জলের তোড়ে ভাসছে ট্রেন! প্রাণে বাঁচলেন ২৮০০ যাত্রী

জলের তোড়ে ভাসছে ট্রেন! প্রাণে বাঁচলেন ২৮০০ যাত্রী

মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। যে দিকে চোখ যায়, শুধুই জল। কাদা জলের স্রোতে বোঝা দায়, এটা রেলপথ না কি আস্ত নদী! পেল্লায় চেহারার ট্রেনগুলি দূর থেকে দেখে মনে হবে যেন খেলনা গাড়ি জলে ভাসছে। টানা বর্ষণে জলের তলায় রেললাইন। ট্রেনগুলিও ডুবন্ত প্রায় অবস্থায়। কাদা জলের স্রোতে ভাসছে ট্রেনের কামরা। এমন আতঙ্কের ছবিই ধরা পড়ল অসমে।

নিউ হাফলঙে টানা বর্ষণের রেললাইনে ধসের জেরে ট্রেনের মধ্যেই আটকে পড়েছিলেন প্রায় ২৮০০ যাত্রী। কোনওরকমে তাঁদের উদ্ধার করা হল। বায়ুসেনার কপ্টারে করে অধিকাংশ যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। দিমা হাসাও জেলায় লুমডিং শাখায় দুটি ট্রেন আটকে পড়েছিল। ওই দুটি ট্রেনের মধ্যে ছিলেন বেশ কয়েকজন যাত্রী।

বন্যা পরিস্থিতি ও ধসের জেরে প্রাণ হাতে নিয়ে কার্যত আতঙ্কের প্রহর গুনছিলেন তাঁরা। শেষমেশ তাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে।  এদিকে, যে হারে বৃষ্টি হচ্ছে এবং ধস নেমেছে, তাতে অসমে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ চেহারা ধারণ করেছে। বন্যা পরিস্থিতিতে অসমে পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। কয়েকজন নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। প্রায় ৬৬ হাজার ৬৭১ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

৩৯৯টি গ্রাম বিপর্যস্ত হয়েছে। অসমের কাছার জেলার পরিস্থিতিও ভয়ানক। সেখানে ৪১ হাজারেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ২০৯৯.৬ হেক্টর জমি জলে ডুবে গিয়েছে। টানা বৃষ্টির জেরে চলতি বছরে প্রথমবার বন্যা প্লাবন পরিস্থিতির মুখোমুখি হল উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য। নগাঁওয়ে বাড়িতে আটকে পড়া ৭০-৮০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে নগাঁওয়ের এক বাসিন্দা বলেছেন, ''বন্যা পরিস্থিতিতে সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেল। আমরা সকলে বিপর্যস্ত। বহু মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। তাঁরা রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন।'' জলের তোড়ে তমালপুর জেলায় বোরোলিয়া নদীতে ভেসে গিয়েছে বাঁশের সেতু।

টানা বৃষ্টিতে ধসের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রেললাইনও। এই পরিস্থিতিতে ২৫ জোড়া ট্রেন বাতিল করল উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। অসমের Dima Hasao এলাকায় ভূমিধসের কারণে ত্রিপুরা, মিজোরাম ও দক্ষিণ অসমের এলাকায় চলাচলকারী ওই ট্রেনগুলিকে বাতিল করেছে Northeast Frontier Railway।যে সমস্ত ট্রেন বাতিল ও আংশিক বাতিল করা হয়েছে সেগুলির মধ্যে আছে Agartala–Anand Vihar Tejas Rajdhani এক্সপ্রেস, Bangalore Cant –Agartala এক্সপ্রেস, Agartala – Secunderabad এক্সপ্রেস, শিয়ালদা-আগরতলা কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস।