বিশ্বের কয়েকটি প্রাণঘাতী সমুদ্র সৈকত সম্পর্কে জেনে নিন

বিশ্বের কয়েকটি প্রাণঘাতী সমুদ্র সৈকত সম্পর্কে জেনে নিন

আজ বাংলা: সমুদ্র সৈকত... সকলেরই প্রিয়। সমুদ্রে ব্যাপারটাই যেন একদম অন্য রকম। সমুদ্র সৈকত থেকে ঘুরে আসতে চাইলে কিছু সৈকতকে আপনার তালিকা থেকে বাদ দিন। এগুলো আপনার এবং আপনার পরিবারের জন্য প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়াতে পারে। হ্যা শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। জানুন কয়েকটি ভয়ংকর সমুদ্র সৈকত সম্পর্কে... 

১। হানাকাপিয়া বিচ, হাওয়াই   হাওয়াই এর কাউয়াইয়ে হানাকাপিয়া সৈকতে দীর্ঘ দুই মাইল বালুময় সমুদ্র সৈকত এর চমৎকার প্রাকৃতিক দৃশ্য যে কারও মন ভালো করে দেবে। তবে এটিই প্রমাণ করে যে বাইরের সৌন্দর্য আমাদের ধোঁকা দিতে পারে। এই সৈকতের পানিতে রয়েছে অত্যন্ত শক্তিশালী স্রোত। প্রতি বছর অনেক মানুষ না জেনে এই সমুদ্রে নেমে প্রাণ হারায়। সৈকতে সৌন্দর্য যেন এখানে মৃত্যু ফাঁদ হিসেবে ধরা দেয় এখানে।

২। নিউ স্মারনা বিচ, ফ্লোরিডা  এই সৈকতকে হাঙ্গর আক্রমণের রাজধানী বলা হয়। ২০১৫-১৬ সালে এখানে ৯ জনকে হাঙ্গর কামড়ে দেয়। বিশ্বের যে কোনো স্থানের থেকে এই সৈকতে আগমনকারীদের হাঙ্গরের আক্রমণের শিকার হওয়ার আশঙ্কা সব চেয়ে বেশি।

৩। গানসবাই, দক্ষিণ আফ্রিকা  এখানকার সার্ক কেইজ ডাইভিং খুবই জনপ্রিয়। অর্থাৎ সার্ক প্রতিরোধক খাঁচায় করে সাগর তলে ঘুরে আসা। এখানে সার্কদের টোপ দিতে প্রতি দিন রক্ত ফেলা হয়। এতে সার্ক নৌকার খুবই কাছে চলে আসে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়া এখানে যাওয়া মানে নিজের মৃত্যু ডেকে আনা।

৪। কেপ ট্রিবুলেসন, অস্ট্রেলিয়া   এই সৈকতের সমুদ্র জেলিফিশের আবাস স্থল। তাই এখানে নামতে গায়ে জড়াতে হবে ‘স্ট্রিঙ্গার স্যুট’। লবণাক্ত পানির কুমিরও রয়েছে এখানে। এখানে তাই নামতে নিষেধ করা হয় পর্যটকদের।

৫। প্লেয়া জিপোলাইট, মেক্সিকো   এই সৈকতকে বলা হয় ‘বিচ অব ডেথ’। অর্থাৎ ‘মৃত্যুর সৈকত’। এই সৈকতকে সমুদ্র তীরের চমৎকার মরূদ্যান মনে হলেও এখানকার পানিতে রয়েছে ভয়ংকর শক্তিশালী স্রোত। তাই এখানে নিযুক্ত করা হয়েছে সুপ্রশিক্ষিত লাইফ গার্ড কর্মী।

৬। মোরাকবি বে, ল্যাঙ্কাশায়ার, যুক্তরাজ্য এই সৈকতকে ‘বিশ্বাসঘাতক স্থান ’বলা হয়। এখানে রয়েছে অদ্ভুত সব প্রতিবন্ধকতা। বিশেষ করে চোরাবালি, সিফটিং চ্যানেল ও নদীর পানি নিস্কাসন ব্যবস্থা এখানে চলাচলের প্রধান প্রতিবন্ধকতা। তাই স্থানীয়রা ঘোড়ায় টানা গাড়ি ও ট্রাক্টর ব্যবহার করে মালামাল পরিবহন করে। এভাবে তারা চোরাবালি থেকে নিজেদের মালামাল রক্ষা করে।

৭। মরিল বিচ, সাউথ ক্যারোলিনা  এখানে সার্ক কিংবা দূষিত বর্জ্যের কোন ভয় নেই। মরিল বিচকে তারপরও বিশ্বের তৃতীয় ভয়ংকর স্থান বলা হয়। এখানকার মানুষের মাথাপিছু অপরাধ করার হার অত্যন্ত বেশি। তাই এখানে যাওয়া কিংবা স্থায়ী ভাবে অবস্থান করার কোন মানেই হয় না। 

৮। চৌপাটি বিচ, মুম্বাই  অত্যধিক দূষণের কারণে মুম্বাইয়ের চৌপাটি সৈকতকে এই তালিকাভুক্ত করতে হচ্ছে। এর কশট লাইনে ময়লা আবর্জনা দূর থেকেই দেখা যায়। এই কারণে এর ধারে কাছে যেতে মানুষ স্বচ্ছন্দ বোধ করে না। ২০১১ সালে এখানে একটি জাহাজ ৬০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে এখনে ডুবে গিয়েছিল। এখানকার পানি খুবই অপরিষ্কার এবং কালো।

৯। ফ্রেজার আইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া   ফ্রেজার আইল্যান্ড পরিবেশ বান্ধব পর্যটন ব্যবস্থার জন্য বিখ্যাত। সেই সঙ্গে এখানে বছর জুড়ে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে এডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকদের আগমন ঘটে। এখানকার সৈকত সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে কিছু বলা যায় না। যেখানে সেখানে রয়েছে গভীর খাদ। প্রতি বছরই এখানে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে এই দ্বিপের পূর্বাঞ্চলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেশি।

১০। আমাজন সৈকত, দক্ষিণ আমেরিকা  এই সৈকতের জলে রয়েছে এনাকণ্ডা, পিরানহা, বৈদ্যুতিক ইল, ভাম্পায়ার ফিস। বলার অপেক্ষা রাখে না নিরাপত্তা বেষ্টনী ছাড়া এখানকার পানিতে নাম কুটা বিপদজনক। পানির মতো এখানকার ডাঙ্গাও নিরাপদ নয়। নানা মাদক চোরাচালানের দল, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ও ডাকাতির জন্য পর্যটকরা এখানে নিরাপদ নয়। অনেক নদী। তাই দুর্বৃত্তকারীরা এখান থেকে যে কোন দিকে সহজেই পালাতে পারে।