সন্তানের স্বপ্নের স্কুটি কেনার জন্য ভিক্ষুক মা ভিক্ষা করে যোগাড় করলেন ৭০ হাজার টাকা

সন্তানের স্বপ্নের স্কুটি কেনার জন্য ভিক্ষুক মা  ভিক্ষা করে যোগাড় করলেন ৭০ হাজার টাকা

মায়ের কাছে একটা স্কুটি কেনার আবদার করেছিল ছেলে। ভিক্ষুক মা, যার নুন আনতে পান্তা ফুরায় তার কাছে ছেলের এই স্বপ্ন পূরণ করা ছিল কল্পনাতীত। কিন্তু, সেই অসম্ভবকে সম্ভব করলেন ভিক্ষুক মা। দিবা রাত্র পরিশ্রম করে জোগাড় করলেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। নদীয়ার কৃষ্ণনগর পালপাড়া মোড়ের কাছে একটি মোটরসাইকেল শোরুমে বন্ধুদের নিয়ে হাজির নদীয়ার ই ভীমপুর গোবরাপোতা মাছ বাজার এলাকায় বসবাসকারী যুবক রাকেশ পাঁড়ে।

পছন্দমত স্কুটির দাম 70,000 টাকা যা সম্পূর্ণ খুচরো কয়েনে দিতে চায় ওই যুবক। শোরুম ম্যানেজার থেকে সরাসরি মালিক ফোনাফুনি হয় বেশ খানিকটা সময়। এক  টাকার কয়েন দোকানদার বাধ্য এইরকমই নানা সরকারি নিয়ম-নীতির কথা জেনেই হয়তো শেষমেষ রাজি হয়েছিলেন মালিক। এরপরে বস্তা করে নিয়ে আসা সেই কয়েন ফ্লোরের মেঝে তে ঢেলে গুনে টাকার অংক বুঝে নিতে শোরুমের বেশ কয়েকজন কর্মীদের গলদঘর্ম।

সূত্রের খবর অনুযায়ী জানা যায়, রাকেশের বাবা ভুল্লুর পাঁড়ে স্ত্রী ধুলু পাঁড়ে, এবং দুই ছেলে রেখে মারা যান বহুদিন আগে। তারপর থেকে সংসার চালানোর খরচ জোগাড় করতে ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নিতে হয় মা কে। পাঁচ টাকা দশ টাকা দুই টাকা সংসার হবে যে লেগে যেত সঞ্চয় বলতে এক টাকার কয়েন। রাকেশ ছোটো, বড় ছেলে বিবাহ করে থাকে শ্বশুর বাড়িতেই তাঁর সাথে বিশেষ কোন যোগাযোগ নেই।

তবে রাকেশ মায়ের অত্যন্ত আদরের, কলকাতায় লোহার তৈরি জিনিসপত্রের দোকানে কাজ করে। স্বল্প উপার্জনের মোটরসাইকেলের শখ কোনদিন পূরণ হবে না জানায় মাকে। ছেলের মুখে হাসি ফোটাতে মায়ের এপর্যন্ত জমানো দু বস্তা 1 টাকার কয়েন তুলে দেন তিনি। যদিও কিছুটা লজ্জিত হয়েই রাকেশ জানায় মায়েরও ইচ্ছে ছিল একটি স্কুটি আলো করে থাকুক আমাদের ভাঙ্গা ঘরে। 

কিছুদিন আগে কেরালা থেকে একই রকম একটি ঘটনা উঠে এসেছিল সংবাদের শিরোনামে। যেখানে ওই ব্যক্তি স্কুটি কিনতে প্রচুর কয়েন নিয়ে স্কুটির শোরুমে এসেছিলেন। ওই ব্যক্তির নাম ছিল রাকেশ পান্ডে। রাকেশ জানান, তিনি শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন, আর তার মা ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কয়েনের বদলে রাকেশকে একটি স্কুটি বিক্রি করা হয়েছিল।