বছরের প্রথম চন্দ্রগ্রহণ বুদ্ধপূর্ণিমার দিন, জেনে নিন কী করবেন, কী করবেনা

বছরের প্রথম চন্দ্রগ্রহণ বুদ্ধপূর্ণিমার দিন, জেনে নিন কী করবেন, কী করবেনা

আগামী ১৬মে, চলতি প্রথম চন্দ্রগ্রহণ (Lunar Eclipse 2০২২) হতে চলেছে। ভারতের সময় অনুযায়ী সকাল ৮টা ৫৯ মিনিট থেকে সকাল ১০টা ২৩ মিনিট পর্যন্ত থাকবে বলে জানা গিয়েছে। বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে বিশাখা নক্ষত্র ও বৃশ্চিক রাশিতে এই চন্দ্রগ্রহণের প্রভাব বৃদ্ধি হতে পারে। তবে সম্পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ হলেও ভারতে দেখা যাবে না।

জ্যোতিষশাস্ত্রের মতামত অনুযায়ী দেশে চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে না, তাই বুদ্ধ পূর্ণিমা ( Buddha Purnima ) ও বৈশাখ পূর্ণিমা (Vaishakh Purnima) উপবাস, কথা, দান ও স্নানে চন্দ্রগ্রহণের কোনও প্রভাব পড়বে না। তাই এই দিনে তাদের শ্রদ্ধা অনুযায়ী ব্রত রাখতে পারে এবং দান-পূণ্যের কাজ করতে পারে। দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপ, দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া, আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকার বেশিরভাগ অংশ, দক্ষিণ আমেরিকা, প্রশান্ত মহাসাগর, ভারত মহাসাগর, আটলান্টিক এবং অ্যান্টার্কটিকায় হবে।

অন্যদিকে, ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, প্রতিটি পূর্ণিমার দিনে দান এবং স্নান করা গুরুত্বপূর্ণ, তবে বুধ পূর্ণিমাতে দান এবং স্নান আরও গুরুত্বপূর্ণ বলে বলা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবার বুদ্ধ পূর্ণিমায় চন্দ্রগ্রহণের অনুপম কাকতালীয় কারণে এদিনে দানের গুরুত্বও বেড়েছে বহুগুণ। পূর্ণিমার জন্য কিছু দিশা-নির্দেশ এ বছর বছরের প্রথম চন্দ্রগ্রহণও বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন বিশ্বব্যাপী ঘটবে।

তাই পূর্ণিমার দিনে কিছু বিষয়ে বিশেষ যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দেন জ্যোতিষীরা। জ্যোতিষীর মতে, “যদিও ১৫-১৬ মে এর মধ্যে ঘটতে থাকা চন্দ্রগ্রহণটি ভারতে দৃশ্যমান হবে না। এর কারণে, এর সুতক সময়কে ভারতে বিবেচনা করা হবে না। তবে এটি অবশ্যই একটি বড় জ্যোতির্বিদ্যা হিসাবে দেখা হবে। ঘটনা, যার ধর্মীয় তাত্‍পর্য এবং জ্যোতিষশাস্ত্রীয় তাত্‍পর্যও থাকবে।

এমন পরিস্থিতিতে এদিন সারাদেশে বুদ্ধ পূর্ণিমা উত্‍সবও পালিত হওয়ার কথা, তাই এই পবিত্র দিনে সূর্যগ্রহণ মানুষকে একটু সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দেবে। এমতাবস্থায় মানুষ এই দিনে উপবাস করে এবং পূর্ণিমা স্নান করে। স্নান করার সময় পুণ্য লাভের জন্য স্নানের জলে সামান্য গঙ্গাজল মেশালে তাদের জন্য উপযুক্ত হবে। গ্রহনের ত্রুটি এবং নেতিবাচক প্রভাব, তবে এটি একজন ব্যক্তিকে পূর্ণিমার সবচেয়ে শুভ ফল পেতে সক্ষম করবে। প্রথম চন্দ্রগ্রহণের প্রভাব জ্যোতিষীদের অনুসারে, এই পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের প্রভাব সারা দেশের মানুষের পাশাপাশি অনেক বড় পরিবর্তন আনবে।

