বর্ধমানের খাস ধানের চাল নাম পাল্টে একদিন হল গোবিন্দভোগ চাল

আজবাংলা কলকাতার আনাচে কানাচে লুকিয়ে আছে নানারকম গল্প, ইতিহাস। সেই ইতিহাস একদিকে যেমন মজার তেমন অন্যদিকে অবাক করা। সেই ইতিহাসের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে Govindabhog Rice গোবিন্দভোগ চালের নাম।
কেন জানেন? জানেন কেন বর্ধমানের আঞ্চলিক ভাষায় যাকে 'খাস ধান'-এর চাল বলা হত, তাঁর নাম পাল্টে একদিন হল গোবিন্দভোগ চাল? এই ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন কলকাতার শেঠরা।
তবে আগে জেনে নিন চালের ইতিহাসটা। গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলের একটা বড় অংশ, যেমন বর্ধমান, হুগলি, বাঁকুড়া, নদীয়া ইত্যাদি অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে এই 'খাসধান'-এর চাষ হচ্ছে। এখন এলাকা কমে গেলেও পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় গোবিন্দভোগ চালের চাষ হয়।
আর এই চালের বৈশিষ্ট্যই হল, এটির গন্ধ। অপূর্ব গন্ধযুক্ত এই চাল বাঙালি সমাজের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই থাকে। মূলতো পুজোতে এটি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া কেউ কেউ রেঁধে নানারকম পদ এদিয়ে তৈরি করেন। এমনকি দক্ষিণ ভারতে গোবিন্দভোগ চালের একটা বড় কদর আছে। পায়েস তৈরিতে অনেকে এটি ব্যবহার করেন।
সব মিলিয়ে এর কদর এর গন্ধের কারণে। এবার বলা যাক, এর নামকরম প্রসঙ্গে। আসলে এই নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে কলকাতার এক ইতিহাসের প্রসঙ্গ। কেমন সেই ইতিহাস? কলকাতার শেঠেদের হাতেই প্রতিষ্ঠা পায় প্রথম গোবিন্দ জিউর মন্দির। আর সেই মন্দিরেই নাম পাল্টে যায় খাসধানের চালের।
কারণ, এই ধানের চাল নিবেদন করা হত গোবিন্দ জিউর পুজোয়। কেউ কেউ বলে এই চালের পদ তৈরি করে দেওয়া হত। সাদা, সুগন্ধি এই চালের পদ তৈরি করা দেওয়া রেওয়াজ ছিল গোবিন্দ জিওর মন্দিরে। সেই থেকেই খাসধানের চালের নাম পাল্টে হল গোবিন্দভোগ। কারণ, গোবিন্দ জিউর মন্দিরে দেওয়া হয় এই চাল। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন পুজো পার্বনে গোবিন্দভোগ চালের ব্যবহার অত্যাবশ্যকীয়। নিয়মিত এটি ব্যবহার করা হয়।