টেক্সাসের গ্রেটার অস্টিন বঙ্গবাসীর প্রবাসে দূর্গা পুজো

টেক্সাসের গ্রেটার অস্টিন বঙ্গবাসীর প্রবাসে দূর্গা পুজো

ঝলসানো রোদ নরম হতে শুরু করেছে। বিকেলের চুঁইয়ে পড়া বাসন্তী রোদের সঙ্গে শিরশিরে এক অনূভুতি নস্টালজিক করে তোলে। আমার শহর কলকাতা (Kolkata) নিশ্চয় এখন অপরূপা সাজের আয়োজন করে চলেছে। ঘরে ঘরে নতুন জামার ঘ্রান, পাড়ায় পাড়ায় বৈঠকি মজলিশে চায়ের ধোঁয়া ওঠা কাপের সঙ্গে নিশ্চই আলোচনা চলছে 'মা (Ma Durga) কি এ বারে নৌকায় নাকি ঘোড়ায় চেপে আসছেন?

পুজোর (Durga Puja 2021) ক'টা দিন কি বৃষ্টি হবে?' করোনা অতিমারীতে বিপর্যস্ত দৈনন্দিন জীবন আর মৃত্যু মিছিলের মধ্যে এই পুজো নিয়ে আলোচনাও যেন একটা এক টুকরো খোলা আকাশের নিচে শিশির ভেজা শিউলির সুবাসের মতো। পুজো (Durga Puja 2021) আসছে। মা আসছে। কিন্তু সাত সমুদ্র তেরো নদীর পারে থেকে পাওয়া যায় না পুজোর সেই উত্তেজনা-মাখা 'ম্যাজিক'।

এখানে ষষ্ঠীর সকালে পাটভাঙা নতুন শাড়ীর গন্ধ নেই, পাড়ার প্যান্ডেলে বসে আড্ডা নেই, রাস্তার পাশে বসা এগরোলের দোকানের উপচে পড়া ভিড় নেই। কিন্তু এত নেই যেখানে ভিড় করে, সেখানে রয়েছে আমাদের আবেগ আর ঐতিহ্যর প্রতি ভালোবাসা| এই অনুভূতির ওপর ভর করেই ২০১৭ সালে একটি ননপ্রফিট সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয় 'গ্রেটার অস্টিন বঙ্গবাসী' (Greater Austin BongoBasi)।

নিজেদের সংস্কৃতিকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে বাঁচিয়ে রাখার জন্য, সুদূর দেশের সঙ্গে অন্তরের যোগস্থাপনের জন্য তৈরী এই সংস্থা। প্রতি বছর পুজোর সময় কোনও এক সপ্তাহান্তে হইহই করে দু'দিনব্যাপী পুজো আয়োজন হয়।  মা-য়ের মণ্ডপ সাজানো থেকে পুজো, অঞ্জলি, ভোগের ব্যবস্থা, সাংস্কৃতিক আনুস্থান, সিঁদুরখেলা সমস্তই দু'দিন ধরে আয়োজন ও উপভোগ করি সকলে মিলে।

আমাদের এই তুমুল ব্যস্ত রোজনামচার মধ্যেও সময় করে সাংস্কৃতিক আনুস্থানের (Cultural Program) মহড়া, মণ্ডপসজ্জার প্রস্তুতি, বিভিন্ন জায়গা থেকে ফুল, বেলপাতা, তুলসী, দুর্বার ব্যবস্থা করা হয়। সংস্থার সঙ্গে যুক্ত পরিবারের বড়দের ও খুদেদের অনুষ্ঠানের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠিত কোনও শিল্পীর উপস্থিতি দিয়ে আমাদের পুজোর সন্ধ্যে জমজমাট করে তোলে।

পুজো (Durga Puja 2021) শেষে মায়ের বিসর্জন হয় না (এ দেশে সেরকরম বাবস্থা নেয়)। তাই তাঁকে পরম যত্নে নির্দিষ্ট একটি storage-এ রেখে আসা হয়। শুধু পুজোই নয়, প্রতিবছর আমাদের সংস্থার তরফ থেকে বিভিন্ন রকম সাহায্য দেশে ও অস্টিনের বিভিন্ন সংস্থায় পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পুজোর দু'দিন ভোগের খিচুড়ি, বেগুনি, চাটনি থেকে শুরু করে মটন কষা, পোলাও সবের ব্যবস্থা করা হয় ভোজনরসিকদের রসনা তৃপ্তির জন্য।