রূপান্তরকামী দের সমাজের মূল স্রোতে ফেরানোর উদ্যোগ নিলো সম্প্রীতি

এ পৃথিবী সকলে জীবের সমান অধিকার। শিক্ষা গ্রহণ, কর্মের স্বাধীনতা, নিজের পছন্দমত ধর্মাচারণ এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার। কিছু শারীরিক এবং মানসিক ভিন্নতা নিয়ে মানুষ রূপে জন্ম নিলেও সমাজের মূল স্তর থেকে তাঁরা বিচ্ছিন্ন। কর্ম ক্ষেত্রে তাঁদের নানান উপহাসের কারণে কেউ বেছে নিয়েছে ভিক্ষাবৃত্তি, কেউবা সদ্যোজাতকদের মঙ্গল কামনায় নাঁচানোর পদ্ধতি।
স্বভাব ভঙ্গিমা ভিন্ন আচরণের প্রকৃতি ভিন্ন হওয়ার কারণে তারা পরিবারে আর পাঁচ জনের সাথে সাধারণভাবে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে প্রয়োজন দেখা দেয় তাদের অন্যদের নিয়ে দলবদ্ধভাবে থাকার। আর এই কারণেই সরকার প্রদেয় বিভিন্ন নাগরিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকেন তারা ।
যদিও এখন অনেকেই সমাজের স্বাভাবিক মানুষের সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন অন্যদিকে সাধারণ মানুষও অনেকটাই সচেতন হয়েছেন। আজ থেকে প্রায় 10 বছর আগে, রূপান্তরকামী তৃতীয় লিঙ্গ এবং বৃহন্নলাদের নিয়ে গঠন হয়েছিলো নদীয়া রানাঘাট সম্প্রীতি সোসাইটি। বর্তমানে জেলা সদস্য সংখ্যা প্রায় 1700 লকডাউনের মধ্যে সকলের জন্য আহার সংগ্রহের দায়িত্ব নিয়েছিল এই সোসাইটি। শিক্ষা জীবিকা প্রগতিশীল চিন্তা তাদের ভ্যাকসিন সবটাই সাধ্যমত চেষ্টা করে থাকে সংস্থা।
গতকাল সমাজের মূল স্তরে ফেরানোর উদ্দেশ্যে রানাঘাট কামারপাড়া মোড়ে একটি টেলারিং এবং বিউটিশিয়ান কোর্স চালু করা হয় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে তাদের শেখানোর উদ্দেশ্যে। যাতে আগামী দিন, চিরাচরিত প্রথা ভেঙে সসম্মানে কষ্টার্জিত অর্থ উপার্জন করতে পারে তারা। 15 জন করে দুটি করছে আপাতত ভর্তি হলেও আরো বিভিন্ন ধরনের কর্মশালা খুব শীঘ্রই শুরু হবে বলে জানা গেছে সংগঠনের সভাপতি বিকাশ দাস এর কাছ থেকে।
সংগঠনের সম্পাদক অর্ঘ্য রায় চৌধুরী জানান, চিরাচরিত পেশায় একদিকে যেমন সাধারণ মানুষ বিব্রত হচ্ছিলেন, ঠিক তেমন আত্মসম্মান এর অভাব বোধ করতেন তারা। কর্মের ব্যবস্থার পর বাসস্থান নির্মাণের উদ্যোগ নেবেন বলে জানা গেছে পরবর্তী সময়। তবে এ বিষয়ে সরকারি সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন মনে করে সরকারি দৃষ্টি আকর্ষনের অনুরোধ জানান তিনি।