শিবরাত্রি, জেনে নিন চার প্রহরের পুজোয় সময় ও নিয়ম

শিবরাত্রি, জেনে নিন চার প্রহরের পুজোয় সময় ও নিয়ম

ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে এই উৎসব পালিত হয় মহা শিবরাত্রি। শিব আরাধনার সর্বশ্রেষ্ঠ তিথি। প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে এই উৎসব পালিত হবে। পৌরাণিক ধারণা অনুযায়ী এদিনই নিরাকার থেকে সাকার রূপে অবতরিত হয়েছিলেন দেবাদিদেব। তাই ধূমধামের সঙ্গে এই তিথি পালিত হয়। মহা শিবরাত্রিতে সারা দিন পুজো করা গেলেও নিশীত কাল ও চার প্রহরের পুজোর বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে।  

চতুর্দশী তিথি শুরু- ১ মার্চ, মঙ্গলবার রাত ৩টে ১৬ মিনিটে। চতুর্দশী তিথি সমাপ্ত- ২ মার্চ, বুধবার সকাল ১০টায়। 

নিশিত কালের পুজোর শুভক্ষণ মহা শিবরাত্রির দিনে নিশিত কালে পুজোর শুভক্ষণ শুরু হবে মধ্যরাত ১২টা ০৮ মিনিটে। রাত ১২টা ৫৮ মিনিট পর্যন্ত পুজো করা যাবে। মহা শিবরাত্রির দিনে পুজো করার শুভ সময় হল বেলা ১২টা ১০ মিনিট থেকে ১২টা ৫৭ মিনিট পর্যন্ত।

 মহাশিবরাত্রির চার প্রহরের পুজোর সময়  প্রথম প্রহর- ১ মার্চ সন্ধ্যা ৬টা ২১ মিনিট থেকে রাত ৯টা ২৭ মিনিট পর্যন্ত। দ্বিতীয় প্রহর- ১ মার্চ সন্ধ্যা ৯টা ২৭ মিনিট থেকে রাত ১২টা ৩৩ মিনিট পর্যন্ত। তৃতীয় প্রহর- ১ মার্চ রাত ১২টা ৩৩ মিনিট থেকে রাত ৩টে ৩৯ মিনিট পর্যন্ত (২ মার্চ)। চতুর্থ প্রহর- ২ মার্চ রাত ৩টে ৩৯ মিনিট থেকে সকাল ৬টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত।  পারণের সময়- ২ মার্চ সকাল ৬টা ৪৫ মিনিট থেকে। সর্বশ্রেষ্ঠ ফল লাভের জন্য সূর্যোদয়ের পর ও চতুর্দশী তিথি শেষ হওয়ার আগে পারণ অথবা ব্রতভঙ্গ করা উচিত। 

 মহা শিবরাত্রির পুজোর নিয়ম  এদিন সকালে উঠে স্নানের পর পুজো ও উপবাসের সংকল্প গ্রহণ করুন। শিব মন্দিরে গিয়ে শিব ও পার্বতীকে স্মরণ করে তাঁর জলাভিষেক করুন। পুজোর সময় শিব মন্ত্র জপ করুন। মহাশিবরাত্রির দিনে সবার আগে চন্দনের প্রলেপ লাগান, তার পর পঞ্চামৃত দিয়ে শিবলিঙ্গের অভিষেক করুন। এর পর জল, গঙ্গাজল বা দুধ দিয়ে অভিষেক করুন। বেলপাতা, আকন্দ, ধুতুরা, অখণ্ড চাল, ভাঙ অর্পণ করুন। সাদা ফুল, অপরাজিতা ফুল, মরশুমি ফল নিবেদন করা উচিত। তারপর প্রদীপ, কর্পূর জ্বালিয়ে ওম নমঃ শিবায় মন্ত্র জপ করুন। শিবের পুজো করার পর ঘুটে জ্বালিয়ে এতে তিল, চাল ও ঘি মিশ্রিত আহুতি দিন।

চার প্রহরের পুজোর নিয়ম   ১। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী মহা শিবরাত্রির দিনে বিধি মেনে বেল পাতা সহযোগে পুজো করলে ভোলানাথ তুষ্ট হন। এই তিথিতে চার প্রহরে চার বার পুজো করা হয়। তবে চার প্রহরে চার বার পুজো করা সম্ভব না-হলে, প্রথম প্রহরেই পর পর চার বার শিব পপ্রথম প্রহরের পুজোয় দুধ দিয়ে শিবলিঙ্গের স্নান করান।

২। দ্বিতীয় প্রহরের পুজোয় দধি দিয়ে শিবলিঙ্গের অভিষেক করুন।

৩। তৃতীয় প্রহরের পুজোয় ঘৃত দিয়ে স্নান করানো উচিত।

৪। চতুর্থ প্রহরে মধু দিয়ে শিবলিঙ্গের স্নানের নিযম আছে। 

উল্লেখ্য, মহা শিবরাত্রির উপবাসে দিনে তেলমাখা, দিবানিদ্রা, ভোগবিলাস, জুয়া খেলা, মদ্যপান নিষিদ্ধ। এদিন বার বার জলপান করলে বা দিবানিদ্রা গেলে ওম নমঃ নারায়ণায় মন্ত্রটি ১০৮ বার জপ করতে হয়। যাঁরা সম্পূর্ণ উপবাস করতে পারবেন না, তাঁরা জল, দুধ, ফল, ওষুধ খেতে পারেন। ব্রাহ্মণের অনুমতিতে রাত্রে বা পুজো শেষে হবিষ্যান্ন খাওয়া যায়, এতে ব্রতভঙ্গ দোষ হয় না।