প্রয়াত নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক শেখ ইলিয়াস

প্রয়াত নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক শেখ ইলিয়াস

প্রয়াত নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক শেখ ইলিয়াস। ৬৪ বছর বয়সে চিরঘুমের দেশে পাড়ি দিলেন তিনি। সোমবার সকালে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত‍্যাগ করেন সিপিআই নেতা। স্ত্রী, দুই ছেলে এবং তিন মেয়েকে নিয়েই সংসার নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়কের। ২০১০ সাল থেকে চারবার হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। চিকিত্‍সকদের পরামর্শ মতোই চলাফেরা করতেন।

বছরখানেক কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। চিকিত্‍সা চলছিল। তবে ১০ দিন আগে তাঁর শারীরিক সমস্যা আরও গুরুতর আকার নিতে থাকে। তাঁকে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। তাঁর বুকের সমস্যা ধরা পড়ে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। সোমবার সকাল ৭টা ১০মিনিটে শেখ ইলিয়াস শেষ নিশ্বাস ত‍্যাগ করেন। প্রাক্তন বিধায়কের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লোকজন শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর বাড়িতে ভিড় জমান। নন্দীগ্রামের গোপীমোহনপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ ইলিয়াস। বরাবর মেধাবি ছাত্র ছিলেন তিনি। বিজ্ঞান বিভাগের গণিতে অনার্স নিয়ে স্নাতক পাশ করেন। সমাজসেবার নেশায় রাজনীতিতে পা দেন।

১৯৭৮ সালে হাত মেলান নন্দীগ্রাম এলাকায় তত্‍কালীন সিপিআই নেতা ভূপাল পাণ্ডা এবং শক্তি বল-সহ অন‍্যান‍্য বাম নেতার সঙ্গে। স্থানীয় কেন্দ‍্যামারি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৩ সালে নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। বাম জমানায় ২০০১ সালে এবং ২০০৬ সালে নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে সিপিআই বিধায়ক হিসাবে প্রতিনিধিত্ব করেন।

২০০৭ সালের শেষ দিকে নন্দীগ্রাম সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া সিনেমা হলের সামনে ইলিয়াসের ওপর চড়াও হয়েছিলেন জমি আন্দোলনকারীদের কয়েক জন। যদিও ওই ঘটনায় খুব একটা প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি ইলিয়াসকে। তবে তাঁর এই নিষ্ক্রিয়তা ভাল চোখে নেয়নি তৎকালীন বাম সরকার। এর পর ২০০৮ সালে ইলিয়াসের বিরুদ্ধে স্টিং অপারেশনে তাঁর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

তবে ইলিয়াস দাবি করেন, নন্দীগ্রামের ওই পরিস্থিতিতে একটি এনজিও সেখানে উন্নয়নের কাজ করতে চেয়েছিল। আর সেই কাজের জন্য প্রয়োজন ছিল বিধায়কের একটি শংসাপত্র। সেটি নিতে এসেছিলেন শঙ্কুদেব পাণ্ডা। যিনি পরে তৃণমূল হয়ে এখন বিজেপি নেতা। তবে ওই ঘটনার জেরে ইলিয়াসকে বিধায়ক পদ থেকে সরে যেতে নির্দেশ দেন দলীয় নেতৃত্ব। এর পর ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নিজের পদত্যাগপত্র বিধানসভার তৎকালীন অধ্যক্ষ হাসিম আবদুল হালিমকে পাঠিয়ে দেন ইলিয়াস। তার পর থেকেই একেবারে অন্তরালে চলে যান এই বাম বিধায়ক।