দুর্গাপুজোকে বঙ্গে সর্বজনীন করেছিলেন মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র

সুদীপ ঘোষ কৃষ্ণনগর দুর্গাপুজোকে বঙ্গে সর্বজনীন করেছিলেন মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র। সামনেই বাঙালির সেই বড় উৎসব। তার আগে কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির মাঠে অনুমতি না নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষের বড় বড় পাইপ রাখার ঘটনায় বিতর্ক দেখা দিল।রাজবাড়ির বর্তমানে বংশধর ও পুর প্রশাসকের মধ্যে এ নিয়ে চাপান উতোর দেখা দিয়েছে। জানা যায়, ১৬০৫ সালে সম্রাট আকবরের মৃত্যুর পর জাহাঙ্গীর সিংহাসনে বসেন। নদীয়া রাজবংশের দূর্গাদাস বা ভবানন্দ মজুমদার তাঁর কর্মকান্ডে সম্রাট জাহাঙ্গীরের বিশেষ আস্থাভাজন হয়ে ছিলেন।
তাকে জাহাঙ্গীর সিংহাসন, ডঙ্কা, পরগণা সহ একাধিক জিনিসপত্র উপহারস্বরূপ দেন। দূর্গাদাস অন্নপূর্ণা, রাধা গোবিন্দর পুজো করতেন। শুরু হয়েছিল দুর্গাপুজোরও। সেই দুর্গাপুজো রাজা রাঘব, রুদ্র রায় থেকে রেউই গ্রাম বা পরবর্তীকালে নাম হওয়া কৃষ্ণনগরে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাত ধরে সর্বজনীন হয়।সামনেই দুর্গোৎসব। তার আগে রাজবাড়ির মাঠে রাখা হয়েছে বিরাট বড় বড় পাইপ। মাঠের অনেকটা জায়গা জুড়ে থাকা এই পাইপ তাদের অনুমতি ছাড়া রাখা হয়েছে বলে রাজবাড়ি বর্তমান বংশধরদের অভিযোগ।রাজবাড়ির সদস্য মনীশ রায়ের অভিযোগ, রাজবাড়ি ঢোকার মুখে বাধ্য হয়ে আমরা পিলার পুঁতেছি।
কারণ গোটা এলাকাটা পার্কিং জোন করা হচ্ছে। বাস, গাড়ি রাখা হচ্ছে। তাদের খালাসিরা ওখানে মদ্যপান করছে। একটা বিশ্রী ব্যাপার হয়ে উঠছে। ওই পিলার ভেঙ্গে গাড়ি ঢুকিয়ে ভেতরে বড় বড় জলের পাইপ রাখা হয়েছে। একটা দৃশ্য দূষণ তো বটেই। তিনি আরও বলেন, আমরা যেখানে জানানোর বা অভিযোগ হিসেবে করেছি।তারা কি করবে তাদের ব্যাপার।তবে কি হচ্ছে এটা? কৃষ্ণনগর সদর মহকুমাশাসক তথা পুরপ্রশাসক মনীশ বর্মা বলেন, ওই পাইপ পুরসভার কাজের জন্য রাখা হয়েছে। ম্যানেজারে কাছে অনুমতি নিয়েছেন প্রাক্তন চেয়ারম্যান। জনে জনে জানানো যাবে না।পুরসভা মানুষের কাজের জন্য ওই পাইপ রেখেছে। পনেরো দিনের মধ্যে কাজ হয়ে যাবে।
তবে ওনাদের যদি মনেহয় বাড়াবাড়ি হয়েছে তাহলে আইনের রাস্তা খোলা আছে। প্রসঙ্গত ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট দেশ স্বাধীন হলেও নদীয়া তিনদিন পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে ছিল। রাজবাড়ির মহারাণী জ্যোতির্ময়ীদেবী ভূমিকা নিয়ে নদীয়াকে ভারতের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করেন।রাজবাড়ির বর্তমান গৃহকর্ত্রী অমৃতা রায় বলেন, কেউ ভ্যালু দিক বা না দিক এটা একটা ঐতিহাসিক স্থান।
যদি ম্যানেজারের অনুমতিতে হয় তার কোন লিখিত নেই। মৌখিক ভাবেও হয়নি। ম্যানেজার আমাদের বলেছে প্রশাসন জোর জবরদস্তি করে রেখে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমার জমিতে রাখা হচ্ছে। আইনগত ব্যবস্থা তো প্রশাসনেরই নেওয়া উচিৎ।তারা একসময় বলছেন এটা ঐতিহাসিক স্থান সংরক্ষণ করা উচিৎ আবার বলছেন আইনগত ব্যবস্থা ঠিক, আবার রাজবাড়ির ফেভার নেন তাহলে কোনটা তারা করতে চান?