মানব জীবন সম্পর্কে মহাদেব ৫টি সত্য জানিয়েছিলেন দেবী পার্বতীকে, জেনে নিন সেইগুলি কি কি

মানব জীবন সম্পর্কে মহাদেব ৫টি সত্য জানিয়েছিলেন দেবী পার্বতীকে, জেনে নিন সেইগুলি কি কি

আজবাংলা   অসংখ্য আগমশাস্ত্র শিব ও পার্বতীর কথোপকথনের সাথে রচিত। এই কথোপকথনকে শিবশাস্ত্রে সত্যের সারাৎসার হিসেবে ভাবা হয়। যাবতীয় তন্ত্রশাস্ত্র হরপার্বতীর সংলাপে জানায় এমন কিছু সত্যকে, যা উন্মুক্ত পরিসরে বলা সম্ভব নয়।

কার্যত, তন্ত্রাগম এই কারণেই গূহ্য যে, এই শাস্ত্রে বর্ণিত তত্ত্বাদি সাধারণের কাছে উন্মুক্ত হলে বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে। শিব এখানে পরাশক্তি। পার্বতী বা মাতৃকাশক্তি এখানে প্রকাশিত বাক। পরম অজ্ঞেয় শিবের মুখ থেকে নিঃসৃত বাণীকে মাতৃকাশক্তি ধারণ করেন। তার পরেই তিনি তা ব্যক্ত করেন চরাচরে।

এমনই এক আগম শাস্ত্র থকে জানা যায়, পার্বতী শিবের কাছে কিছু প্রশ্ন রাখেন জীবনের কিছু সার সত্য সম্পর্কে। শিবও তাঁকে যথাযথ উত্তর দিয়ে তুষ্ট করেন। আজকের প্রতিবেদনে দেখে নিন সেই বিশেষ প্রশ্নোত্তর পর্বটি।

১. পার্বতী জানতে চেয়েছিলেন, মানব জীবনে সব থেকে বড় পুণ্য ও সব থেকে ঘৃণ্য পাপ কী। এর উত্তরে মহাদেব জানান— মানব জীবনে সব থেকে বড় পুণ্য হল সৎ থাকা, সত্যের পথে অবিচল থাকা। আর সব থেকে ঘৃণ্য পাপ হল অসততা। এমনকী, নিজে সৎ হয়েও অসততাকে যাঁরা সমর্থন করেন, তাঁরাও সমান পাপ করেন।

২. পার্বতীর পরের প্রশ্নটি ছিল— জীবনের সব থেকে বড় গুণ কী? শিব উত্তরে জানান, আত্মদর্শনের ক্ষমতাই মানব জীবনে সব থেকে বড় গুণ। যিনি এই গুণকে করায়ত্ত করতে পারেন, তিনিই জীবনে সফল হন। আত্মদর্শন অর্থে দেবাদিদেব আত্ম-পর্যবেক্ষণ ও আত্ম-সমালোচনাকে বুঝিয়েছিলেন।

৩. শিব পার্বতীকে এর পরে জানান, তিনটি বিষয়ে সাবধান থাকাই থাকাই শ্রেয়। এমন কোনও পাপে লিপ্ত হওয়া উচিত নয়, যাতে বাক্য, কর্ম ও চিন্তা— এই তিন উপাদান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

৪. পার্বতী জানতে চেয়েছিলেন, জীবনে সাফল্যের মন্ত্র কী। শিব তাঁকে জানান, আসক্তিই যে কোনও মানুষকে পিছন থেকে টানে। লোভ ও আসক্তিকে জয় করতে পারলে নিষ্কাম কর্ম সম্পাদন সম্ভব। নিষ্কাম কর্মই সাফল্যের একমাত্র মন্ত্র।

৫. সব শেষে শিব পার্বতীকে জানান, ‘মৃগতৃষ্ণা’ বা প্রলোভনই যাবতীয় দুর্দশার মূল। ধ্যান ও সংযম দ্বারা মৃগতৃষ্ণাকে যদি জয় করা যায়, তা হলে কর্মচক্র থেকে মোক্ষ বা মুক্তি সহজেই সম্ভব।