হাঁসখালির ঘটনায় মমতার তীব্র সমালোচনা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু

হাঁসখালির ঘটনায় মমতার তীব্র সমালোচনা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু

হাঁসখালির নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র সমালোচনা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, ‘‘যাঁরা এই মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য ভোট দিয়েছেন, তাঁরা একটু বিচার করুন। যাঁরা তথাকথিত ‘বাংলার মেয়ে’কে চেয়েছিলেন, তাঁরাই এ বার বিচার করুন।

মুখের ভাষা কী! ভাল কোম্পানির ব্লিচিং পাউডার আর ফিনাইল দিয়ে এই মুখ্যমন্ত্রীর মুখ ধোয়া উচিত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, একটা ইঁদুর মারা গেল, সংবাদমাধ্যম খবর করছে। নাবালিকাকে যে ভাবে মারা হয়েছে, সে কি ইঁদুর ছিল? আনিস খানের মৃত্যু হল। তিনি কি ইঁদুর? ঝালদার কাউন্সিলর তপন কান্দুর মৃত্যু হল। তিনিও কি ইঁদুর? মগরাহাটের দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার খুন হলেন।

তাঁরাও কি ইঁদুর? হাঁসখালির পরিবার যদি সিবিআই তদন্ত চায়, আমরা তার পাশে থাকব।’’ একই সঙ্গে জানান, মঙ্গলবার হাঁসখালি যাচ্ছেন তিনি। রামপুরহাটের বগটুইয়ে ১০ জন সংখ্যালঘু মহিলা ও দু’জন শিশুকে হত্যা করার ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন শুভেন্দু। পাশাপাশি, পানিহাটির তৃণমূল কাউন্সিলর অনুপম দত্তের খুনের ঘটনার কথাও উঠে এসেছে বিরোধী দলনেতার কথায়।

 প্রসঙ্গত, সোমবার বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গণ উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে হাঁসখালির ঘটনা প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘আপনি রেপ বলবেন, না কি প্রেগন্যান্ট বলবেন, না কি লভ অ্যাফেয়ার বলবেন... না কি শরীরটা খারাপ ছিল, না কি কেউ ধরে মেরেছে... আমি পুলিশকে বলেছি, ঘটনাটা কী? ঘটনাটা খারাপ। গ্রেফতার হয়েছে। মেয়েটার নাকি লভ অ্যাফেয়ার ছিল শুনছি।’’

এর পর ডিজি-র কাছে জানতে চান, তিনি ঠিক বলছেন কি না। পর ক্ষণেই মমতার মন্তব্য, ‘‘মেয়েটি মারা গিয়েছে ৫ তারিখে। অভিযোগ জানানো হয়েছে ১০ তারিখে। যদি কারও কোনও অভিযোগ থাকে, তবে ৫ তারিখে অভিযোগ দায়ের করলেন না কেন?’’ মুখ্যমন্ত্রী এ-ও দাবি করেন, ‘‘কাউকে কিছু না জানিয়ে নির্যাতিতার দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

এখন কী ভাবে এর তদন্ত করবে পুলিশ?’’ মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের নিন্দা করে বিরোধী দলনেতা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার হাঁসখালিতে যাবেন তিনি। সঙ্গে যাবেন বিজেপি-র বেশ কয়েক জন বিধায়ক। গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, বিজেপি পরিষদীয় দলের তরফে এই ঘটনার উপর নজর রাখছেন বিধায়ক আশিস বিশ্বাস ও মুকুটমণি অধিকারী। মঙ্গলবার তাঁরা নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার চেষ্টা করবেন বলেও জানিয়েছেন শুভেন্দু।

তাঁর অভিযোগ, সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলা থেকে বিরত রাখতে ওই নিহত নাবালিকার পরিবারের সদস্যদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হচ্ছে থানায়। তাই বাড়ি গিয়ে পরিবারের সদস্যদের দেখা না পেলে তাঁরা থানাতেও যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। যদিও এ বিষয়ে ধর্ষিতা নাবালিকার মা জানাচ্ছেন আমার মেয়ে ধর্ষিতা হয়েছে। ব্রজ তাকে ধর্ষণ করেছে। আর কেউ ছিল কিনা আমি জানিনা। আজ নদীয়া রানাঘাট মহাকুমা আদালতে গোপন জবানবন্দি দিতে গিয়ে এই কথাই জানালেন হাঁসখালি থানার নাবালিকার মা। আজ রানাঘাট জেলা পুলিশের এসপি সাংবাদিকদের সামনে একটি প্রেস মিট করে ঘটনার পূর্ণ বিবরণ দেন।