আগামী ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দর জন্মদিন, দিনটি পালিত হয় জাতীয় যুব দিবস হিসেবে

আগামী ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দর জন্মদিন, দিনটি পালিত হয় জাতীয় যুব দিবস হিসেবে

আজবাংলা        আগামী ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দর জন্মদিন। দিনটা জাতীয় যুব দিবস হিসেবে পালন করে আসছে  গোটা দেশ। ১৯৮৪ সাল থেকে দিনটি জাতীয় যুব দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। যুব সম্প্রদায়ের কাছে তাঁর আদর্শ ও অনুপ্রেরণার জন্য তিনি এক আদর্শ বলে গৃহীত হন।  সেই কারণে তাঁর জন্মদিনটি এই উপলক্ষে পালিত হয়। 

১৮৬৩ সালের ১২ জানুয়ারি। সেদিনের ইতিহাস তখন নতুন ভবিষ্যতের অপেক্ষায়। ভারতীয় সমাজ জীবনে জোর ধাক্কা দিয়েছিলেন তরুণ সন্ন্যাসী। ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন বেদান্ত দর্শনের মোড়। গোটা দুনিয়া তখন তাঁকে চিনে গিয়েছে স্বামী বিবেকানন্দ নামে। ১৯ শতকের চোখধাঁধানো ধর্ম ও সমাজ ভাবনা। শতাব্দী বদলালেও, বদল হয়নি সেই প্রেক্ষাপটের। গোটা দেশের নিরিখে তাই আজও প্রাসঙ্গিক স্বামী বিবেকানন্দ। 


বেলুড় মঠ থেকে শুরু করে সিমলা স্ট্রিটে স্বামীজীর বাড়িতে আয়োজন করা হয় বিশেষ পুজোর | তবে এবছর করোনা প্রকোপের জন্য ১২ জানুয়ারি বন্ধ থাকছে বেলুড় মঠ | স্বামীজিকে শ্রদ্ধা জানাতে রাজ্যজুড়েই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় প্রতিবছর | তবে জন্মদিন নয়, বেলুড় মঠে পালন করা হয় বিবেকানন্দর জন্মতিথি। বিবেকানন্দকে শ্রদ্ধা জানাতে ভক্তদের ঢল নাম সিমলা স্ট্রিটের বাড়িতেও | 

ভারতবর্ষের মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান যিনি তার ছোট্ট জীবন কালে বিভিন্ন কর্মের জন্য সুখ্যাতি অর্জন করেন স্বামী বিবেকানন্দ। শুধু ভারত বর্ষ নয় বিদেশেও তাঁর জ্ঞান ও মন্তব্য সমান রুপে প্রসিদ্ধ | স্বামীজী ভারতীয় মহাপুরুষ রামকৃষ্ণ পরমহংসর শিষ্য হন এবং ভারতীয় সাহিত্য, সংস্কৃতির চেতনা সারাবিশ্বে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তিনি বিশ্বের দরবারে হিন্দু ধর্ম প্রচার করেন। তিনি গরীব দুঃখী মানুষকে সাহায্য করার জন্য রামকৃষ্ণ মিশন স্থাপন করেন।

স্বামী বিবেকানন্দর আসল নাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত। তিনি ১৮৬৩ সালের ১৮ জানুয়ারি, কলকাতায় জন্ম গ্রহণ করেছিলেন স্বামীজী | তাঁর মাতৃদত্ত নাম ছিল বীরেন্দ্রনাথ এবং ডাকনাম ‘বিলে’। সন্ন্যান গ্রহণের পর তাঁর নাম হয় স্বামী বিবেকানন্দ। বিশ্বনাথ দত্ত এবং ভুবনেশ্বরী দেবীর আট সন্তানের মধ্যে একজন ছিলেন বিবেকানন্দ।  

তিনি ছিলেন মধুর কণ্ঠের অধিকারী এবং শুধু সংগীত নয় – খেলাধুলা, বক্তিতা এবং শরীরচর্চায় ছিল তার গভীর আগ্রহ। ১৮৮০ সালে তিনি কেশবচন্দ্র সেনের নব বিধানে যোগ দেন এবং কেশবচন্দ্র সেন এবং দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নেতৃত্বে সাধারন ব্রাহ্ম সমাজের সদস্য হন স্বামীজী | 

১৮৯৭ সালে তিনি ব্রিটেন থেকে ভারতে ফিরে আসেন এবং কলকাতায় এসে ১ মে ১৮৯৭ সালে  বেলুড় মঠে রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০২ সালও ৪ঠা জুলাই ধ্যানরত অবস্থায় স্বামীজী মৃত্যু বরণ করেন | মাত্র ৩৯ বছর বয়সে মারা যান স্বামী বিবেকানন্দ | এরপর থেকেই ভারতে বিবেকানন্দকে ‘বীর সন্ন্যাসী’ নামে অভিহিত করা হয় এবং তার জন্মদিনটি ভারতে জাতীয় যুব দিবস হিসেবে পালিত হয়।