অত্যধিক জল তেষ্টা পাচ্ছে হতে পারে কোনো মারন রোগ

অত্যধিক জল তেষ্টা পাচ্ছে হতে পারে কোনো মারন রোগ

চিকিৎসকদের মতে, বারবার গলা শুকিয়ে যাওয়া বিভিন্ন বড় রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। যেমন ডিহাইড্রেশন। শরীরে যখন জলের মাত্রা কমে যায় তখনই গলা শুকোতে থাকে। চিকিৎসা শাস্ত্রে অতিরিক্ত তৃষ্ণার কারণকে বলা হয় 'পলডিপ্সিয়া'। এই অবস্থায় কোনও ব্যক্তি অতিরিক্ত জল পান করেন যার কারণে শরীরে সোডিয়ামের ঘাটতি হতে পারে। বমি বমি ভাব বা বমির মতো লক্ষণও দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া অতিরিক্ত প্রস্রাবের সমস্যার মুখোমুখি হতেও পারেন। তবে কিছু রোগ রয়েছে যার মধ্যে পলিডিপ্সিয়া অর্থাৎ অতিরিক্ত তৃষ্ণা হওয়াই প্রধান লক্ষণ। দেখে নিন সেগুলি কী কী-

ডায়াবেটিস :  দেহের কোষগুলি যখন ইনসুলিন প্রতিরোধী হয়ে ওঠে, তখন রক্ত থেকে অতিরিক্ত শর্করা অপসারণের জন্য, কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়। যার ফলে ঘন ঘন প্রস্রাবের মাধ্যমে, শরীর থেকে অতিরিক্ত পরিমাণ জল বেরিয়ে যায়। ফলস্বরূপ, গলা শুকিয়ে যাওয়া এবং অতিরিক্ত তৃষ্ণার অনুভূতি হয়। ঘন ঘন প্রস্রাব এবং বারে বারে জল পিপাসা পাওয়া হল ডায়াবেটিসের দু'টি প্রাথমিক লক্ষণ।

নার্ভাসনেস : সাধারণ অর্থে, হার্টবিট বৃদ্ধি, অস্থিরতা এবং নার্ভাসনেস অনুভূতিকে চিকিত্সা শাস্ত্রে উদ্বেগ বলে। এমন পরিস্থিতিতে মুখটিও শুষ্ক হয়ে যায়, যার কারণে ব্যক্তি বেশি পরিমাণে জল পান করেন। এ জাতীয় পরিস্থিতিতে কিছু এনজাইম মুখে লালা তৈরির পরিমাণও হ্রাস করে, যার ফলে আরও তেষ্টা বাড়তে পারে।

গর্ভাবস্থা : গর্ভাবস্থার বিভিন্ন উপসর্গগুলির মধ্যে অন্যতম হল, বারে বারে গলা শুকিয়ে যাওয়া বা অতিরিক্ত তৃষ্ণা বোধ হওয়া। প্রথম তিন মাসে শরীরে রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, যা কিডনির উপর দারুণ প্রভাব ফেলে। কিডনি থেকে অতিরিক্ত জল নির্গত হওয়ায় বারে বারে প্রস্রাব হয়। তাই শরীরে জলের পরিমাণ হ্রাস পায়, যা তৃষ্ণার অনুভূতিকে বাড়িয়ে তোলে।

বদহজম : ডিহাইড্রেশন বা বদহজম যেমন এর অন্যতম কারণ। শরীরে যখন জলের মাত্রা কমে যায় তখনই গলা শুকোতে থাকে। শিশুদের ক্ষেত্রে ডিহাইড্রেশন কিন্তু মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হতে পারে। বেশি ঘাম হওয়া, পেট খারাপ ইত্যাদির জেরেও ডিহাইড্রেশন হতে পারে। তবে হজমের সমস্যা ছাড়াও বেশ কিছু অসুখের কারণেও ঘুমের মধ্যে গলা শুকোয়। এখনই সাবধান হোন সে সব সম্পর্কে।

অ্যানিমিয়া : শরীরে লাল রক্ত কণিকার অভাবে, পর্যাপ্ত পরিমাণ হিমোগ্লোবিন তৈরি হয় না। ফলে রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া দেখা দিতে পারে। ডিহাইড্রেশন অ্যানিমিয়ার একটি সাধারণ লক্ষণ। শরীরে মারাত্মকভাবে রক্তাল্পতা দেখা দিলে এই লক্ষণটি আরও প্রবল হয়। ফলে মাথা ঘোরা, ক্লান্তি ভাব, অতিরিক্ত ঘাম হওয়া এবং বারে বারে গলা শুকিয়ে যাওয়ার মতো বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।এই রোগগুলি ছাড়াও আরও কয়েকটি প্রাথমিক কারণে রাতে গলা শুকনোর প্রবণতা দেখা যায়। অতিরিক্ত তেল-মশলা যুক্ত খাবার খেলে বার বার গলা শুকোয়। সর্দি হলে বা নাক বন্ধ থাকলে মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। ফলে সহজেই মুখের ভিতর শুকিয়ে যায়। এ ছাড়া অতিরিক্ত মদ্যপান যারা করেন তাদেরও বেশি মাত্রায় জল তেষ্টা পায়। অ্যালকোহল শরীরকে শুষ্ক করে তোলে ও জলের চাহিদা তৈরি করে।