চাণক্য নীতি অনুসারে বড় হতে চাইলে অনুপ্রেরণা নিন মহাদেবের থেকে

প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে চাণক্যের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা। তিনি একজন বড় পন্ডিত, কূটনীতিবিদ ,দার্শনিক এবং অর্থনীতিবিদ ছিলেন। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে এমন অনেক গ্রন্থ আছে যেগুলো আজ পর্যন্ত মানুষকে সমানভাবে প্রভাবিত করে আসছে । তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘ চাণক্য-নীতি ‘- যা চাণক্যের লেখা শ্রেষ্ট গ্রন্থ। শুধু কেতাবি গবেষণার বিষয় নয় । চাণক্য-নীতি সত্যি মানুষের জীবনে আজও সমানভাবে কার্যকর ।
ভারতের মাটিতে যে সব মহান ব্যক্তি জন্ম নিয়েছেন তাদের মধ্যে চন্দ্রগুপ্ত বিক্রমাদিত্যের প্রধানমন্ত্রী চাণক্য (chanakya) প্রাতঃস্মরণীয়। এখনো পর্যন্ত তার মত একাধারে রাজনীতি, কূটনীতি, যুদ্ধ বিশারদ ও অর্থনীতিবিদ মানুষ ভারতের মাটিতে জন্ম নেয় নি। চন্দ্রগুপ্তের মহামন্ত্রী হলেও তিনিই ছিলেন সাম্রাজ্যের আসল চালিকাশক্তি। চন্দ্রগুপ্তের সিংহাসন আরোহন থেকে শুরু করে নির্বিঘ্নে রাজ্য শাসন সমস্তই তারই উর্বর মস্তিষ্কের ফসল।
ভারতীয় সাহিত্য ও লোকগাঁথায় চাণক্য এক কিংবদন্তি স্বরূপ। তিনি তার বিশাল জ্ঞান লিপিবদ্ধ করেছিলেন অর্থশাস্ত্র ও চাণক্য নীতি নামের দুটি গ্রন্থে। বস্তুত এই দুই গ্রন্থে চাণক্যের দেওয়া উপদেশাবলি যদি কেউ অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতে পারে তবে নাম, যশ, খ্যাতি ও সম্পদের চূড়ায় ওঠা সম্ভব। চাণক্যের মতে জীবনে বড় হতে গেলে আমাদের সকলকেই দেবাদিদেব মহাদেবের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে হবে।
চাণক্য বলেছেন একজন মূর্খ ব্যক্তির সাথে আমাদের জীবনে কখনোই বন্ধুত্ব করতে নেই। কারণ তারা সেই সমস্ত দু’পায়ে ভর দিয়ে চলা পশু, যারা তাদের কথার দ্বারা আমাদের অপদস্ত করে আমাদের মনে আঘাত করে। অল্প জ্ঞান অথবা কোনো জ্ঞান না থাকার কারণে তারা কখনোই তোমার ভাবনা চিন্তাকে সম্মান করতে পারবে না। তোমার বলা ভালো কথাকেও তারা ভুল মনে করে তোমায় অপমান করবে।
তাই কখনো তাদের উপদেশ দেওয়া উচিত নয় সেটা সময়ের অপচয় ছাড়া কিছুই হবে না । চাণক্য মনে করেন বন্ধুত্ব সর্বদা নিজের লেবেলের কারো সাথে করা উচিত যারা তোমার ভাবনা চিন্তাকে বুঝবে তোমায় উপরের দিকে নিয়ে যাবে।মহাদেবের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হ’ল তিনি সঙ্কটে আতঙ্কিত হন না এবং সংকটের মোকাবিলা করেন। সংকটের সময়ে, এই জাতীয় ব্যক্তি যে মানব কল্যাণ বজায় রেখে কাজ করে তারা জীবনে মহান মানুষ হিসাবে স্বীকৃতি পান।
শিবের মতই ত্যাগ করুন, যার ত্যাগের অনুভূতি রয়েছে সে না চাইলেও সকল প্রকার আনন্দ উপভোগ করে। ভগবান শিব যেমন বিশ্বকে বাঁচাতে নিজে বিষ খেয়েছিলেন, তেমনি মহান মানুষ মানব কল্যাণে নিজের সর্বস্ব ত্যাগ করতে পারেন। শিবের মতোই প্রত্যেক মানুষের বিশ্বের কল্যাণ নিয়ে চিন্তা করা উচিত। শিবের অন্য অর্থ কল্যাণও। জীবনে বড় হতে চাইলে নিজেকে মানব কল্যানে সর্বদা নিয়োজিত রাখুন ।