সপ্তাহের সাত দিনের নামকরনের ইতিহাস
সপ্তাহের সাতটি দিনের রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন নাম। নিশ্চয় তা কারো কাছেই অজানা নয়। রবিবার থেকে শুরু হয়ে শনিবারে এসে শেষ হয় সপ্তাহটি। প্রতিটি দিনই মানুষের জীবনে নিয়ে আসে নতুন নতুন মুহূর্ত, নতুন নতুন ঘটনা। তবে আপনারা কি কখনো ভেবে দেখেছেন কেন রবিবারের নাম সানডে সোমবার এর নাম মনডে রাখা হলো অন্য কোন নাম রাখা হলো না কেন! তার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। আসলে প্রাচীন সভ্যতায় প্রত্যেকটি বারের জন্য প্রত্যেকটি দেবতাকে স্মরণ করে প্রত্যেকটি ইংরেজি বারের নাম রাখা হয়েছে।
সানডে:— গ্রীক ও ল্যাটিন শব্দ থেকে এই নামটির উদ্ভব। গ্রীক ও ল্যাটিন ভাষায় এই দিনটিকে বলা হয় সূর্যের দিন (সানডে)Sunday। সূর্য দেবতার স্মরণে রাখা হয় এই নাম।ইউরোপের মানুষেরা ভাবত নামক এক দেবতার পুজো করতেন। যাকে দেখতে আকাশে অনেকটা আলোর বলের মত দেখতে লাগতো। ভাবত শব্দটিকে ল্যাটিন ভাষায় সলিছ বলা হয়। দক্ষিন ইউরোপে বলা হত সলিছ ডেইজ এবং উওর ইউরোপে বলা হত সানেন ডেইজ, এখান থেকেই উত্পত্তি হয়েছে সানডে(Sunday) কথাটির।
মনডে:—মনডেকে monday মুন’স ডে বা চন্দ্রদিনও বলা হয়। চন্দ্র দেবীর নামে করা হয় এই নামকরণ। ল্যাটিন ভাষায় একে চন্দ্রের দিন বলে। রাতের বেলার আকাশের গায়ে রূপালী বল দেখে দক্ষিণ ইউরোপের লোকেরা একে ডাকতো ‘লুনা’ বলে। এটিও একটি ল্যাটিন শব্দ। তবে উত্তর ইউরোপের মানুষরা একে ডাকতো ‘মোনান ডেইজ’। সেখান থেকেই এসেছে মনডে।
টিউসডে:— এই দিনটির নামকরণ করা হয় ঈশ্বরের নামে। যুদ্ধ ও আকাশের দেবতা টিউ এর নামে দিনটির নামকরণ করা হয়। আগেরকার দিনে রোমানরা বিশ্বাস করতো টিউ নামে তাদের একজন দেবতা আছে, যিনি কিনা যুদ্ধ দেখাশোনা করেন।সেই থেকে এসেছে টিউসডেTuesday।
ওয়েডনেসডে:—উত্তর ইউরোপীয়রা মনে করত দেবতা 'উডেন' লম্বা টুপি মাথায় দিয়ে সর্বত্র ঘুরত, তাদের সকলের কাছে দুটি কালো পাখি থাকতো, তারা ঘুরে ঘুরে তাদেরকে বলতো বিশ্বে কি কি চলছে, সেই পাখি দুটির উদ্দেশ্যে একটা পুরো দিন উত্সর্গ করা হয়েছিল, সেই হিসেবে নাম হয় ওয়েডনেসডে Weednesday।
থার্সডে:—এই দিনটির নামকরণ করা হয় বজ্র ও বিজলির দেবতা থরের নামে। এই দিনটিকে ল্যাটিন ভাষায় জুপিটার এবং গ্রীক ভাষায় জিউস বলা হয়। আগে মানুষ মনে করতো, বিদ্যুৎ চমকানো ও বজ্রপাতের পেছনে রয়েছে ‘থর’ নামের এক দেবতা।থরের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য তারা সপ্তাহের একটি দিনের নাম রাখেন ‘থার্স ডেইস’ Thursday। সেই থেকে এসেছে থার্স ডে Thursday।
ফ্রাইডে:— প্রাচীনকালে উভেন নামে একজন দেবতা ছিলেন। তার স্ত্রীর নাম ছিল ফ্লিগ। তিনি ছিলেন ভালোবাসার দেবী তার নাম থেকেই নাম রাখা হয়েছিল ফ্রাইডে(Friday)।
স্যর্টারডে:—এই দিনটিকে ‘স্যাটার্ন’স ডেও বলা হয়ে থাকে। শৌর্য-বীর্যের প্রতীক, রোমান দেবতা স্যাটার্ন এর নামানুসারে এই দিনের নামকরণ করা হয়। তাই তার সম্মানে তারা সপ্তাহের একটি দিনের নাম রাখেন ‘স্যাটনি ডেইজ’। সেখান থেকেই আসে স্যাটার ডে।