Durga Puja| হাওড়ার শ্রীমানী পরিবারের দেবী দুর্গা পূজিত হন হরগৌরী রুপে

বাংলার বনেদি বাড়ির পুজোর মধ্যে অন্যতম ( 103 years old) ১০৩ বছরের হাওড়া মাকড়দহ শ্রীমানী পরিবারের দুর্গা পুজো (Durga Puja )। তবে ( Shrimani Family in Howrah ) শ্রীমানী পরিবারে দেবী দুর্গা দশভূজার বদলে পূজিত হন হরগৌরী রুপে । ১৯১৮ সালে বাড়ীর দালানে দেখতে পান ঠাকুর হরগৌরীর কাঠামো । ঠাকুরের আদেশ ভেবে তারপর থেকেই শুরু হয় দেবী দুর্গার আরাধনা ।
প্রসঙ্গত, হাওড়া মাকড়দহ অঞ্চলে বসবাস ছিল তত্কালীন সময়ে শর্করা ও ঘিয়ের ব্যবসাদার কেদারনাথ শ্রীমানী ও তার দুই পুত্র বিশ্বনাথ ও হরিপদের । আজ থেকে একশ তিন বছর আগে অর্থাত্ ১৯১৮ সালের এক ভোরে বিশ্বনাথ শ্রীমানীর স্ত্রী (বড় মা) সকালে বাড়ীর দালানে জল সরাতে গেলে দেখতে পান ঠাকুর হরগৌরীর কাঠামো । ঠাকুরের আদেশ ভেবে তারপর থেকেই শুরু হয় দেবী দুর্গার আরাধনা ।
তবে দেবী দুর্গা এখানে দশোভূজা নয় । তাঁকে আরাধনা করা হয় হরগৌরী রূপে । মা দুর্গা প্রতিবছর তার স্বামী শংকর মহাদেব ও তার চার সন্তান লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক, ও সরস্বতীকে নিয়ে পূজিত হন এই শ্রীমানী পরিবারে । তাদের পুজোয় কোনও বলির প্রথা নেই । দেবীকে তখনকার দিনে এক মণ চালের নৈবেদ্য দেওয়া হতো ও একই সঙ্গে নারকেলের তৈরী সমস্ত মিষ্টান্ন পূজার প্রসাদ হিসেবে প্রদান করা হতো দেবী সন্মুখে ।
তাছাড়া থাকতো বিভিন্ন ধরনের ফল । দূরদূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ আসতেন এই পুজোয় অংশ নিতে । পুজোর চার দিন থাকতো বাড়িতে সকলের জন্য ভোজের আয়োজন । প্রতিবছর জন্মাষ্টমীর দিন প্রথা অনুসারে কাঠামো পুজো করে শুরু হতো হরগৌরী প্রতিমা নির্মাণের কাজ । তবে করোনাকালে এ বছর আর বাড়ীর দালানে তৈরি হচ্ছে না প্রতিমা । তা আনা হবে কুমোরটুলি থেকে ।
তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গিয়েছে পুরনো দিনের সেই পুজোর আয়োজন । পরিবারের অধিকাংশ লোকেরাই কর্মসূত্রে এখন রয়েছেন বিদেশে । তবে ষষ্ঠীর দিন সকালেই চলে আসেন হাওড়া মাকড়দহের বাড়িতে । চার-পাঁচটা দিন কিভাবে যে কেটে যায় তা কেউ বুঝতেই পারেন না । আর বিসর্জনের সময় এখনো পর্যন্ত দেবীকে নিয়ে যাওয়া হয় মানুষের কাঁধে করে ।
সেই সময় মাকে সিঁদুর দান করার জন্য মাকড়দহ মাকড়চন্ডী মন্দিরে প্রতীক্ষা করেন হাজারো মানুষ । তাই একশো তিন বছরেও পুজোর আয়োজনে আগের মতন সেই এলাহি ব্যবস্থা না থাকলেও, আগেকার সেই ঐতিহ্য এখনো বজায় রেখেছে হাওড়া মাকড়দহ শ্রীমানী পরিবার ।