বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী বামেরা, প্রার্থী দিতে পারল না শাসক দল তৃণমূল

হাওড়ার সাঁকরাইল (Sankrail) ব্লকের অন্তর্গত 'শ্যামাপ্রসন্ন সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি'-র নির্বাচনে ঘটল উলট পুরান। নির্বাচনে জেতা তো দূরের কথা মোট ৬৪ টি আসনে প্রার্থী দিল না জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। ফলশ্রুতি, এই সবকটি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হল বিরোধী বাম শিবির। আজকে নির্বাচনের এহেন ফল ঘোষণায় অবাক রাজনৈতিক মহল।
সাঁকরাইলের (Sankrail) বিধায়িকা প্রিয়া পালের খাস তালুকে কিভাবে এই ফলাফল সম্ভব হল, তা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে শাসক দলের মধ্যেই। বাম শিবিরের দাবি, স্বচ্ছতার কাছে হার মেনেছে শাসক দল। তাই নিশ্চিত হারের থেকে মুখ বাঁচাতে এখানে প্রার্থী দেয়নি TMC। সাঁকরাইল 'শ্যামাপ্রসন্ন সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি' নির্বাচন স্বচ্ছতার সঙ্গে পরিচালিত হয়েছে, তাঁর সঙ্গে এঁটে উঠতে পারেনি শাসক দল, এমনটাই দাবি করলেন বিজয়ী সমিতির প্রার্থী সেলিম খান।
তিনি বলেন, "শাসক দলের অত্যাচারের হাতে থেকে মানুষ পরিত্রাণ চাইছে। তাঁদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। সমবায় স্বচ্ছতার একটি বিশেষ রূপ।" তিনি দাবি করেন, রাজ্যে সর্বত্র সমবায় নির্বাচনে বামপন্থীরা বিপুল সংখ্যায় জয়লাভ করছে। শাসক দল ভয়ে প্রার্থী দাঁড় করাতে পারেনি। সমবায়ের স্বচ্ছতার কাছে তাঁরা হার মেনেছে। তিনি আজকে বামপন্থীদের এই জয়কে সংগ্রামের জয় বলেই দাবি করেন।
অন্যদিকে, এই নির্বাচনের বিষয় তাঁকে জানানো হয়নি বলেই দাবি করেন সাঁকরাইল বিধানসভার TMC বিধায়িকা প্রিয়া পাল। ঘটনার খবর শুনে ব্লক অধিকারিককে ফোনে বিষয়টি জানতে চান বিধায়িকা। তাঁর দাবি, বিধায়িকা হিসাবে এই নির্বাচনের কথা তাঁকে জানানোর কর্তব্য সাঁকরাইল ব্লক আধিকারিকের। তিনি অভিযোগ করে বলেন, CPIM অনৈতিকভাবে এই নির্বাচনের প্রক্রিয়া করেছে।
এটা আইন বিরুদ্ধে। এই নির্বাচন তিনি মানেন না। যদিও বিধায়িকার তোলা অভিযোগের সামনে এই নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিচালনার দায়িত্ব প্রাপ্ত এআরও বিশ্বজিৎ সাহা জানান, গত পয়লা অগাস্ট সমিতির নির্বাচনের জন্য বিজ্ঞাপ্তি জারি করা হয়। সেই মতো ৩-৫ তারিখ মনোনয়ন পত্র দেওয়ার কাজ করা হয়। মনোনয়ন পত্র জমা নেওয়া হয় চলতি মাসের ৮ ও ১০ তারিখ।
শুধু বামপন্থীদের দলগুলোর মনোনয়ন পত্র জমা হয়। সেই ভিত্তিতে স্ক্রুটিনি করা হয়। একটি মনোনয়ন পত্রও বাতিল করা হয়নি ত্রুটি না থাকার কারণে। আজকে ওই ৬৪ টি আসনের ফলাফল সম্বলিত শংসাপত্র দেওয়া হয় প্রার্থীদের। সাঁকরাইল বিধানসভার মধ্যে 'শ্যামাপ্রসন্ন সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি'-র নির্বাচনে বামেদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা নতুন করে এলাকা ভিত্তিক রাজনীতিতে বামেদের অক্সিজেন যোগাবে বলেই মত রাজনৈতিক মহলে।