– চন্দ্রগ্রহণ সারাদেশের আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটাবে, যার ফলে জনসাধারণের মধ্যে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

– দেশে হিংস্র ঘটনা ও সীমান্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। -চন্দ্রগ্রহণের আশেপাশের দিনগুলোতে মূল্যস্ফীতির হার বাড়তে পারে, যার কারণে জনগণ সরকারের প্রতি অসন্তুষ্ট হবে। চন্দ্রগ্রহণ চলাকালীন এই সতর্কতা অবলম্বন করুন

– চন্দ্রগ্রহণের সূতক কালের শেষ পর্যন্ত ভগবানের উপাসনা করুন। তবে গ্রহণের সময় প্রতিমা স্পর্শ করা এড়িয়ে চলুন। – গ্রহনকালে দান ও পুণ্য করারও বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে চন্দ্রগ্রহণের সময় আপনার শ্রদ্ধা অনুযায়ী দান করা আপনার পক্ষে অনুকূল হবে।

– চন্দ্রগ্রহণের নেতিবাচক প্রভাব এড়াতে, “ওং ক্ষীরপুত্রায় বিদমহে অমৃত তত্বায় ধীমাঃ তন্নো চন্দ্রঃ প্রচোদয়াত্‍” মন্ত্রটি জপ করুন।

– সূতক কালের সময় খাওয়াও নিষিদ্ধ। এর পাশাপাশি এই সময় ঘুমানো, নখ ও চুল কাটা এবং যৌনকর্ম করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

– এ ছাড়া সূতক কালের সময় ব্রাশ করা, চুল আঁচড়ানো এবং প্রস্রাব ও মলত্যাগ করাও নিষিদ্ধ। – গ্রহনকালে কোন নতুন বা মাঙ্গলিক কাজ করবেন না।

– চন্দ্র দেবতার পূজা করুন, চন্দ্রগ্রহণের শান্তির জন্য অনলাইনে চন্দ্রগ্রহণ দোষ নিবারণ পূজা করাও উপযুক্ত।

– সূতক সময় শেষ হলে সারা ঘরে গঙ্গাজল ছিটিয়ে দিন। -গর্ভবতী মহিলাদের গ্রহণের সময় ধারালো জিনিস যেমন ছুরি, কাঁচি, সূঁচ ইত্যাদি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

- চন্দ্রগ্রহণের সময় খোলা চোখে দেখা উচিত নয় চাঁদকে। এতে চোখ খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

-গর্ভবতী মহিলাদের এমন দিনে বাইরে বের হতে বারণ করা হয়। এমন সময়ে তাঁণদের হাতের কাছে ছুরি বা ধারালো কোনও সামগ্রী রাখার নিয়ম নেই।

-গ্রহণের পর পূণ্যস্নান করে পুজোপাঠকে হিন্দুশাস্ত্র মতে খুবই পূণ্যের কাজ হিসাবে ধরা হয়। এই কাজ তাই অবশ্য করণীয়ের তালিকায় রয়েছে।

-চন্দ্রগ্রহণের সময় কিছু খেতে বারণ করা হয়। গ্রহণকালে খাবারে তুলসীপাতা রেখে দেওয়ার প্রচলন রয়েছে। বিজ্ঞানসম্মতভাবে এটি রোগ জীবাণু থেকে দূরে রাখতে করা হয়।

বছরের দ্বিতীয় চন্দ্রগ্রহণ কবে?

১৬ মের পর বছরের দ্বিতীয় চন্দ্রগ্রহণ ৮ নভেম্বর। এছাড়াও বছরের দ্বিতীয় সূর্যগ্রহণ রয়েছে ২৫ অক্টোবর। ৮ নভেম্বরের চন্দ্রগ্রহণ পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ হতে চলেছে।