কালীপূজা পদ্ধতি

কালীপূজা Kali Puja বা শ্যামাপূজা হিন্দু দেবী কালীর পূজাকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত একটি হিন্দু উৎসব। প্রধানত বাঙালি হিন্দুদের মধ্যে এই উৎসব উপলক্ষে প্রবল উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষিত হয়। বাংলায় গৃহে বা মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত কালীপ্রতিমার নিত্যপূজা হয়ে থাকে। কার্ত্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে অনুষ্ঠিত সাংবাৎসরিক দীপান্বিতা কালীপূজা বিশেষ জনপ্রিয়। এই দিন আলোকসজ্জা মণ্ডপসজ্জা ও আতসবাজির উৎসবের মধ্য দিয়ে সারা রাত্রিব্যাপী মণ্ডপে, বাড়িতে এবং মন্দিরগুলিতে কালীপূজা অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, দীপান্বিতা কালীপূজার দিনটিতে ভারতের অন্যান্য জায়গায় দীপাবলি উৎসব পালিত হয়। এটি দীপাবলি, দীপান্বিতা, দীপালিকা, সুখরাত্রি, সুখসুপ্তিকা এবং যক্ষরাত্রি নামেও অভিহিত হয়। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে এই দিন লক্ষ্মীপূজা অনুষ্ঠিত হলেও বাঙালি, অসমীয়া ও ওড়িয়ারা এই দিন কালীপূজা করে থাকেন। এছাড়া মাঘ মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশী তিথিতে রটন্তী এবং জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যা তিথিতে ফলহারিণী কালীপূজাও যথেষ্ট জনপ্রিয়।
মন্ত্রপাঠ সহ পূজা) হাতের তালুতে দু-এক ফোঁটা জল নিয়ে ‘ওঁ বিষ্ণু’ মন্ত্রে পান করবেন। মোট তিন বার এইভাবে জল পান করতে হবে। তারপর করজোড়ে বলবেন— ওঁ তদ্বিষ্ণোঃ পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সূরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম্। ওঁ অপবিত্রঃ পবিত্রো বা সর্বাবস্থাং গতোঽপি বা। যঃ স্মরেৎ পুণ্ডরীকাক্ষং স বাহ্যাভ্যন্তরঃ শুচিঃ।।
জল শুদ্ধি: ওঁ গঙ্গে চ যমুনে চৈব গোদাবরি সরস্বতি। নর্মদে সিন্ধু-কাবেরি জলেঽস্মিন সন্নিধিং কুরু ।।
পুষ্প শুদ্ধি: পুষ্পে পুষ্পে মহা পুষ্পে সুপুষ্পে পুস্পসম্ভবে পুষ্পোহী চায়াব কীর্ণে চ হুং ফট স্বাহা।।
আসন শুদ্ধি: যে আসনে বসিয়া পূজা করিবে, তাহার নিম্নে ত্রিকোণ মণ্ডল লিখিয়া আসনের উপর একটি পুষ্প দিয়া পাঠ করিবে, এতে গন্ধপুষ্পে ওঁহ্রীঁ আধার শক্তি-কমলাসনায় নমঃ। তৎপরে আসন ধরিয়া পাঠ করিবে, – আসনমন্ত্রস্য মেরুপৃষ্ঠঋষিঃ সুতলং ছন্দঃ কুর্ম্মো দেবতা আসনোপবেশনে বিনিয়োগঃ।
অনন্তর হাত জোড় করিয়া পাঠ করিবে, – ওঁ পৃথ্বি ত্বয়া ধৃতা লোকাদেবি ত্ত্বং বিষ্ণুনা ধৃতা। ত্বঞ্চ ধারয় মাং নিত্যং পবিত্রং কুরু চাসনম্। তারপর পবিত্র বাদ্য ঘণ্টা বাজাতে বাজাতে স্বস্তিবাচন করবেন— ওঁ কর্তব্যেঽস্মিন্ শ্রীশিবপূজাকর্মণি ওঁ পূণ্যাহং ভবন্তো ব্রুবন্তু। ওঁ পূণ্যাহং ওঁ পূণ্যাহং ওঁ পূণ্যাহং। ওঁ কর্তব্যেঽস্মিন্ শ্রীশিবপূজাকর্মণি ওঁ স্বস্তি ভবন্তো ব্রুবন্তু। ওঁ স্বস্তি ওঁ স্বস্তি ওঁ স্বস্তি। ওঁ কর্তব্যেঽস্মিন্ শ্রীশিবপূজাকর্মণি ওঁ ঋদ্ধিং ভবন্তো ব্রুবন্তু। ওঁ ঋদ্ধতাম্ ওঁ ঋদ্ধতাম্ ওঁ ঋদ্ধতাম্। ওঁ স্বস্তি ন ইন্দ্রো বৃদ্ধশ্রবাঃ স্বস্তি নঃ পূষা বিশ্ববেদাঃ। স্বস্তি নস্তার্ক্ষ্যো অরিষ্টনেমিঃ স্বস্তি নো বৃহস্পতির্দধাতু। ওঁ স্বস্তি ওঁ স্বস্তি ওঁ স্বস্তি। এরপর হাত জোড় করে বলবেন— ওঁ সূর্যঃ সোমো যমঃ কালঃ সন্ধ্যে ভূতান্যহঃ ক্ষপা। পবনো দিক্পতির্ভূমিরাকাশং খচরামরাঃ। ব্রাহ্মং শাসনমাস্থায় কল্পধ্বমিহ সন্নিধিম্।।
এরপর জলশুদ্ধি করে নেবেন। জলশুদ্ধির মাধ্যমে সূর্যমণ্ডল থেকে সকল তীর্থকে জলে আহ্বান করে জলকে পবিত্র করা হয়। তারপর সেই পবিত্র জলে পূজার কাজ হয়। ঠাকুরের সামনে নিজের বাঁ হাতের কাছে কোশা রেখে তাতে জল দেবেন। সেই জলে আলতো করে ডান হাতের মধ্যমা আঙুল ঠেকিয়ে (নখ যেন না ঠেকে) বলবেন— ওঁ গঙ্গে চ যমুনে চৈব গোদাবরি সরস্বতি। নর্মদে সিন্ধু-কাবেরি জলেঽস্মিন সন্নিধিং কুরু। তারপর সেই জলে একটা সচন্দনফুল দিয়ে মনে মনে তীর্থদেবতাদের পূজা করবেন। এতে সকল তীর্থের পূজা করা হয়ে যায়। তীর্থপূজা সেরে নিয়ে সেই জল নিজের মাথায় একটু দেবেন। তারপর পূজার সকল দ্রব্যে ছিটিয়ে সব কিছু শুদ্ধ করে নেবেন।
তারপর সূর্যের উদ্দ্যেশ্যে একটু জল শিবলিঙ্গে দেবেন। সূর্যকে জল দিয়ে সূর্যপ্রণাম করবেন— ওঁ জবাকুসুমসঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম্। ধ্বান্তারিং সর্বপাপঘ্নং প্রণতোঽস্মি দিবাকরম্।। তারপর একে একে গণেশ, শ্রীগুরু, শিব, সূর্য, নারায়ণ, দুর্গা, নবগ্রহ, দশমহাবিদ্যা, দশাবতার, সর্বদেবদেবী ও আপনার ঠাকুরের আসনে অন্যান্য ঠাকুরদেবতা থাকলে তাঁদেরকে এবং আপনার ইষ্টদেবতাকে প্রত্যেককে একটি করে সচন্দন ফুল দিয়ে পূজা করবেন।
গনেশের প্রনামঃ ঔঁ একদন্তং মহাকায়ং লম্বোদরং গজানন। বিঘ্ননাশকরং দেবং হেরম্বং প্রণমাম্যহম্। গুরু প্রনামঃ ঔঁ অখণ্ডমণ্ডালাকারং ব্যাপ্তং যেন চরাচরম্। তৎপদং দশি‘তং যেন তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।
১ অঞ্জানতিমিরান্ধস্য ঞ্জানাঞ্জন শলাকায়া। চক্ষু রুল্মীলিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।
২. গুরু ব্রক্ষা গুরু বিষ্ণু গুরুদেবো মহেশ্বরঃ। গুরুঃ সাক্ষাৎ পরং ব্রক্ষ তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।
শিবের প্রনাম মন্ত্রঃ- ওঁ নমস্তভ্যঃ বিরূপাক্ষ নমস্তে দিব্যচক্ষুসে নমঃ । পিণাকহস্তায় বজ্রহস্তায় বৈ নমঃ ।। নমত্রিশূলহস্তায় দন্ড পাশাংসিপাণয়ে । নমঃ স্ত্রৈলোক্যনাথায় ভূতানাং পতয়ে নমঃ ।। ওঁ বানেশ্বরায় নরকার্ণবতারনায় , জ্ঞানপ্রদায় করুণাময়সাগরায় । কর্পূরকুন্ডবলেন্দুজটাধরায় , দারিদ্রদুঃখদহনায় নমঃ শিবায় ।। ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্রয়হেতবে । নিবেদয়ানি চাত্মানংত্তৃংগতিপরমেশ্বরঃ ।।
দূগা প্রণামঃ ওঁ জয়ন্তি,মঙ্গলা, কালী,ভদ্রকালী,কপালিনী। দূর্গা,শিবা,ক্ষমা,ধাত্রি,স্বাহা স্বধা নমোহস্তুতে।।
নারায়ণের প্রনামঃ নম ব্রহ্মণ্য দেবায় গো ব্রহ্মণ্য হিতায় চ। জগদ্ধিতায় শ্রীকৃষ্ণায় গোবিন্দায় নমো নমঃ ।।
সূর্যপ্রণাম: ওঁ জবাকুসুমসঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম্। ধ্বান্তারিং সর্বপাপঘ্নং প্রণতোঽস্মি দিবাকরম্।।
অনুষ্ঠান সামগ্রী ঃ ১ মহাকালির চিত্র ২ পরনে শ্বেত বস্ত্র ,৩ ভোগ ও নৈবেদ্য ৪ ধুপ ও দীপ ৫ ফুল ফল
পূর্ণ ব্রহ্মচর্য পালন করবেন । অনুষ্ঠানের আগে স্নান আবশ্যক তার পর স্বচ্ছ বস্ত্র ধারন করবে । আসনে কালি মূর্তি স্থাপন তার সামনে ধুপ দীপ জ্বালাবে আর নৈবেদ্য রাখবে । সর্ব প্রথম গুরু কে স্মরণ করে মা কালির ধ্যান করবে । ধ্যান করার সময় মন বশে রেখে এক দৃষ্টি কালির দিকে তাকিয়ে থাকবেন।
জপের মন্ত্র ঃ ক্রীং ক্রীং ক্রীং হুং হুং হ্রীং হ্রীং দক্ষিণ কালিকে ক্রীং ক্রীং ক্রীং হুং হুং হুং স্বাহা
আচমন ঃ ওঁ বিষ্ণু ওঁ বিষ্ণু ওঁ বিষ্ণু ওঁ তদবিষ্ণুঃ পরমং পদং পশ্যন্তি সুরয়ঃ । দিবীব চক্ষুরাততম ।। ওঁ বিষ্ণু ওঁ বিষ্ণু ওঁ বিষ্ণু ।।
প্রণাম মন্ত্র জয়ন্তী মঙ্গলা কালীভদ্রা কালী কপালিনীদূগা শিবা সমাধ্যাতীসাহা সুধা নমস্তুতে। ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্রয়হেতবে , নিবেদয়ামি চাত্মানংত্বং গতিঃ পরমেশ্বরঃ । ওঁ কালি কালি মহাকালি কালিকে পাপহারিনি দেবী নারায়ণী নমস্তুতে ,মহিষাঘ্নি মহামায়ে চামুণ্ডে মুণ্ডমালিনী আয়ুরোগয় বিজয়ং দেহি দেবী নমস্তুতে । এষ পুস্পাঞ্জলিঃ শ্রীমদ্দদক্ষিণকালিকায়ৈ নমঃ ।
ধ্যান মন্ত্র ওঁ শবারুঢ়াং মহাভীমাং ঘোরদংস্ট্রাং বরপ্রদাম্। হাস্যযুক্তাং ত্রিনেত্রাঞ্চ কপালকর্ত্তৃকাকরাম্।। মুক্তকেশীং লোলজিহ্বাং পিবন্তীং রুধিরং মুহু। চতুর্ব্বাহু যুতাং দেবীং বরাভয়করাং স্মরেৎ।।
মায়ের গায়ত্রী মন্ত্র ওঁ কালিকায়ৈ বিদ্মহে শশ্মানবাসিন্যৈ ধীমহি তন্নো ঘোরে প্রচোদয়াৎ ……… (১০ বার জপ করুন)
কালীকবচম্
ভৈরব উবাচ কালিকা যা মহাবিদ্যা কথিতা ভুবি দুর্ল্লভা।
তথাপি হৃদয়ে শল্যমস্তি দেবি কৃপাং কুরু।।
কবচন্ত মহাদেবী কথয়সানুকম্পা।
যদি নো কথ্যতে মাতব্বিমুঞ্চামি তদা তনুম।।
দেব্যুবাচ: শংকাপি জায়তে বৎস তব স্নেহাৎ প্রকাশিতম।
ন বক্তব্যং ন দ্রষ্টব্যমতি গুহ্যতমং মহৎ।।
কালিকা জগতাং মাতা শোকদুঃখাদি বিনাশিনী।
বিশেষত কলি যুগে, মহাপাতকহারিণী।।
কালী মে পুরুত: পাঠু পৃষ্ঠতশ্চ কপালিনী।
কুল্বা মে দক্ষিনে পাতু করণৌ চগ্রোপ্রভামতা।।
বদনং পাতু মে দীপ্তা নীলা চ চিবুকং সদা।
ঘনা গ্রীবাং সদা পাতু বলাকা বাহুযুগ্মকম।।
মাত্রা পাতু করদ্বন্দং বক্ষো মুদ্রা সদাবতু।
মিতা পাতু স্তনদ্বন্দং যোনিং মন্ডল দেবতা।
ব্রাম্মী মে জঠরং পাতু, নাভিং নারায়ণীং তথা।
ঊরু মাহেশ্মরী নিত্যং চামুন্ডা পাতু লিঙ্গকম।
কৌমারী চ কটিং পাতু তথৈব জানুযুগ্মকম।
অপরাজিতা পাদৌ মে বারাহী পাতু চাঙ্গুলীঃ।
সন্ধিস্থানং নারসিংহী পত্রস্থা দেবতাবতু ।।
রক্ষাহীনঞ্চ যৎ স্থানং বর্জ্জিতং কবচেন তু।
তৎ সর্ব্বং রক্ষ মে দেবী কালিকে ঘোর দক্ষিণে।।
ঊর্দ্ধং-মধ্যস্তথা দিক্ষু পাতু দেবী স্বয়ং বপুঃ।।
হিংস্রেভ্যঃ সর্ব্বদা পাতু সাধকঞ্চ জলাধিকাৎ।
দক্ষিণা কালিকে দেবী ব্যাপকত্তে সদাবতু।
ইদং কবচমজ্ঞাতা যো জপেদ্দেবদক্ষিনাম
ন পুজাফলমাপ্নোতি বিঘ্নস্তস্য পদে পদে।
কবচেনাবৃতো নিত্যং যত্র তত্রৈব গচ্ছতি
তত্র তত্রভয়ং তস্য ন ক্ষোভং বিদ্যতে ক্কচিৎ।
মহাকালের ধ্যান - কূর্ম মুদ্রায়। ওঁ মহাকালং যজেদ্দেব্যা দক্ষিণে ধুম্রবর্ণকম্। বিভ্রতং দণ্ডখট্টাঙ্গৌ দংষ্ট্রাভীমমুখং শিশুম্।। ব্যাঘ্রচর্ম্মাবৃতকটিং তুন্দিলং রক্তবাসসম্। ত্রিনেত্রমূধর্বকেশঞ্চ মুণ্ডমালা বিভূষিতম্। জটাভারলসচ্চন্দ্রখণ্ড মুগ্ৰং জ্বলন্নিভম্ ।।
ধ্যান করে পুষ্প নিজ মস্তকে ধারণ করতঃ মানস পূজা করে আবার ধ্যান করে পুষ্পটি ঘটে দিন এবং পুনরায় – আবাহনী মুদ্রায় – ওঁ মহাকাল ভৈরব ইহা গচ্ছ, ইহাগচ্ছ। স্থাপনী মুদ্রায় – ইহতিষ্ঠ, ইহতিষ্ঠ। সন্নিধাপনী মুদ্রায় – ইহ সন্নিধেহি। সংরোধনী মুদ্রায় – ইহ সন্নিরুধ্যস্ব। সম্মুখীকরণী মুদ্রায় – অত্রাধিষ্ঠানং কুরু। করজোড়ে – মম পুজাং গৃহাণ্।
