জ্ঞানবাপী মসজিদে শিবলিঙ্গ! ভিডিয়ো তুলে সিল করার নির্দেশ আদালতের

জ্ঞানবাপী মসজিদে শিবলিঙ্গ!  ভিডিয়ো তুলে সিল করার নির্দেশ আদালতের

জ্ঞানবাপী মসজিদের (Gyanvapi Mosque) জলাশয়ে শিবলিঙ্গ রয়েছে! তিনদিনের ভিডিওগ্রাফির পর আদালতে এমনটাই দাবি করলেন এক আইনজীবী। যে জলাশয়ে শিবলিঙ্গ রয়েছে, সেটিক আপাতত সিল করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে উত্তরপ্রদেশের আদালত। আপাতত সেখানে ঢুকতে পারবেন না কেউ। ব্যবহার করতে পারবেন না ওই অংশটি। এদিকে নির্ধারিত সময়ের আগেই বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ মন্দির লাগোয়া জ্ঞানবাপী মসজিদে ভিডিয়োর মাধ্যমে সমীক্ষার কাজ শেষ হল।

প্রসঙ্গত, কাশী বা বারাণসীর বিখ্যাত বিশ্বনাথ মন্দিরের গায়েই রয়েছে জ্ঞানবাপী মসজিদ। ঐতিহাসিকদের একাংশের মতে, একাধিকবার বিদেশি হানাদারদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় মন্দিরটি। ১৬৬৯ সালে মূল মন্দিরটি দখল করে জ্ঞানবাপী মসজিদ তৈরি করেন মুঘল বাদশাহ ঔরঙ্গজেব। এখনও মসজিদের দেওয়ালে হিন্দু দেবদেবীর ছবি দেখা যায়। অষ্টাদশ শতকে হিন্দুদের আবেগকে মান্যতা দিয়ে মসজিদের কাছেই আজকের বিশ্বনাথ মন্দিরটি তৈরি করেন মারাঠা রাজ্য মালওয়ার রানি অহল্যাবাই হোলকর।

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানি শুরু হবে। উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে প্রায় আড়াই দিন ধরে চলা এই সমীক্ষার গোটাটাই শান্তিপূর্ণ ছিল। সংবাদমাধ্যমে এ কথা জানিয়েছেন সরকারি আইনজীবী মহেন্দ্র প্রসাদ। মসজিদের অন্দরের জলাশয়ে যেখানে ইসলাম ধর্মালম্বীরা ওজু করতেন, সেখানে একটি শিবলিঙ্গ রয়েছ। এদিন সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে শেষদিনের ভিডিওগ্রাফি শুরু হয়। জলাশয়ের ভিডিওগ্রাফির জন্য সমস্ত জল বের করে দেওয়া হয়। তখনই শিবলিঙ্গের উপস্থিতি ধরা পড়ে বলে দাবি।

সেই তথ্য আদালতে জানান আইনজীবী বিষ্ণু জৈন। এর পরই ওই জলাশয়টি সিল করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। আরেক আইনজীবী মদন মোহন এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তিনি শিবলিঙ্গটির উচ্চতা ১২ ফুট, ব্যাস ৮ ইঞ্চি।  এর পরই আদালতের তরফে বারাণসীর জেলাশাসক কৌশলরাজ শর্মাকে জলাশয়টিকে সিল করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

আপাতত যাতে জলাশয়টি কেউ ব্যবহার করতে না পারেন, তার দিকে নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে মা শৃঙ্গার গৌরীস্থলে পুজো করার আবেদন জানিয়েছিলেন পাঁচজন মহিলা। গত একবছর ধরেই ওই অঞ্চলটি খুলে দেওয়া হয়েছে প্রার্থনা করার জন্য। কিন্তু ওই মহিলাদের আবেদন ছিল, তাঁরা চান ওই পুরনো মন্দির চত্বরের অন্যান্য দেববিগ্রহের সামনেও প্রার্থনা করতে।

গত এপ্রিলে এই বিষয়ে একটি তদন্তের নির্দেশ দেয় বারাণসী আদালত। কয়েকদিন আগেই মসজিদের ভিতরে শুরু হয়েছিল ভিডিও সার্ভে। কিন্তু এই ভিডিও সার্ভেতে আপত্তি তোলেন মসজিদ কমিটির সদস্য ও তাদের আইনজীবীরা। তাঁরা জানান, মসজিদের মধ্যে কোনও রকম ভিডিওগ্রাফি করা যাবে না। কিন্তু পিটিশন দাখিলকারীদের আইনজীবীরা বলেন, তাঁরা যা করছেন আদালতের নির্দেশ মেনেই।সুপ্রিম কোর্টে যায় মসজিদ কমিটি। তাদের সেই আবেদনের শুনানি মঙ্গলবার।