মশা| কিছু মানুষের প্রতি মশা কেন বেশি আকৃষ্ট হয়

মশা| কিছু মানুষের প্রতি মশা কেন বেশি আকৃষ্ট হয়

বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় বসে মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে অনবরত নিজেকে থাপড়াচ্ছেন! বন্ধুরা হয়ত মশকরা করে বলে- “তোর রক্তে স্বাদ বেশি” কিংবা “মশা তোকে একটু বেশিই ভালোবাসে”। কথাটা নিছক ঠাট্টা মনে হলেও, বিজ্ঞান বলছে আপনার প্রতি মশার বাড়তি ভালোবাসা আসলেও সত্যি হতে পারে। এক জায়গায় অনেকজন মানুষ থাকা সত্ত্বেও বিশেষ কিছু মানুষের থেকে বেশি আকৃষ্ট হয় মশা। তাদের রক্তপানেই যেন আসল তৃপ্তি। এহেন ঘটনায় অনেকেই মুখোমুখি হয়েছেন, কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন কেন বিশেষ কিছু মানুষেরই রক্ত খেতে ভালোবাসে মশার দল! বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিড়ে কয়েক শ্রেণীর মানুষদের রক্ত খোঁজে মশা। তবে এর যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত কারণ রয়েছে। চলুন পর পর জেনে নেওয়া যাক সেই কারণগুলি–

রক্তের গ্রুপ:–  যাদের রক্তের গ্রুপ ‘ও পজেটিভ’ কিংবা ‘ও নেগেটিভ’ তারা মশাদের বেশি প্রিয়। আবার যাদের রক্তের গ্রুপে ‘এ’ আছে তাদের প্রতি মশার আকর্ষণ ‘ও’ গ্রুপের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ কম। ‘বি পজেটিভ’ এবং ‘বি নেগেটিভ’ গ্রুপের রক্তের প্রতি মশার আকর্ষণ ‘ও পজেটিভ’ কিংবা ‘ও নেগেটিভ’য়ের তুলনায় কম। তবে ‘এ পজেটিভ’ কিংবা ‘এ নেগেটিভ’য়ের তুলনায় বেশি।

গর্ভাবস্থার সময়:–  গর্ভবতী মহিলারা বিশেষ টার্গেট থাকে মশাদের। কারণ অন্য সময়ের তুলনায় গর্ভাবস্থার সময় মহিলাদের শরীরে কার্বন ডাই-অক্সাইড বেশি নির্গত হয়। গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস উচ্চ পরিমানে কার্বন ডাই-অক্সাইড ছাড়েন তারা।

ত্বকের ধরন:–  ত্বকে স্টেরয়েড কিংবা কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি হলে মশা বেশি আকৃষ্ট হয়। তবে ত্বকের কোলেস্টেরল বেশি মানে শরীরেও বেশি এমনটা নয়। শরীর যখন বেশি কোলেস্টেরল প্রক্রিয়াজাত করতে বেশি দক্ষ হয়ে ওঠে, তখন উপজাত হিসেবে ত্বকে কোলেস্টেরল ছড়ায়। ফলে মশা আকৃষ্ট হয় বেশি।

জেনেটিক্স:–  জিনগত কারণও মশার পছন্দ-অপছন্দে প্রভাব ফেলে। গবেষণায় দেখা গেছে, জিনের কারণে ৮৫ শতাংশ মানুষ বিশেষ ধরনের কেমিক্যাল নির্গত করে ত্বক দিয়ে, বাকি ১৫ শতাংশ লোকজন তা করে না।

কাপড়ের রং:–  মশা মানুষের পরনের কাপড়ের রঙে আকৃষ্ট হতে পারে। অধিক রঙিন ও উজ্জ্বল রঙের কাপড় পরিধানকারীদের মশা বেশি কামড়ায়। বিশেষ করে কালো, গাঢ় নীল এবং লাল রঙের পোশাকধারীকে মশা বেশি কামড়ায়। তাই গরম বা যে যে সময়ে মশাদের উপদ্রব বেশি, সেই সময় হালকা রঙের পোশাক পরাই বুদ্ধিমানের কাজ।

শরীরের গন্ধ:–  শারীরিক পরিশ্রম বা কোনো ভারী কাজ পড়ার পর শরীর থেকে যে ঘাম নির্গত হয়, তাতে থাকে ল্যাকটিক অ্যাসিড যার গন্ধ আকৃষ্ট করে মশাদের। ফলে শরীর চর্চা বা সামান্য শারীরিক পরিশ্রম করার পরই ছেঁকে ধরে মশার দল।এছাড়াও দেখা গেছে যাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব কম সেই সমস্ত মানুষকেও বেশি আক্রমণ করে মশা।