কাবুলে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করল ইসলামিক স্টেট

কাবুলে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করল ইসলামিক স্টেট

তালিবানের দখল নেওয়া আফগানিস্তান থেকে যখন দেশ ছাড়ার লক্ষে কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দরে ভিড় করেছেন হাজার হাজার মানুষ, ঠিক তখনই জোড়া বিস্ফোরণ। হামলার পিছনে ইসলামিক স্টেট বা আইসিস জঙ্গিগোষ্ঠীর 'কমপ্লেক্স অ্যাটাক' বলেই প্রথম থেকে মনে করা হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় ভিড় উপচে পড়া বিমানবন্দরের গেটগুলিকে আটকে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায় আইসিস (ISIS on Kabul Airport Blast)।

জোড়া বিস্ফোরণের পরেও তৃতীয় বিস্ফোরণ হয়েছে বলে এক আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থার দাবি। সূত্রের খবর, এমন আরও বিস্ফোরণের আশঙ্কা রয়েছে। হামলার দায় নিয়েছে আইসিস জঙ্গিগোষ্ঠী। এই হামলার দায় স্বীকার করে আইএস বিবৃতি দিয়েছে বলে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়। বিবৃতিতে আইএস বলেছে, তাদের একজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সঙ্গে থাকা অনুবাদক এবং সহযোগীদের লক্ষ্য করে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।

এর আগে এই ঘটনার জন্য মার্কিন কর্তৃপক্ষও আইএসকে দায়ী করেছে। ২০১১ সালের পর আফগানিস্তানে এক ঘটনায় সর্বোচ্চ মার্কিন সেনা নিহতের ঘটনা ঘটল বৃহস্পতিবার। ওই বছর আগস্টে আফগানিস্তানে একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ৩০ জন মার্কিন সেনা নিহত হয়েছিলেন। বিমানবন্দরের দিকে যাওয়া এক ব্যক্তি রয়টার্সকে বলেন, ‘এক মুহূর্তের জন্য আমি ভাবলাম আমার কানের পর্দা ফেটে গেছে। শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলেছি। ঝড়ের মতো পলিথিনের ব্যাগগুলো উড়তে থাকে।

মানুষের লাশ এবং শরীরের অংশ বাতাসে ভাসতে দেখেছি। মৃতদেহ, শরীরের অঙ্গ, বৃদ্ধ এবং আহত নারী-পুরুষ ও শিশুদের ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখেছি।’ তালেবানের সঙ্গে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তির পর আফগানিস্তানে এই প্রথম মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটল। কাবুলের স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা অন্তত ৬০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। আহত শতাধিক। অন্তত ১২ জন মার্কিন সেনার মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। তালিকায় অসংখ্য আফগান নাগরিক।

বিমানবন্দরের বাইরে তৈরি করা নালায় একাধিক মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সারাটা এলাকা জুড়ে শুধু আতঙ্ক, চিত্‍কার, হাহাকার। রক্তে ভেসে যাচ্ছে গোটা এলাকা। হাত, পা টেনে শুকনো জায়গায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন পরিবার-পরিজনেরা। দাঁড়িয়ে রয়েছেন মৃতদেহের উপরেই। বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরে জোড়া বিস্ফোরণের পর এমনই সব ভয়াবহ ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে নেট দুনিয়ায়।