বৌমার সম্ভ্রম বাঁচাতে গিয়ে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী দের হামলায় মৃত্যু হল বৃদ্ধ শ্বশুরের

রাজ্যে লাগাতার নারী নির্যাতনের খবর প্রকাশ্যে এসেছে। কখনও কোন্নগর, কখনও হাসঁখালি, কখনও পিংলা, কখনও রায়গঞ্জ বা কখনও মালদা। উত্তর থেকে দক্ষিণ একই পরিস্থিতি ধরা পড়েছে বারংবার। কয়েকদিন আগেই জলপাইগুড়িতে নাবালিকা (Minor Harassment) ধর্ষণে নাম জড়িয়েছিল তৃণমূল কর্মী। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের নারী নির্যাতনের খবর।
গৃহবধূর সম্ভ্রম বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত খোদ শ্বশুর। পরে মৃত্যু হয় তাঁর। গোটা ঘটনায় খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয় পরিবারের তরফে। জলপাইগুড়ির ঘটনা। সূত্রপাত, ১৪ এপ্রিল। নিজের বাড়িতেই রান্নার কাজে ব্যস্ত ছিলেন গৃহবধূ।অভিযোগ, সেই সময় আচমকাই তাঁর বাড়িতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঢোকে এক দুষ্কৃতী। জানা গিয়েছে, সে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী।
ঘরে ঢুকে প্রথমে মহিলার উদ্দেশে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। অভিযোগ, এরপর ছুরি দেখিয়ে গৃহবধূকে সে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। পরণে থাকা পোশাকও ছিঁড়ে দেয় বলে জানা গিয়েছে। সেই সময় বাড়িতেই ছিলেন নির্যাতিতার বছর সত্তোরের শ্বশুর। মহিলার চিত্কার শুনে তিনি সেখানে এসে উপস্থিত হন। রুখে দাঁড়ান।
বৌমার সম্ভ্রম বাঁচাতে গেলে অভিযোগ ওই দুষ্কৃতী বৃদ্ধের মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে।শুধু তাই নয়, লাগাতার মারতে থাকে বৃদ্ধকে। পরে তিনি মাটিতে পরে গেলে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখেই পালিয়ে যায় অভিযুক্ত। যাওয়ার সময় মহিলাকে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দিয়ে যায়। এরপর মারাত্মক জখম অবস্থায় বৃদ্ধকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁর চিকিত্সা শুরু হয়।
পরে ঘটনার বিবরণ জানিয়ে গত ১৪ এপ্রিল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা মহিলা। কিন্তু অভিযুক্ত এখনও গ্রেফতার হয়নি। পরে গত ২০ এপ্রিল বৃদ্ধকে উন্নত চিকিত্সার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে নিয়ে গেলে চিকিত্সকরা রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে বাড়িতেই নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর শুক্রবার ভোর নাগাদ মৃত্যু হয় নির্যাতিতার শ্বশুরের।
ঘটনায় মৃতের গতকাল ফের জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, ওই দিন তাঁর বাবাকে লোহার রড দিয়ে মেরেছিল অভিযুক্ত দুষ্কৃতী। তার জেরেই তাঁর বাবার মৃত্যু হয়েছে।” অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দেহের ময়নাতদন্ত হবে বলে জানা গিয়েছে।এই ঘটনায় জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেন, “আগে একটি মারপিটের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। তার তদন্ত শুরু হয়েছে। আজ ফের আরও একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।’