যোগ ব্যায়ামের উপকারিতা

মানব জীবন হল আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি। আমাদের অস্তিত্ব হিসেবে আমরা পেয়েছি দেহ, মন ও আত্মা। আমাদের এই দেহ, মন ও আত্মা একীভূত করার নামই ইয়োগা বা যোগ। নিয়মিত যোগচর্চার মাধ্যমে অসুস্থ শরীর রোগমুক্ত ও সুস্থ হয়ে ওঠে এবং সুস্থ শরীর আরও তেজ ও সতেজ হয়ে ওঠে। চঞ্চল ও দুশ্চিন্তাগ্রস্থ মন শান্ত হতে থাকে।
এ অবস্থায় বুদ্ধি দ্বারা আমরা শান্ত মনকে চালনা করতে পারি এবং আমাদের দেহও মনের সঙ্গে সমান তালে সাড়া দেয়। যোগানুশীলনের ধারাবাহিকতায় অশান্ত মন যখন সম্পূর্ণ চিন্তামুক্ত ও শান্ত হয়ে পড়ে তখন আমাদের ‘আত্মার’ উপলব্ধি হয়।
দিনের মধ্যে সময় বের করে যোগ ব্যায়াম করাই খুব কষ্টসাধ্যের। কিন্তু ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন করতে গেলে কয়েকটি ব্যায়াম কিন্তু না করলেই নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে স্ট্রেচিং, কার্ডিও এবং স্ট্রেন্থ ট্রেনিং-এই তিনটে ব্যায়ামেই কিন্তু অসাধ্য সাধন হতে পারে। এর জন্য আপনাকে বিশেষ কিছু করতে হবে না। কার্ডিও বা কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়ামের জন্য হৃদস্পন্দন এমন এক্সারসাইজ করলেই হবে।
আপনার শ্বাস -প্রশ্বাসের হার বৃদ্ধি পায় যাতে কোষগুলি শক্তি উৎপাদন করতে এবং ক্যালোরি বার্ন হয়ে অক্সিজেন পাওয়া যায় সেই ব্যায়াম করতে হবে। এই রনের ব্যায়াম, ওজন কমাতে সাহায্য ছাড়াও, আপনার কার্ডিওভাসকুলার সহনশীলতা এবং ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এর মাধ্যমে সারাদিন এনার্জিও পাওয়া যায়। এর পর রয়েছে স্ট্রেংথ ট্রেনিং।
এর অর্থ কিন্তু শুধু ওজন তোলা নয়। শরীরে বাড়তি চর্বিও ঝরে যায় এই ব্যায়ামের মাধ্যমে। পুশ-আপ, স্কোয়াট এবং ক্রাঞ্চগুলি দারুণ উপকারে আসে। সপ্তাহে দুই বা তিন দিন করলেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারবেন।
শীর্ষাসন এই আসন হচ্ছে সব আসনের রাজা। এতে মস্তিষ্ক শুদ্ধ রক্তপ্রাপ্ত করে যার ফলে চোখ, কান, নাক ইত্যাদি আরোগ্যপ্রাপ্ত হয়। পিটুইটারি ও পিনিয়াল গ্ল্যান্ডকে সুস্থ করে তুলে মস্তিষ্ককে সুস্থ করে। স্মৃতি, মেধা বিকশিত করে। হিস্টিরিয়া, হার্নিয়া, অণ্ডকোষ বৃদ্ধি ইত্যাদি রোগ দূর করে স্বপ্নদোষ, নপুংসকতা, বন্ধ্যত্ব ইত্যাদি ধাতু রোগকে নির্মূল করে মুখমণ্ডলে এক আভা এবং তেজের সৃষ্টি করে অসময়ে চুল পড়ে যাওয়া এবং পেকে যাওয়া বন্ধ করে।
অষ্টবক্রাসন বাহু এবং কব্জিকে প্রচণ্ড শক্তিশালী করে। পেটের মাংসপেশিগুলোকে শক্তিশালী করে এবং চর্বি কমায় মনোযোগ ও ভারসাম্য বাড়ায় মহিলাদের মাসিক বিকৃতি দূর করে এবং মেনোপজ হওয়ার পর যেসব জটিলতা দেখা দেয় সেগুলো থেকে মুক্তি দেয়।
চক্রাসন মেরুদণ্ডের হাড়কে নমনীয় করে যৌবন ধরে রাখতে সাহয্য করে। শরীরে স্ফূর্তি, শক্তি এবং তেজ বৃদ্ধি করে, কোমর ব্যথা দূর করে। নারীদের গর্ভাশয় বিকারকে দূর করে।
বীর ভদ্রাসন বাঁধ, বাহু, পা, গোড়ালি এবং পিঠের মাংসপেশিগুলোকে পরিপুষ্ট করে শক্তিশালী করে তোলে, রক্ত সঞ্চালন ও শ্বসন প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটায়। ফুসফুস তথা বুকের প্রসারণ ঘটায়, অনুলোম-বিলোম প্রাণায়াম, সব ধরনের বাতরোগ, কফরোগ ও পিত্তের রোগ দূর করে। ধাতুরোগ, শুক্রক্ষয়, সাইনাস, হাঁপানি, টনসিল ইত্যাদি রোগ দূর করে ও হৃদয়ের ধমনিতে আসা ব্লকেজ পর্যন্ত খুলে যায়।
উত্থিত পদ্মাসন পেটের বাড়তি চর্বি কমায়, হাতে প্রচণ্ড শক্তি আনে, হাত ও কাঁধের পেশি পুষ্ট করে
গোমুখাসন পুরুষের অণ্ডকোষ বৃদ্ধি, ধাতুরোগ, ডায়াবেটিস এবং স্ত্রীরোগে বিশেষ লাভকারী আসন ও সন্ধিবাত ও গেঁটে বাত দূর করে।