কলকাতা এয়ারপোর্ট থেকে নিখোঁজ কৃষ্ণনগর উত্তরের বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায়!

কলকাতা এয়ারপোর্ট থেকে নিখোঁজ কৃষ্ণনগর উত্তরের বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায়!

মুকুল রায় 'নিখোঁজ'! কোথায় গেলেন তিনি? কলকাতা এয়ারপোর্ট থানায় বাবার নামে মিসিং ডায়েরি করলেন মুকুলপুত্র  শুভ্রাংশু রায়।  তবে দিল্লির রাজনৈতিক বৃত্তে ঘোরাফেরা যাঁরা করেন, তাঁদের একাংশের সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘বেপাত্তা’ নন, নিজের ইচ্ছাতেই সোমবার সন্ধ্যার বিমানে কলকাতা থেকে রাজধানী গিয়েছেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিজেপি বিধায়ক। 

২০১৭ সালে বিজেপি যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলের তৎকালীন সর্বভারতীয় সম্পাদক মুকুল রায়। এরপর স্রেফ দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি হওয়াই নয়, একুশের বিধানসভা ভোটে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্র থেকে জেতেন পদ্ম-প্রতীকেই। কিন্তু বিধানসভা ভোটে ফল প্রকাশের পর বিজেপি ছেড়ে পুরনো দলে ফিরেছেন মুকুল। সঙ্গে ছেলে শুভ্রাংশু।  রাজনীতি ময়দানে অবশ্য এখন দেখাই যায় না মুকুলকে।

বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি চেয়ারম্যান পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, শারীরিকভাবে সুস্থ নন মুকুল। এমনকী, মানসিক সমস্যা নাকি দেখা দিয়েছে তাঁর! বস্তুত, ফ্রেরুয়ারিতে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালের ভর্তি করা হয়েছিল একদা তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ডকে।  পরিবারের লোকেদের দাবি, ঘড়িতে তখন ৬.৩০। এদিন সন্ধ্যায় মুকুল রায়কে সঙ্গে নিয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে ঢোকেন তাঁর পরিচিত দুই ব্য়ক্তি। এরপর থেকে মুকুলের সঙ্গে কোনওভাবেই যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। কেন? রাতেই এয়ারপোর্ট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ছেলে শুভ্রাংশু।  

আচমকা মুকুল ‘নিখোঁজ’ হয়ে যাওয়ার অভিযোগে তৎপরতা বৃদ্ধি পায় পুলিশ-প্রশাসনে। তবে রাজধানীর একটি অংশের সূত্রে জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যার বিমানে দিল্লি গিয়েছেন মুকুল। যদিও মুকুলের দিল্লি যাত্রার কারণ কিছু জানা যায়নি। মুকুলের মোবাইলে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি শুভ্রাংশুর সঙ্গেও। 

মুকুল কি আবারও বিজেপিতে ফিরছেন? এমন প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে মুকুলের দিল্লি যাত্রা নিয়ে। আবার একাংশের মতে, দিল্লি এমসে চিকিৎসা করাতেও রাজধানী যেতে পারেন তিনি। জানা গিয়েছে, সন্ধ্যায় যে বিমানে মুকুল দিল্লি গিয়েছেন, তাতে ছিলেন তাঁর বিশ্বস্ত দুই ব্যক্তি। রাজনৈতিক বৃত্তে ঘোরাফেরা করা রাজধানীর একটি সূত্রের দাবি, মঙ্গলবার কোনও এক বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা হতে পারে মুকুলের। কারণ, তৃণমূলে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দিলেও, এখনও তিনি কৃষ্ণনগর উত্তরের বিজেপি বিধায়ক।

তাঁদের মতে, রাজনীতিতে কোনও কিছুই অসম্ভব নয়। যেমন ভাবে মুকুল বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন, সে ভাবেই আবার বিজেপিতে ফিরতে পারেন তিনি। মুকুল ঘনিষ্ঠ এক জনের কথায়, "দাদার প্রিয় খেলা ক্রিকেট। এই টি-২০-র জমানাতেও টেস্ট ক্রিকেটকেই আসল ক্রিকেট বলে মনে করেন তিনি। আর বলেন, পিচে টিকে থাকতে হবে। রান নিজে থেকেই আসবে।

দাদা হয়তো একটু বিরতির পর নতুন ইনিংস খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যাতে লম্বা ইনিংস খেলতে পারেন।" খবর ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে সত্যিই কি এই বিষয়ে কিছুই জানেন না মুকুল পুত্র? এমনকি নিরাপত্তার বেষ্টনীও বা কীভাবে এড়িয়ে গেলেন। তা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন।