সীমান্তবর্তী মুর্শিদাবাদ এলাকায় মগজধোলাই দেয় চার কাশ্মীরি জঙ্গি

সীমান্তবর্তী মুর্শিদাবাদ এলাকায় মগজধোলাই দেয় চার কাশ্মীরি জঙ্গি

বাংলাদেশি জঙ্গিদের ‘টার্গেট’ এবার ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) যুবকরা। ঝাড়খণ্ড ও মুর্শিদাবাদের সীমান্তে নতুন করে ‘ভাসাইপাইকর মডিউল’ (Bhasaipaikar Module) তৈরির চেষ্টা করছে জঙ্গি সংগঠন জামাত উল মুজিহিদিন (জেএমবি)। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের কাছে এসেছে এই তথ্য।  গোয়েন্দারা জেনেছেন, কয়েকজন যুবককে দুই রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকায় মগজধোলাই দেয় চার কাশ্মীরি ‘জঙ্গি’।

ওই কাশ্মীরি যুবকরা লস্কর-ই-তৈবা অথবা জইশ-ই-মহম্মদের মতো জঙ্গি সংগঠনের সদস্য, এমন সম্ভাবনাও রয়েছে। এমনকী, ঝাড়খণ্ড, মালদহ বা মুর্শিদাবাদ থেকে কাশ্মীরে নিয়ে গিয়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণের ছকও কষা হচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে জেএমবির সঙ্গে এই দুই পাক সংগঠনের সম্পর্কও খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের তথ্য অনুযায়ী, ফের নিজেদের সংগঠনকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করছে জেএমবি (JMB)।

গত এক মাসের মধ্যেই জেএমবি জঙ্গি সংগঠনের অন্তত ১২ জন সদস্য চোরাপথে বাংলাদেশের সীমান্ত পেরিয়ে প্রবেশ করেছে এই রাজ্যে। এই জঙ্গিদের মধ্যে একটি অংশ পৌঁছেছে অসমে। বাকি অংশটি গিয়েছে কর্নাটকে। মূলত শ্রমিক পরিচয় দিয়ে ওই দু’টি রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছে তারা।  এর আগেও অসম ও কর্নাটকে ঘাঁটি তৈরি করেছিল এই সংগঠনের জঙ্গিরা। ওই দুই রাজ্য থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বোমারু মিজান ওরফে কওসর-সহ জেএমবির বেশ কয়েকজন মাথাকে।

এদিকে, ওই দু’টি রাজ্যের সঙ্গে সঙ্গে জেএমবি এবার ঝাড়খণ্ডকেও ‘টার্গেট’ করেছে বলে সন্দেহ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। তাঁদের কাছে খবর, মুর্শিদাবাদের সীমান্ত দিয়ে জেএমবির আরও কয়েকজন নেতা অনুপ্রবেশ করে। এবার তারা বেছে নেয় মুর্শিদাবাদের উত্তরপ্রান্তে ‘ভাসাইপাইকর’ এমন একটি জায়গা, যার কাছেই ঝাড়খণ্ড। আবার মালদহেরও সীমান্তবর্তী এলাকায় এই জায়গাটি। বাংলাদেশ সীমান্ত থেকেও জায়গাটি কয়েক কিলোমিটার মাত্র। ওই জায়গাটিতেই এসে জেএমবি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কাশ্মীরের চার জঙ্গি।

তার আগে থেকেই জেএমবির স্লিপার সেলের সদস্যরা ঝাড়খণ্ড, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, পুরুলিয়ার কয়েকজন যুবকের মগজধোলাই করে। যদিও জেএমবির এখন মূল টার্গেট সেই যুবকরা, যাঁরা হিন্দিতে কথা বলায় পারদর্শী। সেই কারণেই জেএমবি নেতারা তাঁদের স্লিপার সেলের সদস্যদের মাধ্যমে মুর্শিদাবাদ ও ঝাড়খণ্ডের সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি মাঠে ওই যুবকদের ডেকে পাঠায়।

ওই মাঠেই যুবকদের মগজধোলাই হয়। সেখানে জেএমবির নেতাদের সঙ্গে সঙ্গে কাশ্মীর থেকে আসা ওই চার সন্দেহভাজন জঙ্গিও যুবকদের মগজধোলাই করে বলে জানা গিয়েছে।   মগজধোলাই করার পর যুবকদের মধ্যে কয়েকজনকে বেছে নিয়ে কাশ্মীরে প্রশিক্ষণের জন্যও পাঠানো হতে পারে বলে খবর। পরবর্তীকালে ওই যুবকদের দিয়ে দেশের কোথাও নাশকতার চেষ্টা হতে পারে, এমন সম্ভাবনাও রয়েছে। এদিকে, গোয়েন্দাদের মতে, মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে জেএমবি একটি মডিউল তৈরি করার চেষ্টা করেছিল।

কিন্তু কলকাতা পুলিশের এসটিএফ ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ (NIA) ওই মডিউল গুঁড়িয়ে দেয়। এরপরও বিভিন্ন সময় মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছিল জেএমবি। এবার ফের নতুন করে মুর্শিদাবাদ, মালদহ ও ঝাড়খণ্ডের সীমান্তবর্তী এলাকায় ‘ভাসাইপাইকর মডিউল’ বানানোর চেষ্টা করে তারা। যদিও এই মডিউল তৈরির ছক ভেস্তে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।