শান্তিপুরের বড় গোস্বামী বাড়ির দুর্গা পুজো

শান্তিপুরের বড় গোস্বামী বাড়ির দুর্গা পুজো

দেবী এখানে কাত্যায়নী রূপে পূজিত! নদিয়ার শান্তিপুরের বড় গোস্বামী বাড়ির পুজো শতাব্দী প্রাচীন। এখানে দেবী পূজিত হন কাত্যায়নী রূপে, কাত্যায়নী মূর্তির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এই মূর্তির দুটি হাত বড় এবং আটটি হাত ছোট। এ ছাড়াও গোস্বামী বাড়ির দুর্গা পুজোতে কার্তিক গণেশ এবং লক্ষ্মী-সরস্বতীর অবস্থান অন্যান্য মূর্তির থেকে আলাদা। এমনকি কার্তিকের পাশে বসানো হয় কলা বউ।

এ ছাড়াও নবমীর দিন সারা বিশ্ববাসীর কল্যাণের জন্য বাড়ির সমস্ত সদস্যরা একটি মন্ত্র উচ্চারণ করে থাকেন। এ ছাড়াও এই পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এই কাত্যায়নী দেবীর পুজোতে গোস্বামী বাড়ির নিজস্ব একটি প্রাচীন পুঁথিতেই দেবী পূজিত হন। বাইরের কোনও কেনা বই থেকে পুজো করা হয় না। জানা যায়, মথুরেশ গোস্বামীর আমল থেকেই এই পুজো শুরু হয়।

এখনো বংশ পরম্পরা পূজিত হয়ে আসছেন দেবী কাত্যায়নী। প্রায় সাড়ে তিনশো বছরের পুরনো এই পুজো। কী কারনে দেবী কাত্যায়নীর নামে পূজিত হন ? রয়েছে তার পিছনে ইতিহাস, কি সেই ইতিহাস?  জানা যায় প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে কৃষ্ণমূর্তি চুরি হয়ে যায়, তারপর বাড়ির মহিলারা দেবী কাত্যায়নীর ব্রত শুরু করেন। কথিত আছে, ব্রত শুরু করার পর উদ্ধার হয় চুরি যাওয়া কৃষ্ণমূর্তি।

এরপর থেকেই শুরু হয় দেবী কাত্যায়নীর আরাধনা। তারপর থেকেই প্রতিবছরই দেবী কাত্যায়নীর আরাধনা হয়ে আসছে এই বড় গোস্বামী বাড়িতে।  প্রাচীন মন্দিরের চিত্রতেই উঠে আসে প্রাচীনত্বের কথা, আজও বংশপরম্পরায় কোন দিকেই খামতি নেই দেবী কাত্যায়নীর আরাধনা। কর্মসূত্রে বড় গোস্বামী বাড়ির বেশকিছু বংশধর বাইরে থাকলেও দেবীর আরাধনার আগেই সবাই একত্রিত হয়ে ধুতি পাঞ্জাবি পড়ে ঢাকের তালে দেবীর আরাধনায় মেতে ওঠে বড় গোস্বামী বাড়ির বংশধরেরা। প্রতিমা নিরঞ্জনের আগে প্রথা অনুযায়ী অনেক নিয়ম আছে যা চলে আসছে প্রায় সাড়ে ৩০০ বছর ধরে সেই প্রথামেনেই দেবীর নিরঞ্জন যাত্রা শুরু হয় এখনও।