রজতাসন - রেকাবি বা বেলপাতায় আসনটি রেখে প্রথমে ‘বং এতস্মৈ রজতাসনায় নমঃ’ মন্ত্র ৩ বার পাঠ করে প্রত্যেকবার কুশোদক দেবেন ও ‘এতে গন্ধপুষ্পে রজতাসনায় নমঃ”, ‘এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে ওঁ বিষ্ণবে নমঃ’ মন্ত্র বলে আসনে গন্ধপুষ্প দেবেন ও ‘এতৎ সম্প্রদানায় ওঁ হূং ক্ষ্রৌং যাং রাং লাং বাং আং ক্রৌং মহাকাল ভৈরবায় নমঃ’ বলে পাত্রসহ আসনটি ডানহাতে নিয়ে ‘ওঁ সৰ্ব্ববিঘ্নান্ নাশয় নাশয় হ্রীং শ্রীং ফট্ স্বাহা। ইদং রজতাসনং মহাকাল ভৈরবায় নমঃ’ বলে আসন দান করবেন। এভাবে অন্যান্য উপচার সমূহও পূজা করে নিবেদন করতে হবে।
স্বাগতম্ - ওঁ হূং ক্ষ্রৌং যাং রাং লাং বাং আং ক্রৌং মহাকাল ভৈরব সর্ব্ববিঘ নাশয় নাশয় হ্রীং শ্রীং ফট্ স্বাহা। মহাকাল ভৈরব স্বাগতং সুস্বাগতং ।
পাদ্যং - একটি বাটিতে বা কুশীতে জল নিয়ে ‘বং এতস্মৈ পাদ্য উদকায় নমঃ, ‘এতে গন্ধপুষ্পে পাদ্য উদকায় নমঃ’, ‘এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে ওঁ বিষ্ণবে নমঃ’, ‘এতৎ সম্প্রদানায় ওঁ হূং ক্ষ্রৌং যাং রাং লাং বাং আং ক্রৌং মহাকাল ভৈরবায় নমঃ’ ।
অর্ঘ্য - তামার জলশঙ্খে দুর্বা, আতপ চাল ও বেলপাতা রেখে অৰ্ঘ্য প্ৰস্তুত করে ‘বং এতস্মৈ অর্ঘ্যায় নমঃ’ ৩ বার বলে ৩ বার কুশার জল ছিটিয়ে ‘এতে গন্ধপুষ্পে অর্ঘ্যায় নমঃ’, ‘এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে ওঁ বিষ্ণবে নমঃ’, ‘এতৎ সম্প্রদানায় ওঁ হূং ক্ষ্রৌং যাং রাং লাং বাং আং ক্রৌং মহাকাল ভৈরবায় নমঃ’।
আচমনীয় - একটি বাটিতে বা কুশীতে জল নিয়ে পূর্ব নিয়মে ‘এতস্মৈ বং আচমনীয় জলায় নমঃ’ মন্ত্র ৩ বার পাঠ করে কৃশের জল ৩ বার ছিটাবেন। ‘এতে গন্ধপুষ্পে আচমনীয় জলায় নমঃ’, ‘এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে ওঁ বিষ্ণবে নমঃ” বলে গন্ধপুষ্প দেবেন। ‘এতৎ সম্প্রদানায় ওঁ হূং ক্ষ্রৌং যাং রাং লাং বাং আং ক্রৌং মহাকাল ভৈরবায় নমঃ’ বলুন।
মধুপর্ক - Cold Drink Of Honey দধি, ঘৃত, জল, শর্করা (চিনি) ও মধু একত্রে মিশালে মধুপর্ক প্রস্তুত হয়। দধি, ঘৃত ও চিনি সমান পরিমাণে মিশাতে হয়। কাঁসা ভিন্ন অন্য পাত্রে মধুপর্ক দিতে হবে। মধুপর্কের পাত্র বামহাতে ধরে ‘এতস্মৈ ওঁ বং সাধার মধুপর্কায় নমঃ’ মন্ত্রে ৩ বার কুশ দ্বারা জলের ছিটা দিবেন। আবার গন্ধপুষ্প নিয়ে ‘এতে গন্ধপুষ্পে মধুপর্কায় নমঃ’, ‘এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় ওঁ বিষ্ণবে নমঃ’ বলবেন। ‘এতৎ সম্প্রদানায় ওঁ হূং ক্ষ্রৌং যাং রাং লাং বাং আং ক্রৌং মহাকাল ভৈরবায় নমঃ’ বলুন।
পুনরাচমনীয় - কুশীতে জল নিয়ে ‘এতস্মৈ বং পুনরাচমনীয় জলায় নমঃ’ মন্ত্র ৩ বার পাঠ করে কুশের জল ৩ বার ছিটাবেন। ‘এতে গন্ধপুষ্পে পুনরাচমনীয় জলায় নমঃ’, ‘এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় ওঁ বিষ্ণবে নমঃ’ বলে গন্ধপুষ্প দেবেন। ‘এতৎ সম্প্রদানায় ওঁ হূং ক্ষ্রৌং যাং রাং লাং বাং আং ক্রৌং মহাকাল ভৈরবায় নমঃ’ বলুন।
স্নানীয় - Bathing Water কুশীতে গঙ্গাজল অথবা সাধারণ জল নিয়ে ‘এতস্মৈ বং স্নানীয় জলায় নমঃ’ মন্ত্র ৩ বার পাঠ করে কৃশের জল ৩ বার ছিটাবেন। ‘এতে গন্ধপুষ্পে স্থানীয় জলায় নমঃ’, ‘এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় ওঁ বিষ্ণবে নমঃ’ বলে গন্ধপুষ্প দেবেন। ‘এতৎ সম্প্রদানায় ওঁ হূং ক্ষ্রৌং যাং রাং লাং বাং আং ক্রৌং মহাকাল ভৈরবায় নমঃ’ বলুন।
বসন (বস্ত্র) - Dressings বামহাতে বস্ত্র নিয়ে ‘এতস্মৈ বং বস্ত্রায় নমঃ’ মন্ত্র ৩ বার পাঠ করে কুণ্ডের জল ৩ বার ছিটাবেন। এতে গন্ধপুষ্পে বস্ত্রায় নমঃ’, ‘এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় ওঁ বিষ্ণবে নমঃ’ বলে গন্ধপুষ্প দেবেন। ‘এতৎ সম্প্রদানায় ওঁ হূং ক্ষ্রৌং যাং রাং লাং বাং আং ক্রৌং মহাকাল ভৈরবায় নমঃ’ বলুন।
যজ্ঞোপবীত - একটি রেকাবিতে যজ্ঞোপবীত রেখে ‘এতস্মৈ বং যজ্ঞোপবীতায় নমঃ’ মন্ত্র ৩ বার পাঠ করে কুশের জল ৩ বার ছিটাবেন। ‘এতে গন্ধপুষ্পে যজ্ঞোপবীতায় নমঃ’, ‘এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় ওঁ বিষ্ণবে নমঃ’ বলে গন্ধপুষ্প দেবেন। ‘এতৎ সম্প্রদানায় ওঁ হূং ক্ষ্রৌং যাং রাং লাং বাং আং ক্রৌং মহাকাল ভৈরবায় নমঃ’ বলুন।
আভরণ - Ornaments রজতাভরণ (অঙ্গুরী) একটি পাত্রে বা বেলপাতায় নিয়ে বামহাতে স্পর্শ করে ‘এতস্মৈ বং আভরণায় নমঃ’ মন্ত্র ৩ বার পাঠ করে কৃশের জল ৩ বার ছিটাবেন। ‘এতে গন্ধপুষ্পে আভরণায় নমঃ’, ‘এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় ওঁ বিষ্ণবে নমঃ’ বলে গন্ধপুষ্প দেবেন। এতৎ সম্প্রদানায় ওঁ হূং ক্ষ্রৌং যাং রাং লাং বাং আং ক্রৌং মহাকাল ভৈরবায় নমঃ’ বলুন।
গন্ধ - Scent একটি নীল অপরাজিতা পুষ্পে শ্বেতচন্দন নিয়ে ‘এতস্মৈ বং গন্ধায়ৈ নমঃ’ মন্ত্র পাঠ করে ৩ বার কুশের জল দিয়ে অভ্যুক্ষণ করবেন। ‘এতে গন্ধপুষ্পে গন্ধায়ৈ নমঃ’, ‘এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় ওঁ বিষ্ণবে নমঃ’ বলে গন্ধপুষ্প দেবেন। ‘এতৎ সম্প্রদানায় ওঁ হূং ক্ষ্রৌং যাং রাং লাং বাং আং ক্রৌং মহাকাল ভৈরবায় নমঃ’ বলুন।
পুষ্প - Flowers একটি সচন্দন পুষ্প নিজ বামে রেকাবিতে রেখে বামহাতে ধরে ‘এতস্মৈ বং পুষ্পায় নমঃ’ মন্ত্র পাঠ করে ৩ বার কৃশের জল দিয়ে অভ্যুক্ষণ করবেন। ‘এতে গন্ধপুষ্পে পুষ্পায়ৈ নমঃ’, ‘এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় ওঁ বিষ্ণবে নমঃ” বলে গন্ধপুষ্প দেবেন। ‘এতৎ সম্প্রদানায় ওঁ হূং ক্ষ্রৌং যাং রাং লাং বাং আং ক্রৌং মহাকাল ভৈরবায় নমঃ’ বলুন।
বিল্বপত্র - Woodapple Leaves একটি পূর্ণাঙ্গ বিল্বপত্রে শ্বেতচন্দন মেখে নিজবামে একটি রেকাবিতে রেখে ‘এতস্মৈ বং বিল্বপত্রায় নমঃ’ মন্ত্র পাঠ করে ৩ বার অভ্যূক্ষণ করবেন। ‘এতে গন্ধপুষ্পে বিল্বপত্রায় নমঃ’, ‘এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় ওঁ বিষ্ণবে নমঃ’ ‘ বলে গন্ধপুষ্প দেবেন। ‘এতৎ সম্প্রদানায় ওঁ হূং ক্ষ্রৌং যাং রাং লাং বাং আং ক্রৌং মহাকাল ভৈরবায় নমঃ’ বলুন।
ধূপ - Incense নিজবামে ধুনুচিতে ধূপ (অভাবে ধূপকাঠি) জ্বেলে ‘এতস্মৈ বং ধূপায় নমঃ’ মন্ত্র পাঠ করে ৩ বার অভ্যূক্ষণ করবেন। এতে গন্ধপুষ্পে ধূপায় নমঃ’, ‘এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় ওঁ বিষ্ণবে নমঃ’ বলে গন্ধপুষ্প দেবেন। ‘এতৎ সম্প্রদানায় ওঁ হূং ক্ষ্রৌং যাং রাং লাং বাং আং ক্রৌং মহাকাল ভৈরবায় নমঃ’ বলুন।
দীপ - Light নিজবামদিকে রাখা প্রজ্জ্বল্যমান মূল প্রদীপ উদ্দেশ্য করে ‘এতস্মৈ বং দীপায় নমঃ’ বলে ৩ বার অভ্যুক্ষণ করবেন। ‘এতে গন্ধপুষ্পে দীপায় নমঃ’, ‘এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় ওঁ বিষ্ণবে নমঃ’ বলে গন্ধপুষ্প দেবেন। ‘এতৎ সম্প্রদানায় ওঁ হূং ক্ষ্রৌং যাং রাং লাং বাং আং ক্রৌং মহাকাল ভৈরবায় নমঃ’ বলুন।
নৈবেদ্য - নিজের বামদিকে এবং দেবতার ডানদিকে নৈবেদ্য রেখে ‘এতস্মৈ বং নৈবেদ্যায় নমঃ’ বলে ৩ বার অভ্যুক্ষণ করবেন। ‘এতে গন্ধপুষ্পে নৈবেদ্যায় নমঃ”, “এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে দেবায় ওঁ বিষ্ণবে নমঃ’ বলে ‘এতৎ সম্প্রদানায় ওঁ হূং ক্ষ্রৌং যাং রাং লাং বাং আং ক্রৌং মহাকাল ভৈরবায় নমঃ’ বলে নিবেদন করুন।
তর্পণ (তত্ত্বমুদ্রায়) - Offering Water To Deities ‘ওঁ হূং ক্ষ্রৌং যাং রাং লাং বাং আং ক্রৌং মহাকাল ভৈরবং তর্পয়ামি নমঃ’। মন্ত্রে ৩ বার তর্পণ করুণ।
মাধ্বিক সুধা দান : একটি কাঁসার পাত্রে মধু, নারিকেল জল ও আদার রস মিশিয়ে অর্চ্চনা প্রস্তুত করুন। এবার ‘বং এতস্মৈ কাংস্যাধার মাধ্বিক সুধায়ৈ নমঃ’ বলে ৩ বার কুশের জল দিয়ে অভ্যুক্ষণ করবেন। ‘এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ মাধ্বিক সুধায় নমঃ’ বলে পূজা করবেন। ‘এতে গন্ধপুষ্পে এতদ্ধিপতয়ে ওঁ উন্মত্ত ভৈরবায় নমঃ’। ‘এতৎ সম্প্রদানায় ক্রীং শ্ৰীমদ্দক্ষিণকালিকায়ৈ নমঃ’ বলে উৎসর্গ করুন এবং হূং ফট্ স্বাহা মন্ত্র বলে মায়ের ডানদিকের নীচের হাতে অর্পন করুন।
দেবীর অস্ত্র পূজা : এবার নিম্নলিখিত মন্ত্রে গন্ধপুষ্প দ্বারা দেবীর অস্ত্রসমূহের পূজা করুন। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ বজ্ৰায় নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ শক্তয়ে নমঃ । এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ দণ্ডায় নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ খড়গায় নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ অঙ্কুশায় নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ গদায়ৈ নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ শূলায় নমঃ । এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ চক্ৰায় নমঃ । এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ বরায় নমঃ । এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ পদ্মায় নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ অভয়ায় নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ কপালায় নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ মুণ্ডমালায়ৈ নমঃ।
গুরুপংক্তি পূজা : এবার নিম্নলিখিত মন্ত্রে গন্ধপুষ্প দ্বারা গুরুগণের পূজা করুন এবং তত্ত্ব মুদ্রায় তর্পণ করুন। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ ঐং দিবৌঘ শ্রীগুরুগণ শ্রীপাদুকাং পূজয়ামি নমঃ। ওঁ ঐং দিবৌঘ শ্রীগুরুগণ শ্রীপাদুকাং তর্পয়ামি নমঃ ॥১ । এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ ঐং সিদ্ধৌঘ শ্রীগুরুগণ শ্রীপাদুকাং পূজয়ামি নমঃ। ওঁ ঐং সিদ্ধৌঘ শ্রীগুরুগণ শ্রীপাদুকাং তর্পয়ামি নমঃ ॥২॥ এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ ঐং মানবৌঘ শ্রীগুরুগণ শ্রীপাদুকাং পূজয়ামি নমঃ। ওঁ ঐং মানবৌঘ শ্রীগুরুগণ শ্রীপাদুকাং তর্পয়ামি নমঃ ॥৩॥ এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ ঐং পরমগুরুং শ্রীপাদুকাং পূজয়ামি নমঃ । ওঁ ঐং পরমগুরুং শ্রীপাদুকাং তর্পয়ামি নমঃ ॥৪ এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ ঐং পরাপরগুরুং শ্রীপাদুকাং পূজয়ামি নমঃ । ওঁ ঐং পরাপরগুরুং শ্রীপাদুকাং তর্পয়ামি নমঃ ॥৫। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ ঐং পরমেষ্ঠীগুরুং শ্রীপাদুকাং পূজয়ামি নমঃ । ওঁ ঐং পরমেষ্ঠীগুরুং শ্রীপাদুকা তর্পয়ামি নমঃ।৬। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ ঐং শ্রী অমুকীদেব্যম্বাসহিত (নিজ গুরুপত্নীর নাম) শ্রীমৎ অমুকানন্দ নাথ (নিজ গুরুর নাম) শ্রীগুরুং পূজয়ামি নমঃ । শ্রী অমুকীদেব্যম্বাসহিত (নিজ গুরুপত্নীর নাম) শ্রীমৎ অমুকানন্দ নাথ (নিজ গুরুর নাম) শ্রীগুরুং শ্রীপাদুকাং তর্পয়ামি নমঃ।৭।
