজা হয়ে গেল। জানালেন শেখার আমন্ত্রণ।

শোনা যায়, দিলীপকুমারের কণ্ঠে অতুলপ্রসাদের ‘রূমক-ঝুমক-ঝুম’ গানটি শুনে মোতিবাই বলেছিলেন— আমিও আপনাকে শেখাতে পারি, যদি আপনি আমাকে এই গানটি শেখান। গানের বিষয়ে তাঁর উদার মন কোনও প্রথাগত ধ্যানধারণার তোয়াক্কা করেনি কোনও দিনই। তাই তো একজন উমা বসু, একজন ইন্দিরা দেবী, একজন সাহানা দেবীর সুর আমরা শুনতে পাই সে সময়ে, যখন কোনও ভদ্রবাড়ির মেয়েরা গান গাইছেন— এটা ভাবাই যেত না। নারীর ক্ষমতায়নের সোপান সেই কত যুগ আগেই রচনা হয়েছে। এমন মানুষের গানের অমূল্য সম্ভারকে আমরা আত্মস্থ করতে পারলাম না। বাঙালি আত্মবিস্মৃত জাতি, সন্দেহ নেই।

 একদিন পুদুচেরির আশ্রমে প্রবেশ করেছিলেন এক নারীর হাত ধরে। তিনি সাহানা দেবী। যোগসাধনায় আত্মমগ্ন হবেন বলে যিনি দিলীপকুমারকে গুরু মেনে, সব ছেড়ে আশ্রম জীবন কাটাতে এসেছিলেন তাঁর সঙ্গে। সাহানা দেবী শেষ দিন পর্যন্ত রয়ে গেলেন সেই আশ্রমেই। দিলীপকুমার আশ্রম ছেড়ে বেরিয়ে এলেন আর এক নারীর হাত ধরে, যিনি মীরাবাইয়ের প্রতিস্পর্ধীসম প্রতিফলিত হলেন কৃষ্ণপ্রেম নিয়ে। কৃষ্ণসাধনার শেষ স্তরে উন্নীত ইন্দিরা দেবীকে সঙ্গে নিয়ে দিলীপকুমার যাত্রা করলেন পুণেয়। সেখানে তাঁর অনুপ্রেরণায় গড়ে উঠল হরেকৃষ্ণ মন্দির। যেখানে শেষ দিন অবধি থেকেছেন তিনি।১৯৬৫ সালে তিনি সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমীর ফেলোশিপ সম্মানে সম্মানিত হন।  ১৯৮০ সালের ৬ জানুয়ারি দিলীপকুমার রায়ের মৃত্যু হয়৷