পার্থ ঘনিষ্ঠ মোনালিসার সম্পত্তির হিসেব দেখে চমকে যাবেন

মাত্র আঠাশ বছর বয়সি মডেলের বাড়িতে সঞ্চিত ২১ কোটি টাকা! শুক্রবার টালিগঞ্জের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে এই বিপুল পরিমাণ টাকা, সোনা দেখে চোখ প্রায় কপালে ইডি আধিকারিকদের। তবে শুধু মডেল অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ই নয়, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ঘনিষ্ঠ আরও অনেক ‘মাথা’ নজরে আসছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED)।
তাঁরই একজন অধ্যাপক মোনালিসা দাস (Monalisa Das)। তিনি পশ্চিম বর্ধমানের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান। আর সেই সূত্রেই তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ, ঘনিষ্ঠতা বলে ইডি সূত্রে খবর। তবে বর্তমানে মোনালিসা যে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির অধিকারী, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
আপাতত ইডির রাডারে অধ্যাপক মোনালিসা দাস। যদিও তিনি বলছেন, ”সততার সঙ্গে বাঁচি।” ২০১৪ সালে আসানসোলের (Asansol) কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন মোনালিসা দেবী। সেসময় রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা সূত্র বলছে, খুব কম দিনের মধ্যেই অধ্যাপক থেকে বিভাগীয় প্রধানের পদে উন্নীত হন মোনালিসা দাস।
এই উত্থান কি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অঙ্গুলিহেলনেই? উঠছে সেই প্রশ্নও। এ তো গেল মোনালিসা দেবীর কেরিয়ারে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীর প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন। তাঁর সম্পত্তির উৎস নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে যথেষ্ট। মোট ১০ টি ফ্ল্যাটের মালকিন অধ্যাপক মোনালিসা দাস। জানা গিয়েছে, মোনালিসার আদি বাড়ি রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভার নদিয়ার পায়রাডাঙার এলাকায়।
তবে এখন তিনি সেখানে থাকেন না। মোনালিসা কর্মসূত্রে আসানসোলের এসবি গরাই রোডের বিবেকানন্দপল্লিতে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রায় পাঁচ বছর ধরে ভাড়া বাড়িতে একাই থাকেন তিনি। তবে দু’সপ্তাহ ধরে সেই বাড়িতে আসেননি মোনালিসা। বাড়ির মালিকের দাবি, কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে বাড়িতে কখনও আসতে দেখেননি। এই বাড়িতে দেড় মাসে দু’তিন দিনের জন্য আসতেন মোনালিসা। তারপর আবার চলে যেতেন। বাড়িতে একাই ছিলেন।
শান্তিনিকেতন (Santiniketan), নদিয়ায় বাড়ি ছাড়াও একাধিক জায়গায় তাঁর নামে ফ্ল্যাট রয়েছে। শান্তিনিকেতনরে বাড়িটির নাম ‘অপা’। শোনা যাচ্ছে, এই সবই আসলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। তিনিই মোনালিসা দেবীকে সেসব ফ্ল্যাট দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তার সত্যতা যাচাই করতে মোনালিসা দেবীকেও জেরার কথা ভাবছে ইডি। যদিও গোটা বিষয় নিয়ে মোনালিসা দাসের প্রতিক্রিয়া, ”উনি শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন, আমি শিক্ষিকা।
এই প্রয়োজনে যোগাযোগ, কথাবার্তা হতেই পারে। এর বাইরে একেবারেই তাঁর সঙ্গে শ্রদ্ধার সম্পর্ক। আমি সততার সঙ্গে বাঁচি।”অন্যদিকে, মোনালিসা দাসের বাংলাদেশে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের কথা জানতে পেরেছে ইডি। বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন অধ্যাপক ও শিক্ষাবিদের সঙ্গে মোনালিসা দাসের সুসম্পর্কের ব্যাপারটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর এই ইস্যুতে ইতিমধ্যেই বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগ তুলেছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী।