দোল পূর্ণিমায় যদি সঙ্গে থাকে পাহাড় তাহলে কেমন হবে বলুন তো !!

দোল পূর্ণিমায় যদি সঙ্গে থাকে  পাহাড় তাহলে কেমন হবে বলুন তো !!
Mountain Village

আজ বাংলা : দোল পূর্ণিমায় যদি সঙ্গে থাকে  পাহাড় তাহলে মনোরম দৃশ্যের আনাগোনা লেগেই থাকে । এরকমই এক দোল পূর্ণিমা এর সঙ্গে ছিল আমাদের এক অদ্ভুত পাহাড়ের জগত ।আমাদের সবার প্রিয় দার্জিলিং শহর থেকে কিছুটা দূরে লেপচাজগৎ এবং কার্শিয়াং এর মাঝামাঝি বাগোরায় বলে একটি পাহাড়ি গ্রাম । 

নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশন অবতীর্ণ হওয়ার পর ধরে ফেললাম আমরা হিলকার্ট রোড । সেই রোড এর মধ্য দিয়ে চলমান গাড়ির সঙ্গে ছিল একগুচ্ছ মেঘ আবার কখনো এক চিলতে রোদ্দুর প্রায় তিন ঘন্টা কেটে গেল এইভাবে ৭৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত লেপচাজগৎ এসে পৌছালাম আমরা ।পরিবেশ দেখে বোঝাই যাচ্ছে আমাদের পৌঁছানোর ঠিক কিছু আগেই সেই অঞ্চলে ঘটেছে এক পশলা বৃষ্টি ।

তবে বৃষ্টি শেষ হয়ে গেছে মন করছে রোদের ঝলক আকাশ থেকে । পাহাড়ি অঞ্চলে প্রায় সবার প্রিয় একটি দৃশ্য চোখে পড়লো সেই মুহূর্তে চারিপাশে গাছ ভর্তি লাল রডোডেনড্রন । লেপচাজগৎ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা চুরাও খুব ভালো দেখা যায় । কিন্তু সেই সময়ে মেঘলা থাকার কারণে কাঞ্চনজঙ্ঘা খুব বেশি স্পষ্ট হয়ে ওঠেনি।

তাই রাস্তায় সময় না কাটিয়ে আমরা পৌঁছালাম পশ্চিমবঙ্গ বন উন্নয়ন নিগমের বাংলাতে ।শোনা গেছিলো এই জায়গাতেই নাকি পাওয়া গেছিল হিমালয়ের অন্যতম আকর্ষণীয় পাখি ফায়ার টেইলড মাইজর্নিস । পাখির রং  হয় উজ্জ্বল সবুজ এবং লেজ হয় আগুনের মত লাল বেশি বড় হয় না যখন এরা আসে তখন এক ঝাঁক একসাথে অবতীর্ণ হয় সিঙ্গলিলা জঙ্গল থেকে। 

এবার লেপচাজগৎ থেকে যেতে হবে বাগোরায়। কার্শিয়াং এর একটু আগেই অবস্থিত দিলারাম বলে একটি জায়গা । আর সেখান থেকেই প্রায় চার কিলোমিটার পেরোলেই পৌঁছানো যায় ৭১০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত জঙ্গলে ঘেরা একটা ছোট্ট গ্রাম বাগোরা ।এই গ্রামটিতে শীতকালে ভর্তি থাকে বাগানে কমলালেবুর আর বসন্ত থাকে রডোডেনড্রন । গ্রামটি থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত টাইগার হিল । গ্রামটিতে পৌঁছে ছিলাম তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে ।

কিন্তু পরদিন সকাল হতেই গ্রামের আশেপাশে দেখতে পেলাম অদ্ভুত দৃশ্য ভর্তি রডোডেনড্রন আর লাল রঙের লেজ মিলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে একদল পাখি। রাস্তাঘাট খুবই নির্জন সেরকম কোনো গাড়ি-ঘোড়া নেই ।দুপুরের লাঞ্চ করে আমাদের ছাড়তে হবে এই গ্রাম কে রওনা দিতে হবে বাড়ির উদ্দেশ্যে । তবে শুধুমাত্র একটা দিন এই গ্রামটির জন্য যথেষ্ট নয় আরও কিছু সময় কাটানো গেলে ভালো হতো । 

কিভাবে যাবেন : হাওড়া শিয়ালদা এবং কলকাতা টার্মিনাল থেকে নিউ জলপাইগুড়ি যাওয়ার জন্য রয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস, দার্জিলিং মেইল, পদাতিক এক্সপ্রেস, উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস, তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেস এছাড়াও আরো অনেক ট্রেন ।শিলিগুড়ি থেকে মিরিক হয়ে সুখিয়াপোখ্রি কে পাশ কাটিয়ে বাই রোড চলে আসবেন লেপচাজগৎ ।

তারপর লেপচাজগৎ থেকে গাড়ি করে কার্শিয়াং যাওয়ার পথেই পড়বে দিলারাম দিলারাম থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বাগোরা।  থাকার জায়গা : লেপচাজগতে থাকার জন্য রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বন উন্নয়ন নিগমের বাংলো । এছাড়াও রয়েছে অনেক হোমস্টে । বাগরাতে  থাকার জন্য রয়েছে "ডিকি" হোমস্টে আর বোন বিভাগের বাংলো ।