পুনরায় দেবীর পূজা : ‘ক্রীং’ মন্ত্রে অঙ্গন্যাস ও করন্যাস করে কুর্মমুদ্রায় দেবীর ধ্যান করতঃ পঞ্চোপচারে দেবীর পূজা করুন। যথা- একটি জবাপুষ্পে রক্তচন্দন লাগিয়ে ‘এষ গন্ধং ওঁ ক্রীং শ্রীমৎ দক্ষিণকালিকায়ৈ নমঃ। এবার আর একটি জবাপুষ্পে রক্তচন্দন মিশিয়ে ‘ ‘এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ ক্রীং শ্রীমৎ দক্ষিণকালিকায়ৈ নমঃ’। ‘এষ ধূপং ওঁ ক্রীং শ্রীমৎ দক্ষিণকালিকায়ৈ নমঃ’। ‘এষ দীপং ওঁ ক্রীং শ্রীমৎ দক্ষিণকালিকায়ৈ নমঃ’। “ইদং নৈবেদ্যং ওঁ ক্রীং শ্রীমৎ দক্ষিণকালিকায়ৈ নমঃ’। এবার নিম্নলিখিত মন্ত্রে ৩ বার পুষ্পাঞ্জলি দিন। যথা – ‘এষ পুষ্পাঞ্জলি সায়ুধবাহন পরিবার শ্রীমন্ মহাকাল ভৈরবসহিত ক্রীং শ্রীমৎ দক্ষিণকালিকা শ্রীপাদুকাং পূজয়ামি নমঃ।’ এখন তত্ত্ব মুদ্রায় নিম্নলিখিত মন্ত্রে মায়ের তর্পণ করুন। যথা – “সায়ুধবাহন পরিবার শ্রীমন্ মহাকাল ভৈরবসহিত ক্রীং শ্রীমৎ দক্ষিণকালিকা শ্রীপাদুকাং তর্পয়ামি নমঃ। ক্রীং শ্রীমৎ দক্ষিণ কালিকা মাতস্তৃপ্যতাম্।’ এবার কৃতাঞ্জলি মুদ্রায় (করজোড়ে) মন্ত্রপাঠ করুন। যথা- ‘সায়ুধবাহন পরিবার শ্রীশ্রীমহাকাল ভৈরবসহিত ওঁ ক্রীং শ্রীমৎ দক্ষিণকালিকাঃ পূজিতাঃ সন্তু।’
কুষ্মাণ্ডাদি বনস্পতি দ্রব্য বলি : কুষ্মাণ্ডাদিতে সিঁদুর দিয়ে ‘বং এতস্মৈ কুষ্মাণ্ড বলয়ে নমঃ’ মন্ত্রে ৩ বার কুশোদক দিয়ে শোধন করুন এবং ‘এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ কুষ্মাণ্ড বলয়ে নমঃ’ মন্ত্রে অর্চ্চনা করে ‘এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে ওঁ বনস্পতয়ে নমঃ’ ‘এতৎ সম্প্রদানায় ওঁ শ্রীমন্মহাকালভৈরবসহিত ক্রীংশ্রীমদ্দক্ষিণকালিকায়ৈ নমঃ’ মন্ত্রে পূজা করুন। এবার নিম্নলিখিত মন্ত্রে উৎসর্গ করুন। যথা- ‘বিষ্ণুরোম্ তৎসৎ অদ্য অমুকেমাসি অমুকেরাশিস্থে ভাস্করে অমুকপক্ষে অমুকতিথৌ অমুকগোত্রঃ শ্রীঅমুকদেবশর্মা (পরার্থে- অমুকগোত্রস্য অমুকস্য) শ্রীমন্মহাকাল ভৈরবসহিত শ্রীমদ্দক্ষিণকালিকা প্রীতিকামঃ ইমং কুষ্মাণ্ডবলিং বনস্পতিদৈবতং শ্রীমন্মহাকাল ভৈরবসহিত শ্ৰীমদ্দক্ষিণকালিকায়ৈ তুভ্যমহং ঘাতয়িষ্যে (পরার্থে – ঘাতয়িষ্যামি)। এইক্রমে- কদলী হলে ইমং কদলী বলিং, আখ হলে ইমমিক্ষু বলিং, আদা হলে ইমমার্দ্রক বলিং, জম্বীর হলে ইমং জম্বীর বলিং, বনস্পতিদৈবতং শ্রীমন্মহাকালভৈরবসহিত শ্রীমদ্দক্ষিণকালিকায়ৈ তুভ্যমহং ঘাতয়িষ্যে (পরার্থে – ঘাতয়িষ্যামি ) ।’
দীপমালা উৎসর্গ : এবার দীপমালা উৎসর্গ করুন, বিশেষতঃ কাৰ্ত্তিক মাসে দীপান্বিতা অমাবস্যায় অবশ্যই দীপমালা (১০৮) উৎসর্গ করবেন। মন্ত্র, যথা- ‘বং এতস্মৈ দীপমালায়ৈ নমঃ’ বলে ৩ বার অভ্যুক্ষণ করবেন। ‘এতে গন্ধপুষ্পে দীপমালায়ৈ নমঃ’, ‘এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে ওঁ দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ’, ‘এতৎ সম্প্রদানায় ওঁ ক্রীং শ্রীমৎ দক্ষিণকালিকায়ৈ নমঃ’ মন্ত্রে দেবীর উদ্দেশ্যে গন্ধপুষ্প দিয়ে উৎসর্গ বাক্য পাঠ করুন। যথা- ‘বিষ্ণুরোম্ তৎসৎ অদ্য অমুকেমাসি অমুকেরাশিস্থে ভাস্করে অমুকপক্ষে অমুকতিথৌ অমুকগোত্রঃ শ্রীঅমুকদেবশর্মা (পরার্থে – অমুকগোত্রস্য অমুক দেবশর্মণঃ বা দাসস্য) শ্রীমদ্দক্ষিণকালিকা প্রীতিকামঃ অষ্টোত্তর শত সংখ্যক (কিংবা ২৮টি দীপ হলে – অষ্টবিংশতি সংখ্যক) দীপমালাঃ ওঁ ক্রীং শ্রীমদ্দক্ষিণকালিকায়ৈ তুভ্যমহং সম্প্রদদে (পরার্থে – দদানি)।
নিরাজন (আরতি) : প্রথমে ঘৃত প্রদীপমালা (পঞ্চপ্রদীপ), তারপরে জলপূর্ণ শঙ্খ, তারপর শুদ্ধবস্ত্র (দেবীর পূজায় লালবস্ত্র), পরে বিশ্বপত্র ও পুষ্প এবং সবশেষে চামর বা ধূপ দ্বারা আরতি বা নিরাজন করতে হয়। নিরাজন করার আগে দীপমালা দেবীর সামনেস্থাপন করে অর্চ্চনা করতে হবে। অন্যান্য নিরাজন দ্রব্যের অর্চ্চনার প্রয়োজন নেই।
চক্রমুদ্রা ‘বং এতস্মৈ দীপমালায়ৈ নমঃ’ বলে ৩ বার অভ্যুক্ষণ করবেন। ‘এতে গন্ধপুষ্পে এতস্মৈ দীপমালায়ৈ নমঃ’, ‘এতে গন্ধপুষ্পে এতদধিপতয়ে ওঁ দেবায় শ্রীবিষ্ণবে নমঃ’, ‘এতৎ সম্প্রদানায় ওঁ ক্রীং শ্রীমদ্দক্ষিণকালিকায়ৈ নমঃ’ মন্ত্ৰে অৰ্চ্চনা করুন। অর্চ্চনার পর নিরাজন করা শুরু করতে হবে। নিরাজনের নিয়ম- প্রথমে দেবতার চরণদেশে ৪ বার, নাভিদেশে ২ বার, মুখমণ্ডলে ৩ বার সর্বাঙ্গে ৭ বার, মোট ১৬ বার দীপমালা ভ্রামিত করে দেবতার ডানপাশে স্থাপন করতঃ চক্রমুদ্রা প্রদর্শন করতে হয়। অপর ৪টি নিরাজন দ্রব্য দ্বারাও অনুরূপভাবে আরতি কর্ম সম্পাদন করতে হয়।
