'নায়ক' সিনেমায় সৌমিত্রকে না নিয়ে উত্তমকে নেওয়ার কারন কি ছিল?

আজবাংলা উত্তমকুমারকে নিয়ে চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় কাজ করেছিলেন মাত্র দুটো ছবিতে। সত্যজিতের সবচেয়ে চোখে পড়েছিল নির্মল দে এর পরিচালনায় উত্তম কুমারের বসু পরিবার ছবিটি। মঞ্চ অভিনেতা হওয়া সত্ত্বেও তার সিনেমার অভিনয়ে ছিল না মঞ্চের অভিনয়ের ছাপ।সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে তার কাজ করা হয়েছিল ব্যতিক্রমী দুটি ছবিতে যার নাম ‘নায়ক’ ও ‘চিড়িয়াখানা’।
নায়ক ছবিতে পাড়ার অভিনেতা থেকে সুপারস্টার অভিনেতা হওয়ার গল্প নিয়ে নির্মিত ছবিতে উত্তম কুমার খুঁজে পেয়েছিলেন যেন নিজেকে। ওদিকে চিড়িয়াখানায় তিনি হয়েছিলেন গোয়েন্দা ব্যোমকেশ বক্সী।এদিকে নায়ক সিনেমাটি সৌমিত্রবাবুর করার খুব শখ ছিল। তিনি এই নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন পরিচালক সত্যজিৎ রায়কে। উত্তরে কি বলেছিলেন উনি তা জানা যায় মহানায়ক উত্তমকুমারের অন্যতম জীবনসঙ্গী চিত্রনায়িকা সুপ্রিয়া দেবীর মুখে।তিনি এ প্রসঙ্গে বলছেন, “সৌমিত্র তো নায়কটাও করতে চেয়েছিল।
তখন মানিকদা (সত্যজিৎ) ওকে বুঝিয়ে বলেছিলেন কেন উত্তম। আমি শুধু এটুকু বলতে পারি। উত্তমকে দেখেই‘নায়ক’মনে হয়। উত্তমকে দেখেই প্রেমিক মনে হয়। সৌমিত্র ভালো অভিনেতা নিশ্চই। কিন্তু নিত্য নতুন প্রেমে পড়ানোর ওই যে লুক, ছোটো ছোটো দিক, সেটা আমি সৌমিত্র-র মধ্যে কখনো দেখিনি।”
আবার লোকমুখে জানা যায়, এই কিংবদন্তি পরিচালকের সঙ্গে সর্বাধিক কাজ করা অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় যখন জিজ্ঞাসা করেছিলেন, নায়ক সিনেমাতে আমাকে নিলেন না কেন? সত্যজিৎ সৌমিত্রর দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলেছিলেন তুমি কি উত্তম! ব্যাস এইটুকুই।আবার সত্যজিৎ-পুত্র চলচ্চিত্র নির্মাতা সন্দীপ রায় একটি সাক্ষাৎকারে জানাচ্ছেন, “বাবা তো উত্তমকুমারকে মাথায় রেখেই ‘নায়ক’ লেখেন।
অরিজিনাল স্ক্রিপ্ট। কোনও গল্প থেকে নেওয়া নয়। ওকে বাদ দিয়ে কোনও বিকল্পও ভাবেননি... ভাবা যাবে না বলেই ভাবেননি নিশ্চয়ই।”আসলেই রুপালি পর্দায় ২১২টিরও বেশি ছবিজুড়ে ‘নায়ক’ উত্তমকুমারের যে গ্ল্যামারাস উপস্থিতি, তাকে এখনও কোনো বাঙালি অভিনেতা অতিক্রম করতে পারেননি।