পুষ্টিকর উপাদান সমৃদ্ধ গুলঞ্চর এই স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলি জানুন

গুলঞ্চ একটি লতানো উদ্ভিদ। শ্রীলঙ্কা, চীন, ভারত, বাংলাদেশ, মায়ানমার এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে পাওয়া যায় এই উদ্ভিদ। এই গাছের পাতা পানপাতার মত আকৃতির এবং লম্বা বোটা যুক্ত। এই গাছে গ্রীষ্মকালে ফুল ফোটে এবং শীতকালে ফল পাকে। গুলঞ্চর বৈজ্ঞানিক নাম: টিনোস্পোরা কর্ডিফোলিয়া। এর প্রচলিত নাম গুলি হল গুড়ুচি, গুলবেল,গিলয়, গুডুস, হার্ট-লিভড মুনসিড , টিনোস্পোরা। বহু প্রাচীন কাল থেকেই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাবিদ্যায় গুলঞ্চ ব্যবহৃত হয়। ওষুধের নানান বৈশিষ্ট্যগুলি থাকার কারণে গুলঞ্চ যুগে যুগে ভারতীয় চিকিৎসা শাস্ত্রে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
এই আয়ুর্বেদিক ঔষধি ফাইবার, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ইত্যাদি পুষ্টিকর উপাদান সমৃদ্ধ। এর পাশাপাশি এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট রয়েছে। আসুন গুলঞ্চ বা গিলয়ের স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলি জেনে নিই ………ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে গুলঞ্চ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে এটি যথেষ্ট কার্যকর। হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবহার করা হয় গুলঞ্চ । এটি সাধারণ ঠাণ্ডা লাগা ও কাশির জন্যও অত্যন্ত কার্যকরী।
হজম শক্তি বৃদ্ধিতে গুলঞ্চ অন্যতম ভূমিকা পালন করে। পেটের নানান ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহৃত হয়। ক্রনিক জ্বর নিরাময়ের ক্ষেত্রেও গুলঞ্চ যথেষ্ট কার্যকর। এছাড়া, ডেঙ্গু, সোয়াইন ফ্লু ও ম্যালেরিয়ার মতো প্রাণঘাতী রোগ থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে। গুলঞ্চর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য অকাল বয়স্কতা রোধে সহায়তা করে। ব্রণ, ডার্ক স্পট, রিঙ্কেলস এগুলি কমাতে সহায়তা করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল রাখে। বয়স বাড়ার সঙ্গে আমাদের দেহের ক্ষয় রোধ করে গুলঞ্চ। দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুলঞ্চ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে যা রক্তকে বিশুদ্ধ করে, টক্সিনগুলি সরায় এবং রোগসৃষ্টিকারী ব্যাকটিরিয়ার ও ফ্রি-রেডিক্যালগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করে। হৃদরোগ, মূত্রসংক্রান্ত নানান রোগ প্রতিরোধে এর যথেষ্ট কার্যকারিতা রয়েছে।বিষণ্ণতা, স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কমাতেও এটির ভূমিকা অপরিসীম। এটি মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। আর্থ্রাইটিসের মতো প্রদাহজনিত রোগ নিরাময় করে। এতে অ্যান্টিআরথ্রিটিক বৈশিষ্ট্যও রয়েছে বলে মনে করা হয়। যা জয়েন্টের ব্যথা সারাতেও সহায়তা করে।