মরতে রাজি, দুর্নীতি দেখলে চুপ থাকব না: বিচারপতি অভিজিত্‍ গাঙ্গুলি

মরতে রাজি, দুর্নীতি দেখলে চুপ থাকব না: বিচারপতি অভিজিত্‍ গাঙ্গুলি

"আপনার হয়তো রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা থাকতে পারে। কিন্তু দুর্নীতি দেখলে আদালত চুপ থাকবে না। আমি খুব দুঃখিত। যে দুর্নীতি করবে, যে রাজনৈতিক দলের হোক, ছেড়ে দেওয়া হবে না। আমার মাথায় বন্দুক ধরতে পারেন। মরতে রাজি। কিন্তু দুর্নীতি দেখে চুপ থাকবে না আদালত। এত শত্রুতা কীসের! ভেবে দেখুন আপনারা। কেউ থাকবে না। কেউ কাউকে মনে রাখবে না।

মৃত্যুর পর কে মনে রাখবে? যারা দুর্নীতি করছে তাদের সঙ্গে শুধু শত্রুতাই থাকতে পারে। সারা দেশে দুর্নীতিতে ভরে গিয়েছে, শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়। কোনও আমলেই দুর্নীতির শেষ নেই। কিন্তু লড়াই তো চালাতে হবে।" তাঁর এজলাস বয়কটের ঘটনায় সাফ বললেন বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারের পর বুধবারও কলকাতা হাইকোর্টে বাগবিতণ্ডায় জড়ান তৃণমূলপন্থী ও বিজেপিপন্থী আইনজীবীরা।

বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়ের ১৭ নম্বর এজলাসে সামনে গন্ডগোলে জড়ান আইনজীবীরা। প্রায় হাতাহাতির পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এজলাসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। গন্ডগোলের মধ্যে পড়ে অসুস্থ বোধ করতে থাকেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। এহেন পরিস্থিতিতে সবাইকে শান্ত থাকার আবেদন জানান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়।

বিক্ষোভকারী আইনজীবীদের কাছে সরাসরি জানতে চান, "আমার আদালত নিয়ে আপনাদের সমস্যা কোথায়?" জবাবে তৃণমূল পক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেন, "আদালত নিয়ে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। বার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোর্টের কাজ হবে না। আমরা সেটার পক্ষে।" যার বিরোধিতা করেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।

তিনি বলেন, "সুপ্রিম কোর্ট বলেছে এইভাবে কোর্টের কাজে বাধা দেওয়া যাবে না। কারও কোনও অভিযোগ থাকলে তাঁরা সুপ্রিমকোর্টকে বলতে পারেন। এইভাবে বাধা দেওয়া যায় না। এরপর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ও বলেন, "যাঁরা কাজ করবেন না, তাঁরা কোর্টরুম খালি করে দিন। এজলাসে থাকার অধিকার সবার আছে। কিন্তু বাধা দিলে চলবে না।"স্কুল সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি এবং নবম-দশম শ্রেণিতে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

এই তিন ক্ষেত্রে তিনি যত বারই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন, তত বারই সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। তা নিয়ে আগেই আপত্তি জানিয়েছিলেন তিনি। এমনকি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে এ নিয়ে নিজের অবস্থান জানিয়ে হস্তক্ষেপও চেয়েছিলেন তিনি।