হোমকর্ম : ভূমিতে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে ৪ হাত পরিমিত সমান চতুষ্কোণ স্থানে বালুকা বিছিয়ে নিতে হবে। তবে সংক্ষিপ্ত হোমকর্মে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে ১ হাত পরিমাণ জায়গায় বালি বিছাতে হয়। যাদের কাছে তামার তৈরী যজ্ঞকুণ্ড থাকে, তাদের পক্ষে শুধু ঐ কুণ্ডে বালি বিছাতে হয়। তবে ভূমিতে কুণ্ড করতে হলে প্রথমে গোময় ও মাটি মিশিয়ে যজ্ঞস্থানটি লেপন করে শুদ্ধ করে নিতে হবে।
পরে পরিস্কার বালি বিছাতে হবে। এবার বালির উপর কুশ দ্বারা একটি অধোমুখ ত্রিকোণ মণ্ডল আঁকতে হবে। ত্রিকোণ মণ্ডলের মধ্যে একটি বিন্দু ‘o’ আঁকতে হবে। এবার ত্রিকোণ মণ্ডলের উপর আর একটি ঊর্দ্ধমুখ ত্রিকোণ মণ্ডল অঙ্কন করতে হবে। এর ফলে যড়কোণ মণ্ডল তৈরী হল। এবার উক্ত মণ্ডলের বাইরে চারদিকে একটি গোলাকার বৃত্ত এমনভাবে আঁকতে হবে যেন সকল কোণ স্পর্শ করে। তারপর বাইরে আর একটি বৃত্ত এঁকে অষ্টদল পদ্ম আঁকতে হবে।
এবার তার বাইরে চতুর্ভূজ আঁকতে হবে। চতুর্ভূজের চারকোণে চারটি দ্বার এঁকে বজ্রভূপুর অঙ্কন করতে হবে। স্থণ্ডিলের বাইরে উত্তরমুখ ও পূর্বমুখে তিনটি করে রেখা আঁকতে হবে। – স্থণ্ডিল প্রস্তুত করে ‘ক্রীং মন্ত্রে অভ্যুক্ষণ, ‘ক্রীং’ মন্ত্রে অবলোকন ও ‘ফট্’ মন্ত্রে তাড়ন এবং ‘ক্রীং’ মন্ত্রে প্রোক্ষণ করে ‘হূং’ মন্ত্রে পুনরায় অভ্যুক্ষণ করবেন। পরে ‘ক্রীং’ মন্ত্র বলে ‘এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ ক্রীং শ্রীমদ্দক্ষিণকালিকা স্থণ্ডিলায় নমঃ’ মন্ত্রে পূজা করে পূর্বদিকের ৩টি রেখার দক্ষিণ দিকেরটিতে ‘এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ মুকুন্দায় নমঃ’, মধ্যেরটিতে ‘এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ ঈশানায় নমঃ’, উত্তর দিকেরটিতে ‘এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ পুরন্দরায় নমঃ’ মন্ত্রে পূজা করবেন। এবার উত্তরাগ্র তিনটির পূর্ব দিকেরটিতে ‘এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ ব্রহ্মণে নমঃ’, মধ্যেরটিতে ‘এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ বৈবস্বতায় নমঃ’ এবং পশ্চিম দিকেরটিতে ‘এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ ইন্দবে নমঃ’ মন্ত্রে পূজা করবেন।
এবার কুণ্ডস্থ ষট্কোণ, বৃত্ত ও পদ্ম মধ্যে ‘ক্রীং’ মন্ত্রে ৫ বার পুষ্পাঞ্জলি দিবেন। তারপর ‘ওঁ’ মন্ত্রে হোমের দ্রব্যসমূহ প্রোক্ষণ করে অগ্নির যোগপীঠ পূজা করবেন। যথা – কর্ণিকায় – এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ আধারশক্তয়ে নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ প্রকৃত্যৈ নমঃ । এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ কুর্মায় নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ অনন্তায় নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ পৃথিব্যৈ নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ আধার শক্তয়ে নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ ক্ষীরসমুদ্রায় নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ শ্বেতদীপায় নমঃ । এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ মণিমণ্ডপায় নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ কল্পবৃক্ষায় নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ মণিবেদিকায়ৈ নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ রত্নসিংহাসনায় নমঃ।
চারকোণ পূজা – অগ্নিকোণে – এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ ধৰ্ম্মায় নমঃ। নৈঋত কোণে – এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ জ্ঞানায় নমঃ। বায়ুকোণে -এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ বৈরাগ্যায় নমঃ। ঈশান কোণে – এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ ঐশ্বৰ্য্যায় নমঃ। চারদিক পূজা – পূর্বদিকে – এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ অধৰ্ম্মায় নমঃ। পশ্চিমদিকে – এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ অজ্ঞানায় নমঃ। উত্তরদিকে – এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ অবৈরাগ্যায় নমঃ। দক্ষিণদিকে – এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ অনৈশ্বৰ্য্যায় নমঃ। মধ্যস্থলে – এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ অনন্তায় নমঃ। – এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ পদ্মায় নমঃ । – এতে গন্ধপুষ্পে অং অর্কমণ্ডলায় দ্বাদশ কলাত্মনে নমঃ। – এতে গন্ধপুষ্পে উং সোমমণ্ডলায় ষোড়শ কলাত্মনে নমঃ। – এতে গন্ধপুষ্পে মং বহ্নিমণ্ডলায় দশকলাত্মনে নমঃ ।
