কাবুল বিমান বন্দরে ভাগ্যের জোরে রক্ষা ১৬০ জন হিন্দু ও শিখ

যত সময় গড়াচ্ছে, তত বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। বৃহস্পতিবার প্রথমে শোনা গিয়েছিল, কাবুল বিমান বন্দরে দু'টি বিস্ফোরণে অন্তত ১৩ জন মারা গিয়েছেন। কয়েক ঘণ্টা পরেই জানা যায়, মৃতের সংখ্যা ৪০। আমেরিকার ধারণা, আগামী দিনে ফের বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। এদিনের বিস্ফোরণে কয়েকজন মার্কিন নাগরিক মারা গিয়েছেন। বিমান বন্দরের এক তালিবান রক্ষীও আছেন মৃতদের মধ্যে। এরি মধ্যে জানা যায়, বুধবার রাতে কাবুল বিমান বন্দরে জড়ো হয়েছিলেন ১৬০ জন শিখ ও হিন্দু আফগান নাগরিক।
ভারতে আসাই তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল। কোনও কারণে তাঁরা বিমানে উঠতে পারেননি। বিমান বন্দরে অপেক্ষা না করে তাঁরা নিকটবর্তী এক গুরুদোয়ারায় আশ্রয় নেন। তার কয়েক ঘণ্টা পরেই জোড়া বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কাবুল বিমান বন্দরের আশপাশ। ওই ১৪৫ জন শিখ ও ১৫ জন হিন্দু এখন ভাগ্যকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, বৃহস্পতিবার না হয়ে যদি বুধবার বিস্ফোরণ হত, তাহলে নিশ্চিতভাবেই মৃত্যু ঘটত তাঁদের। পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, একটি বিস্ফোরণ ঘটেছে কাবুল বিমান বন্দরের অ্যাবে গেটের কাছে। অপরটি ঘটেছে ব্যারন হোটেলের আছে।
বিমান ওঠার আগে সেখানে মার্কিন নাগরিকরা জড়ো হয়েছিলেন। পেন্টাগনের মুখপাত্র টুইট করে বলেন, 'অ্যাবে গেটের কাছে বিস্ফোরণে কয়েকজন মার্কিন ও আফগান নাগরিক মারা গিয়েছেন।' প্রথম বিস্ফোরণ হওয়ার পরে কাবুলে ফ্রান্সের দূত সম্ভাব্য দ্বিতীয় বিস্ফোরণ সম্পর্কে সতর্ক করে দেন। ফরাসি দূত ডেভিড মার্টিনন টুইট করে বলেন, 'আফগান বন্ধুদের উদ্দেশে বলছি, আপনারা যদি বিমান বন্দরের গেটের কাছে থাকেন, অবিলম্বে সরে আসুন। কোনও নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিন।
কারণ যে কোনও সময় আর একটি বিস্ফোরণ হতে পারে।' আফগান রিপোর্টার বিলাল সারওয়ারি বলেন, স্থানীয় মানুষ জানিয়েছেন, এক আত্মঘাতী বোমারু ভিড়ের মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটায়। তারপরে আর একজন গুলি চালাতে থাকে। বিস্ফোরণে ও গুলিতে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। বিস্ফোরণের জন্য দায়ী করা হচ্ছে আইসিসকে। আফগানিস্তানে তালিবানের অন্যতম শত্রু হল ইসলামিক স্টেট খোরাসান। কয়েকদিন আগে তালিবানের এক মুখপাত্র বলেন, আমাদের রক্ষীরা জীবন বিপন্ন করে বিমান বন্দর পাহারা দিচ্ছে।
যে কোনও সময় আইসিস তাদের আক্রমণ করতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ওই বিস্ফোরণ সম্পর্কে জানানো হয়েছে। তিনি নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এর মধ্যে মার্কিন কংগ্রেসের একদল সদস্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চিঠি দিয়ে বলেছেন, তালিবান যেন পাকিস্তানের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে না পারে। কারণ সেক্ষেত্রে পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র যেতে পারে তালিবানের হাতে।
পাকিস্তানের ওপরে তালিবানের প্রভাব বাড়ছে কিনা, সেদিকে কড়া নজর রাখতে হবে আমেরিকাকে। মার্কিন কংগ্রেসের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ ও সেনেটের ৬৮ জন সদস্য চিঠি দিয়ে বাইডেনের কাছে জানতে চেয়েছেন, আফগানিস্তান নিয়ে বাইডেনের পরবর্তী পরিকল্পনা কী। বাইডেনকে সরাসরি প্রশ্ন করা হয়েছে, তালিবান যদি আফগানিস্তানের সীমান্তে সেনা সমাবেশ ঘটায়, তাহলে আমেরিকা কী করবে? পাকিস্তানকে অস্থিতিশীলতা থেকে রক্ষা করার জন্য কী করবেন বাইডেন?