হিন্দু শাস্ত্র মতে ভাইফোঁটা

হিন্দু শাস্ত্র মতে ভাইফোঁটা

  "ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা / যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা / যমুনা দেন যমকে ফোঁটা / আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা / যম যেমন হন চিরজীবী / আমার ভাই যেন হয় তেমন চিরজীবী ।" ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় এভাবেই প্রার্থনা করেন বোনেরা। ভাই-বোনের ভালবাসার এই উত্‍সবের নাম ভাইফোঁটা। যার আনন্দে আর কয়েকটা দিন পরেই বাড়িতে বাড়িতে মেতে উঠবেন ভাই-বোনরা। কার্তিক মাসের শুক্লাদ্বিতীয়া তিথিতে অনুষ্ঠিত হয় ভ্রাতৃদ্বিতীয়া বা ভাইফোঁটা। বিশেষ এই দিনটিতে ভাইয়ের কপালে দই, চন্দনের ফোঁটা দেয় বোনেরা।

এর পাশাপাশি চলে ভাইয়ের দীর্ঘায়ু, সুস্বাস্থ্য ও সাফল্য-কামনা। বছরভর যতই খুনসুঁটি থাকুক না কেন, এই দিনটায় ভাইদের শুভ কামনায় কোনও খামতি রাখে না বোনেরা। অন্যদিকে, পাল্টা দায়িত্ববোধ থেকে বোনকে সারাজীবন আগলে রাখার বা রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেয় ভাইরা। এর সঙ্গে করা হয় আশীর্বাদও। কিন্তু, এবার ভাইফোঁটা কবে ?

এ বছর ভাইফোঁটার তারিখ- ২৮ কার্তিক, ১৫ নভেম্বর (বুধবার) ভাইফোঁটার সময়- দিবা ১|৫৬ মধ্যে ভ্রাতৃদ্বিতীয়কৃত্য (ভাইফোঁটা) (তথ্যসূত্র : বেণীমাধব শীল) কথিত আছে, বিশেষ এই দিনটায় বোন যমুনার আমন্ত্রণে তাঁর বাড়িতে আহার করতে এসেছিলেন যমরাজ। দীর্ঘ দিন দেখা না পেয়ে যমুনা ভাইকে নিয়ে খুব চিন্তায় ছিলেন। তাঁর পথ চেয়ে বসেছিলেন। বোনের ডাকে সাড়া দিয়ে তাঁর দুয়ারে আবির্ভূত হন যমরাজ।

সেই থেকে বাঙালির বারো মাসের তেরো পার্বণে পাকাপাকি জায়গা করে নেয় ভাইফোঁটা। তাই ফোঁটা দেওয়ার সময় বোনেরা আজও ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় শ্লোক আওড়ান। অন্যদিকে পুরাণ অনুযায়ী, ভগবান সূর্য ও তাঁর স্ত্রী সন্ধ্যার সন্তান ধর্মরাজ যম ও যমুনা। কিন্তু ভগবান সূর্যের তেজ সহ্য করতে না পেরে সন্ধ্যা দেবী তাঁর সন্তান যমরাজ ও যমুনাকে ছেড়ে বাবার বাড়ি চলে যান।

তিনি নিজের জায়গায় তাঁর প্রতিকৃতি ছায়াকে ভগবান সূর্যের কাছে ছেড়ে যান। যমরাজ ও যমুনা ছায়ার সন্তান না হওয়ায় তাঁরা মাতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হন। কিন্তু ভাইবোনের মধ্যে খুবই স্নেহ-ভালবাসা ছিল। যমুনার বিয়ের পর যমরাজ বোনের ডাকে যম দ্বিতীয়ার দিন তাঁর বাড়িতে পৌঁছন। ভাই আসায় খুশিতে ডগমগ হয়ে ওঠেন যমুনা। তিনি ভাইকে খুবই আদর আপ্যায়ন করেন।

যমরাজকে ফোঁটা দিয়ে পুজো করেন। তারপর থেকে কার্তিক মাসের শুক্ল পক্ষের দ্বিতীয় তিথিতে ভাইফোঁটা পালন করা হয়। কী কী বলে ভাইকে এই বিশেষ দিনে শুভেচ্ছা জানানো যেতে পারে ? আমাদের ভাই-বোনের মধ্যে বন্ধন যেন এমনই অটুট থাকে। ঈশ্বরের কাছে তোমার সুস্থতা এবং সাফল্য কামনা করি। শুভ ভাইফোঁটা। ছোটবেলা থেকে তোমার সঙ্গে যে সুন্দর মুহূর্তগুলো কাটিয়েছি, কত মারামারি করেছি, কত পাগলামি করেছি, সমস্ত কিছুর জন্য তোমাকে ধন্যবাদ জানাই। এভাবেই চিরকাল আমার বন্ধু হয়ে থাকো। শুভ ভাইফোঁটা আজকের এই বিশেষ এবং ঐতিহ্যপূর্ণ দিনে ঈশ্বরের কাছে ধন্যবাদ জানাব আমাকে এমন এক ভাইকে দেওয়ার জন্য।

আরো পড়ুন      জীবনী  মন্দির দর্শন  ইতিহাস  ধর্ম  জেলা শহর   শেয়ার বাজার  কালীপূজা  যোগ ব্যায়াম  আজকের রাশিফল  পুজা পাঠ  দুর্গাপুজো ব্রত কথা   মিউচুয়াল ফান্ড  বিনিয়োগ  জ্যোতিষশাস্ত্র  টোটকা  লক্ষ্মী পূজা  ভ্রমণ  বার্ষিক রাশিফল  মাসিক রাশিফল  সাপ্তাহিক রাশিফল  আজ বিশেষ  রান্নাঘর  প্রাপ্তবয়স্ক  বাংলা পঞ্জিকা