রহস্যময় পুরীর জগন্নাথ মন্দির | jagannath temple puri

রহস্যময় পুরীর জগন্নাথ মন্দির | jagannath temple puri

 উড়িষ্যা বলতেই প্রথম যার কথা মাথায় আসে তা হল পুরী, পুরী মানেই হল জগন্নাথ দেবের মন্দির। ঐতিহাসিক এই মন্দির ভারতের চারধামের মধ্যে অন্যতম। কথিত আছে বাকি তিন ধাম ভ্রমণ করে সব শেষে আসা উচিত এই পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে jagannath temple puri।পুরীর জগন্নাথ মন্দির বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের প্রসিদ্ধ হিন্দুমন্দির।

কথিত আছে, ভগবান বিষ্ণুর স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পবিত্র মন্দির স্থাপন করেছিলেন রাজা ইন্দ্রদুম। কোনও একদিন নদীতে স্নান করার সময় রাজা দেখতে পান, একটি লোহার রড 'ভাসছে'। ভগবান বিষ্ণু সেই সময় তাঁর কানে-কানে বলেন, লোহার রডটি তাঁর 'হৃদয়'। চমকে ওঠেন রাজা। লোহার রডটি নিয়ে সোজা চলে যান জগন্নাথ মন্দিরে। সেখানেই রেখে দেন। শোনা যায়, তার পর থেকে আর কাউকে কখনও সেই রডটি দেখতে বা স্পর্শ করতে দেননি রাজা। রয়েছে আরও অনেক জনশ্রুতি।

বলা হয়, পাণ্ডবরা যখন যাত্রা শুরু করেছিলেন, সেই সময় সপ্তঋষি 'মোক্ষ' লাভের জন্য তাঁদের 'চার ধাম' পরিদর্শন করতে বলেছিলেন। পুরীর জগন্নাথ মন্দির চার ধামগুলির মধ্যে অন্যতম। তার পর থেকেই জগন্নাথদেব দর্শনে রয়েছে সীমাবদ্ধতা। নির্দিষ্ট সময়েই মেলে সেই অনুমতি। জনশ্রুতি তো রয়েছেই। কিন্তু, জানেন কি পুরীর জগন্নাথ মন্দির ঘিরে রয়েছে এমন অনেক রহস্যজনক তথ্য যার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা মেলেনি(মানুষের বিশ্বাস)। মানুষ বিশ্বাস করেন, এই রহস্যগুলি হচ্ছে প্রভু জগন্নাথের আশীর্বাদ। এগুলি বিশ্বাস করার জন্য আপনাকে পরিদর্শন করতে হবে মন্দির। জেনে নিন সেই তথ্যগুলি.

মন্দিরের ধ্বজা:- পুরীর জগন্নাথ মন্দির সম্পর্কে সবচেয়ে আশ্চর্যজনক তথ্য হল মন্দিরের ধ্বজা। এই ধ্বজা সবসময় বাতাসের গতিপথের বিপরীত দিকে উড়তে থাকে।  এই ধ্বজা রোজ বদলানো হয়। যিনি এই ধ্বজা বদলান তিনি উল্টো দিকে উপরে ওঠেন। ভক্তরা বিশ্বাস করেন, বিজ্ঞানের থেকেও কিছু ক্ষমতাশালী শক্তি রয়েছে । যার জেরেই এমনটা সম্ভব।

মন্দিরের ভোগ রান্না:– জগন্নাথ মন্দিরে রোজ ২০০০–২০০০০ ভক্ত দর্শনে আসেন। কিন্তু, সরাবছর ধরে মন্দিরে একই পরিমাণ প্রসাদ রান্না করা হয়। তা সত্ত্বেও কখনও প্রসাদ নষ্ট হয় না। বা কোনও দিন কম পড়ে না।

 সুদর্শন চক্র:– মন্দিরের চূড়ায় অষ্টধাতু নির্মিত সুদর্শন চক্র রয়েছে। কিন্তু এই চক্র পুরীর যেকোনো স্থান থেকে দেখলেও সোজা মনে হবে। 

মন্দিরের উপরের আকাশ:– এই মন্দিরের উপর কোনও বিমান যায় না।কোনও পাখিকেও এর উপর দিয়ে উড়তে বা এর উপর বসতে দেখা যায় না। অদ্ভুত ব্যাপার হলো নো ফ্লাই জোন হিসেবে কোনো সরকার এই জায়গাটিকে নির্বাচন ও করেননি। 

সিংহদ্বার রহস্য:– মন্দিরের মূল প্রবেশপথ সিংহদরজা। সিংহদরজা দিয়ে প্রবেশ করার সময় তখন ঢেউয়ের আওয়াজ শুনতে পাবেন। কিন্তু, একবার সিংহদরজা অতিক্রম করার পর আবার ঘুরে পিছন ফিরে একই দিকে যখন যাবেন, আর ঢেউয়ের আওয়াজ শুনতে পাবেন না। 

মন্দিরের ছায়া:– আশ্চর্যের কথা হল, সূর্যরশ্মি থাকলেও দিনের কোনও সময়েই চারপাশে কোথাও মন্দিরের ছায়া পড়তে দেখা যায় না। 

মন্দিরের হাওয়া:- বিজ্ঞান বলে, সমুদ্রের ধারে সবসময় দিনের বেলায় হাওয়া সমুদ্র থেকে ভূমির দিকে ও সন্ধে নাগাদ ভূমি থেকে সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয়। কিন্তু জগন্নাথ মন্দিরের ক্ষেত্রে ঠিক এর উল্টোটাই ঘটে।করোনা আবহে এবার ও পালিত হবে পুরীর রথযাত্রা। তবে করোনা নিয়ম বিধি মেনে। ১২ জুলাই থেকে ২৫ শে জুলাই পর্যন্ত দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।