বর্ণাদি পূজা - পূর্বাদিকেশরে - – এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ পীতায়ৈ নমঃ। – এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ শ্বেতায়ৈ নমঃ। – এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ অরুণায়ৈ নমঃ। – এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ কৃষ্ণায়ৈ নমঃ। – এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ ধূম্রায়ৈ নমঃ । – এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ তীব্রায়ৈ নমঃ। – এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ স্ফুলিঙ্গন্যৈ নমঃ। – এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ রুচিরায়ৈ নমঃ। – এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ জ্বালিন্যৈ নমঃ। – এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ বং বহ্ন্যাসনায় নমঃ।
বাগীশ্বরীর পূজা - ধ্যান (কুর্ম মুদ্রায়)- ওঁ বাগীশ্বরী মৃতুস্নাতাং নীলেন্দীবরলোচনাম্। বাগীশ্বরেণ সংযুক্তাং ক্রীড়াভাবসমন্বিতাম্।।
পূজা – এষ গন্ধং ওঁ বাগীশ্বর সহিত বাগেশ্বর্য্যৈ নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ বাগীশ্বর সহিত বাগেশ্বর্য্যৈ নমঃ । এষ ধূপং ওঁ বাগীশ্বর সহিত বাগেশ্বর্য্যৈ নমঃ। এষ দীপং ওঁ বাগীশ্বর সহিত বাগেশ্বর্য্যৈ নমঃ। ইদং নৈবেদ্যং ওঁ বাগীশ্বর সহিত বাগেশ্বর্য্যৈ নমঃ।
অগ্নিস্থাপন – শুদ্ধ অগ্নি হাতে নিয়ে (পাটকাঠি জ্বালিয়ে) ‘ক্রীং’ মন্ত্র পাঠ করে ‘বৌষট্’ মন্ত্রে অগ্নিকে অভিমন্ত্রিত ও দর্শন করে, ‘অস্ত্রায় ফট্’ মন্ত্রে আবাহন করতঃ ‘ক্রীং’ মন্ত্ৰ পাঠ করতঃ ‘হূং ফট্ ক্রব্যাদেভ্যঃ স্বাহা’ মন্ত্র পাঠ করে জ্বলন্ত অগ্নির (পাটকাঠি) কিয়দংশ স্থণ্ডিলের দক্ষিণদিকে নিক্ষেপ করতে হবে। এবার অবশিষ্ট অগ্নিকে ‘ফট্’ মন্ত্রে রক্ষণ করে ও অবগুণ্ঠন মুদ্রা দেখিয়ে ‘হূং’ এবং ধেনুমুদ্রায় ‘রং’ মন্ত্র পাঠ করে অমৃতীকরণ করে দুহাতে অগ্নিকে ধরে স্থণ্ডিলের উপর ৩ বার ঘুরিয়ে মাটিতে দু’জানু পেতে অগ্নিকে শিববীজ এবং স্থণ্ডিলকে দেবী যোনি চিন্তা করে কুণ্ডের মধ্যস্থলে নিজের দিকে স্থাপন করতে হবে।
অগ্নি স্থাপনের পর নিম্নলিখিত মন্ত্র পাঠ করুন। যথা- এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ হ্রীং বহ্নিমূৰ্ত্তয়ে নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ বং বহ্নিচৈতন্যায় নমঃ। পরে ‘ওঁ’ চিৎ পিঙ্গল হন হন দহ দহ পচ পচ সৰ্ব্বজ্ঞাপয় স্বাহা’ মন্ত্র পাঠ করে কৃতাঞ্জলি হয়ে নিম্নলিখিত মন্ত্র পাঠ করুন। যথা- ওঁ অগ্নিং প্রজ্জ্বলিতং বন্দে জাতবেদং হুতাশনম্ । সুবর্ণবর্ণমমলং সমিদ্ধং বিশ্বতোমুখম্।। অগ্নে ত্বং শ্রীমৎ দক্ষিণকালিকানামাসি । আবাহনী মুদ্রায় – ওঁ দক্ষিণকালিকা নামাগ্নে ইহা গচ্ছ, ইহা গচ্ছ। স্থাপনী মুদ্রায় – ওঁ দক্ষিণকালিকা নামাগ্নে ইহ তিষ্ঠ, ইহ তিষ্ঠ। সন্নিধাপনী মুদ্রায় – ওঁ দক্ষিণকালিকা নামাগ্নে ইহ সন্নিধেহি। সন্নিরোধনী মুদ্রায় – ওঁ দক্ষিণকালিকা নামাগ্নে ইহ সন্নিরুধ্যস্ব।
কৃতাঞ্জলি হয়ে – মম হোমকর্মং গৃহাণ্। ওঁ বৈশ্বানব জাতবেদ ইহাবহ লোহিতাক্ষ সৰ্ব্বকর্মানি সাধয় সাধয় স্বাহা । এষ গন্ধং ওঁ দক্ষিণকালিকা নামাগ্নয়ে নমঃ । এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ দক্ষিণকালিকা নামাগ্নয়ে নমঃ । এষ ধূপং ওঁ দক্ষিণকালিকা নামাগ্নয়ে নমঃ । এষ দীপং ওঁ দক্ষিণকালিকা নামাগ্নয়ে নমঃ । ইদং নৈবেদ্যং ওঁ দক্ষিণকালিকা নামাগ্নয়ে নমঃ । বলে স্থণ্ডিলে পূজা করতে হবে। এবার শুধু গন্ধপুষ্প দ্বারা স্থণ্ডিলে পূজা করতে হবে ।
যথা – এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ অগ্নের্হিরণ্যাদিসপ্তজিহ্বাভ্যো নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ সহস্রার্চ্চিষে হৃদয়ায় নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ অগ্নিষড়ঙ্গেভ্যো নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ অগ্নেজাতবেদসে ইত্যাদ্যষ্টমূৰ্ত্তিভ্যো নমঃ । এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ ব্রাহ্মাদ্যষ্টশক্তিভ্যো নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ পদ্মাদ্যষ্টনিধিভ্যো নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ অগ্নের্হিরণ্যাদিসপ্তজিহ্বাভ্যো নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে ওঁ বজ্ৰাদ্যস্ত্রেভ্যো নমঃ। এখন আহুতি দেওয়ার শ্রুব (কুশী) যজ্ঞের আগুনে অধোমুখ করে ৩ বার ধরে তপ্ত করে কুশ দিয়ে মার্জন করতে হবে। কুশের পবিত্র তৈরী করে আহুতির জন্য তাম্রকুণ্ডের মধ্যে রাখা ঘি’র মধ্যে পবিত্রটি দিয়ে বামভাগ ইড়া, মধ্যভাগ পিঙ্গলা ও ডানভাগ সুষুম্না নাড়ী চিন্তা করতে করতে নিম্নলিখিত মন্ত্র বলে ৩ বার আহুতি দিবেন। যথা – ওঁ অগ্নয়ে স্বাহা (৩ বার)। ওঁ সোমায় স্বাহা (৩ বার)। ওঁ অগ্নিসোমাভ্যাং স্বাহা (৩ বার)। এরপর ‘ওঁ অগ্নে সৃষ্টিকৃতে স্বাহা’ মন্ত্রে ২ বার আহুতি দিবেন।
