শুধুমাত্র কাশী, উজ্জ্বয়িনী গেলেই মহাবেদের দর্শন হবে না, দর্শন করুন দেশের এই শিব মন্দির গুলি

আমাদের দেশের প্রায় প্রতিটি রাজ্যেই ছোটো, বড়, মাঝারি নানা আকারের শিব মন্দির রয়েছে। সেই মন্দিরগুলির মধ্যে কিছু আবার বেশ জাগ্রত। মহাদেবকে কেন্দ্র করে যে ভারতীয় প্রাচীন শিল্প স্থাপত্য ভাস্কর্য গড়ে উঠেছে তা অতুলনীয়। মহাবেদের দর্শন করতে গেলে শুধুমাত্র কাশী, উজ্জ্বয়িনী, ঘুরলেই হবে না ওগুলি ছাড়াও আমাদের দেশে এমন অনেক শিব মন্দির আছে যেগুলি দেখলে চোখ কপালে উঠবে। আসুন আজ সেইরকমই কয়েকটি শিবমন্দিরের ভ্যারচুয়াল দর্শন করা যাক ……।
সিদ্ধেশ্বর ধাম : এই মন্দির সিকিমে অবস্থিত। পাহাড়ে ঘেরা এই মন্দিরের বাইরের প্রাকৃতিক দৃশ্যেই মুগ্ধ হবেন আপনি। সিদ্ধেশ্বর ধাম মন্দির চত্বরে রয়েছে চারটি মঠ। সিকিমের মেলি এবং জোরেথাঙের মাঝেই পড়ে এই চার মন্দিরের প্রাঙ্গন। শিবমন্দিরের রয়েছে দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গ এবং ১০৮ ফিটের এক বিশাল বড় শিবের মূর্তি। গ্যাংটক থেকে গাড়ি করে ঘণ্টা দুয়েক সময় লাগবে এই সিদ্ধেশ্বর ধামে পৌঁছোতে।
শ্রী কোটিলিঙ্গেশ্বর স্বামী মন্দির : কর্ণাটক রাজ্যের কোলার জেলার কাম্মাসান্দ্রা গ্রামে অবস্থিত কোটিলিঙ্গেশ্বর মন্দিরটি। এখানকার শিবলিঙ্গটি বিশ্বের বৃহত্তম শিবলিঙ্গের মধ্যে একটি। লিঙ্গের দৈর্ঘ্য্ প্রায় ১০৮ ফিট। মন্দিরের প্রায় পনেরো একর চত্বর জুড়ে রয়েছে ছোটো বড় প্রচুর শিবলিঙ্গ। মন্দির চত্বরে রয়েছে একটি প্রায় ৩৫ ফিট দীর্ঘ নন্দী মূর্তি।
লিঙ্গরাজ মন্দির : দেশের প্রাচীন শিব মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম ওড়িশার লিঙ্গরাজ মন্দির । মন্দিরটি শিব এবং বিষ্ণুর মিলিত রূপ হরিহরের নামে উৎসর্গীকৃত। লিঙ্গরাজ মন্দির ভুবনেশ্বরের সব থেকে বড় মন্দির। এই মন্দিরের কেন্দ্রীয় মিনারটি ১৮০ ফিট উঁচু। মন্দিরটি কলিঙ্গ স্থাপত্যকলা এবং মধ্যযুগীয় ভুবনেশ্বর স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত। মন্দিরটি দেউল শৈলীতে নির্মিত যার চারটি ভাগ আছে , সেগুলো হচ্ছে বিমান, জগমোহন, নাট্যমন্দির এবং ভোগমণ্ডপ। মন্দির চত্বরটি দেয়ালঘেরা। তেরো শতকে লেখা সংস্কৃত পুঁথি একাম্রা পুরাণ অনুযায়ী লিঙ্গরাজের মন্দিরটি একাম্রা (আম) গাছের নিচে অবস্থিত ছিল। সেকারণেই এই মন্দিরের অপর নাম একাম্রা ক্ষেত্র।
কেদারনাথ মন্দির : উত্তরাখণ্ড রাজ্যের মন্দিকিনী নদীর তীরে অবস্থিত হিন্দুদের অন্যতম তীর্থক্ষেত্র এটি। প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার তীর্থযাত্রী এই মন্দির দর্শনে যান। গৌরীকুণ্ড থেকে পায়ে হেঁটে প্রায় বাইশ কিলোমিটার হেঁটে যেতে হয় তীর্থযাত্রীদের।অতিউচ্চ এই তীর্থস্থানের আবহাওয়া প্রায় সারা বছরই বিপজ্জনক থাকে। শীতের সময় চারদিক কঠিন বরফে ঢেকে যায় সেকারণেই শীতকাল কেদারনাথের মূর্তি নামিয়ে আনা হয় উখিমঠে। প্রায় ছয় মাস সেখানেই থাকেন তিনি।
নাগেশ্বর মন্দির : গুজরাটের দ্বারকা থেকে পনেরো কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নাগেশ্বর মন্দির । দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে একটি এই নাগেশ্বর। এখানে মহাদেবের ২৫ মিটার লম্বা একটি মূর্তি রয়েছে। মন্দিরের বাগান এবং পরিবেশ অপূর্ব সুন্দর। বলা হয় যে, নাগেশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলে এবং পুজো দিলে যে কোনও বিষাক্ত জিনিসের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।