সাংসদ থেকে সাধারণ মানুষ ডিজিটাল বাজেটের নথি পেয়ে যাবেন এক ক্লিকে

সাংসদ থেকে সাধারণ মানুষ ডিজিটাল বাজেটের নথি পেয়ে যাবেন এক ক্লিকে

লাল মখমলে মোড়া 'বহি খাতা' নিয়ে বাজেট পড়তে ঢুকছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। ঢোকার ঠিক আগে সংসদ চত্বরে পার্ষদদের নিয়ে ছবি তোলার দস্তুর। এ বারও তার ব্যতিক্রম হল না। কিন্তু এ বার লাল মখমলের কভারের ভিতরে 'বহি খাতা' নয়, আছে অত্যাধুনিক ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ ট্যাবলেট। ২০২১-এর বাজেটও ডিজিটাল পৃষ্ঠায় পড়েছিলেন নির্মলা সীতারামন। কিন্তু এ বার তাতেও রয়েছে কিছু ‘ডিজিটাল’ নতুনত্ব।

বলতে গেলে, ২২ সালের বাজেট পুরোমাত্রায় ডিজিটাল।  ২০১৯-এ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী হিসেবে প্রথম বার বাজেট পেশ করেছিলেন নির্মলা সীতারামন। কিন্তু সে বার তাঁর সঙ্গী ছিল 'বহি খাতা'। ২০২০-তেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু বিশ্বজুড়ে করোনা আছড়ে পড়ার পর ২০২১-এ বাজেট ছিল অন্য রকম। সে বারই প্রথম লাল মখমলে মোড়া ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ ট্যাবলেট নিয়ে সংসদে বাজেট পড়তে ঢুকেছিলেন নির্মলা।

একই সঙ্গে ‘ইউনিয়ন বাজেট মোবাইল অ্যাপ’ চালু হয়েছিল। যাতে মন্ত্রী সাংসদদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও বাজেটের যাবতীয় নথি এক ক্লিকেই পেয়ে যেতেন। এ বারও জারি রয়েছে সেই ব্যবস্থা। কিন্তু গত বারই একাধিক সাংসদ-মন্ত্রী হাতে নথির দাবি তুলেছিলেন। তাঁদের যুক্তি ছিল, ডিজিটাল নথিতে তাঁরা স্বচ্ছন্দ নন। সোমবার, বাজেটের ঠিক আগের দিন ‘বিজনেস অ্যাডভাইসরি কমিটি’-র বৈঠকেও প্রতিলিপির ‘হার্ড কপি’ সাংসদদের সরবরাহ করার দাবি উঠেছিল। কিন্তু সরকার তা মানেনি।

এ বার অর্থনৈতিক সমীক্ষার (ইকোনমিক সার্ভে) রিপোর্টও ডিজিটাল মাধ্যমেই। ফলে ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’র স্লোগান দেওয়া মোদী সরকারের বাইশ সালের বাজেট, প্রকৃত অর্থেই ‘ডিজিটাল’। নতুন দিনের দাবি মেনে দেশে তৈরি হবে ডিজিটাল বিশ্বিবিদ্যালয়। শিক্ষকদের ডিজিটাল পদ্ধতিতে পড়নোর প্রশিক্ষণও দেওয়া হতে পারে। এর জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীও দেওয়া হবে।

এমনটাই জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। করোনা পরিস্থিতিতে একেবারে শিশু শিক্ষার্থীরাও অনলাইন লেখাপড়ায় অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। আগামী দিনে এমন ভার্চুয়াল মাধ্যমে শিক্ষার আরও প্রসার হবে বলেই ইঙ্গিত মিলল নির্মলা সীতারমনের তৃতীয় বাজেট প্রস্তাবে। জানালেন, দেশে একটি ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার উদ্যোগ নেবে সরকার।

একই সঙ্গে তিনি জানান, প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার জন্য টিভি চ্যানেল তৈরি করবে কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী ই-বিদ্যা নামের ওই প্রকল্পে দেশে প্রতিটি ক্লাসের জন্য বিভিন্ন ভাষায় আলাদা আলাদা দু’শোর বেশি টিভি চ্যানেল তৈরি হবে। নির্মলার দাবি, এই সব চ্যানেল দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বিভিন্ন ভাষার পড়ুয়াদের লেখাপড়ায় বড় সাহায্য করবে। শিক্ষাক্ষেত্রের আরও উন্নয়নের লক্ষ্যে দেশে দু’লাখ অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। নির্মলা জানান, অতিমারি ছোট, বড় সকলেরই মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলেছে। এর মোকাবিলায় ডিজিটাল হেলথ ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা হবে।