মহাব্যাহৃতি হোম - ওঁ ভূঃ স্বাহা (১ বার) ওঁ ভূবঃ স্বাহা (১ বার) ওঁ স্বঃ স্বাহা (১ বার) ওঁ ভূর্ভুবঃ স্বঃ স্বাহা (১ বার) ‘ওঁ বৈশ্বানব জাতবেদ ইহাবহ লোহিতাক্ষ সৰ্ব্বকর্মানি সাধয় সাধয় স্বাহা।’ এই মন্ত্রে ৩ বার হোম করে ‘ওঁ অগ্নে গর্ভধানাদি সংস্কারং সম্প্রদয়ামি স্বাহা’ মন্ত্রে ১ বার হোম করে ‘এতে গন্ধপুষ্পে পীঠ দেবতা সহিতায়ৈ ওঁ ক্রীং শ্রীমৎ দক্ষিণকালিকায়ৈ নমঃ’ মন্ত্রে অগ্নিতে পূজা করে ‘ক্রীং স্বাহা’ মন্ত্রে ২৫ বার ঘৃতের আহুতি দিবেন। এবার অগ্নি ও কালীর একত্ব চিন্তা করে ‘ক্রীং স্বাহা’ মন্ত্রে ১১ বার ঘৃতের আহুতি দিবেন।
পরে ‘ওঁ’ মূলমন্ত্রস্যাঙ্গদেবতাভ্যঃ স্বাহা’ মন্ত্রে ১ বার ও ‘ওঁ আবরণ দেবতাভ্যঃ স্বাহা’ মন্ত্রে ১ বার ঘৃতাহুতি দিবেন। পরে নিম্নলিখিত মন্ত্রে সংকল্প করুন। যথা – বিষ্ণু ওঁ তৎসৎ অদ্য অমুকেমাসি অমুকেরাশিস্থে ভাস্করে অমুকপক্ষে অমুকতিথৌ অমুকগোত্রঃ শ্রীঅমুকদেবশর্মা (পরার্থে – অমুকগোত্রস্য অমুক দেবশর্মণঃ বা দাসস্য) সৰ্ব্ব অপ শান্তি পূৰ্ব্বক শ্ৰীমদ্দক্ষিণকালিকা প্রীতিকামঃ শ্রীমদ্দক্ষিণকালিকা পূজা অঙ্গীভূত হোমকৰ্ম্মানি ক্রীং শ্ৰীমদ্দক্ষিণকালিকায়ৈ স্বাহা ইতি মন্ত্রেণ প্রত্যেকেন পাঠিতেন অষ্টবিংশতি সংখ্যক হোমকর্ম্ম করিয্যে (পরার্থে – করিষ্যামি) (১০৮ হলে অষ্টোত্তর শত এবং ১০০৮ হলে অষ্টোত্তর সহস্র সংখ্যক)।
সমিধের অর্চ্চনা - ‘ওঁ এতেভ্যো অষ্টবিংশতি / অষ্টোত্তর শত / অষ্টোত্তর সহস্র সাজ্য বিল্বপত্রেভ্যো নমঃ’ মন্ত্রে ৩ বার অভ্যুক্ষণ করে ‘এতৎ অধিপতয়ে ব্রহ্মাবিষ্ণুশিবায় নমঃ’, ‘এতৎ সম্প্রদানায় ওঁ ক্রীং শ্রীমৎ দক্ষিণকালিকায়ৈ নমঃ’ মন্ত্রে অর্চ্চনা করে ‘ওঁ ক্রীং শ্রীমৎ দক্ষিণকালিকায়ৈ স্বাহা’ মন্ত্র উচ্চারণ করে ১টি ১টি করে ঘৃত মাখানো বেলপাতা অগ্নিতে আহুতি দিন।
মহাব্যাহৃতি হোম - ওঁ ভূঃ স্বাহা (১ বার) ওঁ ভূবঃ স্বাহা (১ বার) ওঁ স্বঃ স্বাহা (১ বার) ওঁ ভূর্ভুবঃ স্বঃ স্বাহা (১ বার) পরে ‘নমঃ’ মন্ত্রে প্রাদেশ (১ বিঘৎ) পরিমাণ ১ খানা ঘৃতাক্ত কুশ অগ্নিতে আহুতি দিন । মহাকাল ভৈরবের আহুতি - এবার ২৮টি বেলপাতায় ঘি মাখিয়ে ১ বার মন্ত্র পাঠ করে ১টি করে ২৮ বারে ২৮টি বেলপাতা আহুতি দিন। যথা- ওঁ হূং ক্ষ্রৌং যাং রাং লাং বাং আং ক্রৌং মহাকালভৈরব সর্ব্ববিঘ্নান্ নাশয় নাশয় হ্রীং শ্রীং হুং ফট্ মহাকাল ভৈরবায় স্বাহা।
সদাশিবের আহুতি - এবার আরও ২৮টি বেলপাতায় ঘি মাখিয়ে ১ বার মন্ত্র পাঠ করে ১টি করে ২৮ বারে ২৮টি বেলপাতা আহুতি দিন। যথা- ওঁ হেসৌঃ সদাশিব মহাপ্রেত পদ্মাসনায় স্বাহা।
বিষ্ণুর আহুতি - ২৮টি যজ্ঞডুমুরের অগ্রভাগ (সমিধ) বা শুধু ঘি দিয়ে ১ বার ১ বার মন্ত্র পাঠ করে ১টি করে ২৮ বারে ২৮টি আহুতি দিন। যথা – ওঁ তদ্বিষ্ণোঃ পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সূরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম্ স্বাহা। ইদং বিষ্ণবে।।
আবরণ দেবতার আহুতি - নিম্নলিখিত মন্ত্রে প্রত্যেক দেবতাকে ১ বার করে ঘৃতাহুতি দিন। যথা- ওঁ আদিত্যাদি নবগ্রহেভ্যঃ স্বাহা। ওঁ ইন্দ্ৰাদি দশদিকপালেভ্যঃ স্বাহা। ওঁ মৎস্যাদি দশাবতারেভ্যঃ স্বাহা। ওঁ কাল্যাদি দশমহাবিদ্যাভ্যঃ স্বাহা। ওঁ অসিতাঙ্গাদি অষ্টভৈরবগণেভ্যঃ স্বাহা। ওঁ ব্রাহ্মাদি অষ্টশক্তিভ্যঃ স্বাহা। ওঁ কাল্যাদি পঞ্চদশশক্তিভ্যঃ স্বাহা। ওঁ ক্ষেত্রপাল গণেভ্যঃ স্বাহা। ওঁ বটুকগণেভ্যঃ স্বাহা। ওঁ ডাকিনীগণেভ্যঃ স্বাহা। ওঁ যোগিনীগণেভ্যঃ স্বাহা। ওঁ লক্ষ্মৈ স্বাহা। ওঁ গঙ্গায়ৈ স্বাহা। ওঁ যমুনায়ৈ স্বাহা। ওঁ শীতলায়ৈ স্বাহা। ওঁ মনসায়ৈ স্বাহা।
শান্তিমন্ত্র : সুরাস্তামভিষিঞ্চন্তু ব্রহ্মবিষ্ণুমহেশ্বরা। বাসুদেবো জগন্নাথস্তথা সঙ্কর্ষণঃ প্ৰভৃঃ ৷৷১ ৷৷ প্রদ্যুম্নশ্চানিরুদ্ধশ্চ ভবন্তু বিজয়ায় তে। ওঁ আখগুলোহগ্নির্ভগবান্ যমো বৈ নৈর্ঋতিস্থথা।।২।। বরুণঃ পবনশ্চৈব ধনাধ্যক্ষস্তথা শিবঃ। ব্রহ্মণা সহিতঃ শেষা দিকপালাঃ পান্তুতে সদা।।৩।। ওঁ কীৰ্ত্তি লক্ষ্মীধৃতির্মেধাপুষ্টিশ্রদ্ধা ক্ষমা মতিঃ। বুদ্ধির্লজ্জা বপুঃ শান্তিস্তুষ্টিঃ কান্তিশ্চ মাতরঃ।।৪।। এতাস্তামভিষিঞ্চন্তু ধর্মপত্ন্যঃ সমাগতাঃ। আদিত্যশ্চন্দ্ৰমা ভৌমো বুধজীবসিতার্কজাঃ।।৫।। গ্রহাস্ত্বমভিষিঞ্চন্তু রাহুঃ কেতুশ্চ তর্পিতাঃ। ওঁ ঋষয়ো মুনয়ো গাবো দেবমাতর এব চ।।৬।। দেবপত্ন্যো ধ্রুবা নাগা দৈত্যাশ্চাপ্সরসাংগণাঃ । অস্ত্রানি সর্বশস্ত্রানি রাজানো বাহনানি চ।।৭।। ঔষধানি চ রত্নানি কালস্যাবয়বাশ্চ যে। সরিতঃ সাগরাঃ শৈলাস্তীর্থানি জলদা নদাঃ।।৮।। দেবদানবগর্ন্ধবাঃ যক্ষরাক্ষসপগাঃ। এতে ত্বামভিষিঞ্চন্তু ধর্মকামার্থ সিদ্ধয়ে।।৯।। ইতি শ্রী শ্রী কালীপূজা সমাপ্ত
আরো পড়ুন জীবনী মন্দির দর্শন ইতিহাস ধর্ম জেলা শহর শেয়ার বাজার কালীপূজা যোগ ব্যায়াম আজকের রাশিফল পুজা পাঠ দুর্গাপুজো ব্রত কথা মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগ জ্যোতিষশাস্ত্র টোটকা লক্ষ্মী পূজা ভ্রমণ বার্ষিক রাশিফল মাসিক রাশিফল সাপ্তাহিক রাশিফল আজ বিশেষ রান্নাঘর প্রাপ্তবয়স্ক বাংলা পঞ্জিকা